দেশ বিদেশ
দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
জরুরি বিভাগে অপারেশন করেন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রোমান!
দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
৬ আগস্ট ২০২২, শনিবারদশমিনা উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রের বিরুদ্ধে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত রোগীর অপারেশন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীর আত্মীয়স্বজন ও সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে দশমিনা বহরমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ আদমপুর এলাকার সেলিম হাওলাদাদের ছেলে ফরিদ হাওলাদার (৫০) মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে তার মাথায় সেলাই দেয়ার জন্য জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সাদিয়া খায়ের নার্স কাজী কামাল হোসেন ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতেই ফরিদ হাওলাদারের মাথায় সেলাই দেয়ার কাজ করেন দশমিনা উপজেলার হাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আষ্টম শ্রেণির ছাত্র ও স্থানীয় রেজাউল বাদসার ছেলে মো. রোমান। এ ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েন রোগীর আত্মীয়স্বজন। আহত ফরিদ হাওলাদারকে শুক্রবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। ফরিদ হাওলাদারের মেয়ে শান্তা বেগম বলেন, আব্বাকে হাসপাতালে ভর্তির পড়ে উপস্থিত ডাক্তারদের কাছে অনেক কান্নাকাটি করেছি। তারা যেন আব্বার অপারেশনটা করেন! কিন্তু তারা আমাকে ধমকের সুরে বলেছেন বাইরে থেকে ওষুধ কিনে নিয়ে আসুন ওই ছেলেই তার মাথায় সেলাইয়ের কাজ করতে পারবেন। এখন আব্বাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে অপারেশনের সময় উপস্থিত দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সাদিয়া খায়েরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি কিছুক্ষণ পর তিনি ফোন বন্ধ করে রাখেন। ঘটনার সময় উপস্থিত হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কাজী কামাল হোসেন বলেন, রোমান হাসপাতালে আমাদের সহকারী হিসেবে কাজ করে। তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন ও কাজ করলে আপনাদের অসুবিধা কোথায়? দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দেখবো। ঘটনা সত্যি হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত রোমান অপারেশনের কথা স্বীকার করে বলেন, ডা. মইনুল ইসলামের সহকারী হিসেবে কাজ করি, বিভিন্ন কাটাছেঁড়া অপারেশনের জন্য হাসপাতাল থেকে ট্রেনিং নিয়েছি। হাসপাতালে জনবল সংকটের কারণে মাঝে মধ্যে জরুরি বিভাগে কাজ করি। জানা গেছে, দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবসরপ্রাপ্ত এমএলএসএস কালু বাদশার ছেলের ঘরের নাতি রোমান তার দাদার এমএলএসএস’র শূন্যপদে মাস্টাররোলে কাজ করছেন।