শেষের পাতা
স্বাগতম মাহে রমজান
আতিকুর রহমান নগরী
২ মার্চ ২০২৫, রবিবার
রহমতের বারতা নিয়ে ফের মুমিনের দরজায় কড়া নাড়লো মাহে রমজান। ইবাদতের বসন্ত রমজান আসে মুসলমানদের সমস্ত পাপ কর্মকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে। আর এ কারণেই এ মাসকে ‘রমজান’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আকাশে মাহে রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা বিশ্বে নেমে এসেছে এক আধ্যাত্মিক স্পন্দন। গতরাতে সালাতুত্ তারাবিহ আদায় ও সেহরি খাওয়ার মধ্যদিয়ে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম নিয়ে সূচিত হলো আত্মিক ও শারীরিক পরিশুদ্ধির মাস রমজান। খোশ আমদেদ মাহে রমজান। হযরত মুহম্মদ (সা.) দয়াভরা আবেগ-উচ্ছ্বাস নিয়ে রমজানকে স্বাগত জানাতেন। উৎসাহিত করেছেন উম্মতকেও। কারণ এ মাস আল্লাহ্র নৈকট্য লাভের মাস। ১১ মাস জাগতিক স্বপ্নে ডুবে থাকা মানুষটিও রমজানে খুঁজে পাবে আল্লাহ্র একান্ত রহমত। খুঁজে পাবে অতীতের পাপ মোচনের সন্ধান।
আজ থেকে রমজান মাসের প্রথম দশক শুরু। প্রতি বছর মুসলিম উম্মাহ্র কাছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অমিয় বার্তা নিয়ে আসে মাহে রমজান। ইবাদত-বন্দেগির এক সুসময় এই মাহে রমজান। এ মাসেই নাজিল করা হয় মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন। মহান আল্লাহ্ পাক বলেন, ‘রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে।’
রমজান মাস এমনই গুরুত্বপূর্ণ মাস, যার পুরস্কার মহান আল্লাহ্ নিজে এর প্রতিদান দেবেন। হাদিসে এসেছে ‘কেবল সাওম ছাড়া আদম সন্তানের প্রত্যেক আমল তার জন্য, সাওম আমার জন্য আমি নিজে এর প্রতিদান দেবো’- সহিহ বুখারি। এ মাসের একটি ফরজ ইবাদাত অন্য মাসের ৭০টি ফরজের সমতুল্য। আর রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের চেয়ে বেশি ঘ্রাণযুক্ত। মাহে রমজানে রয়েছে মানবজাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া, ক্ষমা এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের প্রতিশ্রুতি। এ মাসেই রয়েছে মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। তাক্বওয়া অর্জনের মাস মাহে রমজান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো’।- (সুরা বাকারাহ) এ কারণেই এই পুণ্যের মাসে আমরা নিজেদেরকে একজন মুত্তাকী ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। রমজান মাস আমাদের জন্য কিয়ামতে সুপারিশ করবে। হাদিসে বর্ণিত, ‘কিয়ামতের দিনে সাওম ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে’-(মুসনাদে আহমদ)। পাপমোচন আর সৎকাজ করার সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে পবিত্র রমজান। এক অনাবিল শান্তি ও চিরস্থায়ী মুক্তির পয়গাম নিয়ে এলো মাহে রমজান।