খেলা
বিদায় বললেন রিয়াদও
শূন্যতা পূরণ করবে কারা
ইশতিয়াক পারভেজ
১৪ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অবশেষে নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দিলেন ‘ফুলস্টপ’। বিদায় বলে দিলেন ওয়ানডে ফরম্যাটকেও। তার আগে এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন উইকেট কিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহীম। সেইসঙ্গে টাইগার ক্রিকেট থেকে পঞ্চপাণ্ড যুগের সমাপ্তি হয়ে গেছে বলেই মনে করছেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। এমনটা হওয়ারই কথা ছিল, হতে পারতো আরও আগেই। তাদের বিদায়ে রবি ঠাকুরের একটা গানও যেন বাজতে শুরু করেছে। ‘তোমার হলো শুরু আমার হলো সারা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে রিয়াদ-মুশফিকদের বিদায়ে শুরুটা হচ্ছে কাদের! তাদের শূন্যতা পূরণ করবে কারা! মুশফিকের গ্লাভস কে তুলে নিবেন ওয়ানডেতে? আর মাহমুদউল্লাহর ফিনিসারের ভূমিকাই রাখবে কে? সদ্য জাতীয় দল থেকে নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা হান্নান সরকার জানালেন এক-দু’জনকে তাদের বিকল্প ভাবলে হবে না। অন্তত ছয় থেকে ৭ জনকে নিয়ে কাজ করতে হবে বলেই মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে জাতীয় দলের সাবেক পেসার ও প্রাইম ব্যাংকের হেড কোচ তালহা জুবায়ের মনে করেন যাদের নিয়ে ভাবা হোক না কেন তাদের যেন পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, আর যেন পঞ্চপাণ্ডব বানিয়ে দলের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করা না বলেও অনুরোধ করেন তালহা। বিকল্প নিয়ে দৈনিক মানবজমিনকে হান্নান বলেন, ‘দেখেন আমি শুধু মাহমুদউল্লাহর বিকল্প ভাবছি না, মুশফিকও নেই। যে কারণে আমাদের দু’টি শূন্যতা পূরণে অন্তত ছয়-সাতজনকে নিয়ে ভাবতে হবে। মাহমুদুল হাসান অংকন, আকবর আলী, শামীম পাটোয়ারী, ইয়াসির আলী রাব্বি, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলীর মতো ক্রিকেটারদের নিয়ে ভাবতে হবে। তবে একটি পরিকল্পনা থাকতে হবে। কারণ সবাইকে তো আর একই সঙ্গে খেলানো যাবে না। পরিকল্পনা থাকতে হবে দীর্ঘমেয়াদি।’
বাংলাদেশের সামনে এখন আইসিসি দু’টি বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জ। ২০২৬-এ ও ভারতে টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তারপরের বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এছাড়াও দু’টি আসরের আগে দু’টি এশিয়া কাপও মাঠে গড়াবে। এছাড়াও দ্বিপক্ষীয় সিরিজতো আছেই। তাহলে যাদের রিয়াদ ও মুশফিকের বিকল্প ভাবা হচ্ছে তারা সফল হবে এমন নিশ্চিয়তা কোথায়! এ নিয়ে হান্নান সরকার বলেন, ‘দেখেন আমি আগেই বলেছি যাদেরই সুযোগ দেয়া হবে তাদের নিয়ে একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। ধরেন দুই একজন নিয়ে কাজ করলেন তারা এক বছর পর সফল হলো না তাহলে কি করবেন? তাদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ দিতে হবে। কেউ কেউ জাতীয় দলে খেলবে আর যারা পারবে না তাদের ‘এ’ দলের পরিকল্পনাতে রাখতে হবে। আপনি একজন ক্রিকেটারকে টানা ২০টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলালে তার যোগ্যতার প্রমাণ পেয়ে যাবেন। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২ বছর পর সেটিকে সামনে রেখেই পরিকল্পনা করতে হবে।’
‘আর পাণ্ডব চাই না’
মুশফিক ও রিয়াদের বিকল্প যাদেরই নির্বাচকরা দলে নেবেন- তাদের টিকে থাকাও একটি প্রশ্ন! তাই দলকে পুনর্গঠনে চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। একাদশে জায়গা নিয়মিত করে রাখতে হলে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতাও প্রয়োজন। এ নিয়ে তালহা বলেন, ‘দেখেন দলে নিলেন কিছুদিন খেলালেন এমন সময় এখন আর নেই। গোটা বাংলাদেশ দলটাকে এখন পুনর্গঠন করতে হবে। কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তার জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- যাদের নেয়া হবে তাদের সময় দিতে হবে। তা নাহলে যারাই খেলবে তারা কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলবে। এক ম্যাচ বা দুই ম্যাচ পরপর বাদ দিলে দল কিন্তু সামনে এগিয়ে যাবে না। রিয়াদের পরিবর্তে শামীম, হৃদয়রা আসতে পারে। আবার আমাদের পাইপ লাইনেও অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। কিন্তু সময় না দিলে কেউ নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে না। টানা খেলাতে হবে, এরপরও যদি না পারে তাহলে বুঝতে হবে তার ক্যাপাসিটি নেই তখন অন্যকাউকে সুযোগ দিতে হবে।’ অন্যদিকে তালহার অনুরোধ যে, রাতারাতি কাউকে তারকা বানিয়ে না ফেলা হয়। শুধু তাই নয়, পঞ্চপাণ্ডব বানিয়ে কোনো বৈষম্যও তৈরি না করা হয়। তিনি বলেন, ‘টিমম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব যেন থাককে ক্রিকেটার সুযোগ ও সময় দেয়ার তেমন মিডিয়ার প্রতি অনুরোধ তারা যেন কাউকে রাতারাতি হিরো বানিয়ে না ফেলে। আরেকটা অনুরোধ আর যেন এই পাণ্ডব না বানানো হয়। এতে করে দলের মধ্যে বৈষম্যই বাড়বে।’
পাঠকের মতামত
পৃথিবিতে কোন কিছুতেই শূন্যতা থাকেনা সময়ই সেটা পূরণ করে নেয়।