অনলাইন
তেহরান থেকে রাজধানী সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত ইরানের
মানবজমিন ডিজিটাল
(৩ সপ্তাহ আগে) ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ২:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

তেহরান আর হয়ত থাকবে না ইরানের রাজধানী। সরে যেতে পারে দক্ষিণের উপকূলীয় মাকরান অঞ্চলে। বহু ঐতিহাসিক নিদর্শনের ভূমি মরুর বুক চিরে জেগে ওঠা ৭৩০ বর্গকিলোমিটারের এ শহর। ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারস্য উপসাগরীয় ও আরব অঞ্চলের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ ইরানের রাজধানী নগরী। ১৭৮৬ সালে কাজার সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে যাত্রা শুরু তেহরানের। ককেশাস অঞ্চলে ইরানি ভূখণ্ডের কাছাকাছি বলে তেহরানকে রাজধানী নগরী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কাজার সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম শাসক আগা মহম্মদ খান। মতান্তরে তেহরান ১৭৯৬ সালে কাজার রাজবংশের আমলে রাজধানী হয়। এটি ইরানের ৩২তম জাতীয় রাজধানী। ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং তেলের ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ণ। সেই তেহরানের যানজট এখন অসহনীয়। এর ওপর নগরীর ভূপৃষ্ঠ ক্রমশ বসে যাচ্ছে। ২৫০ বছরের জনসংখ্যার ভারে জীর্ণ তেহরানে পানি ও বিদ্যুতের মতো মৌলিক পরিষেবার অবস্থাও সঙ্গিন। আছে আরও সমস্যা। এমনই অনেক সমস্যায় জর্জরিত তেহরান থেকে রাজধানী স্থানান্তর করার কথা ভাবছে দেশটির সরকার। সে ক্ষেত্রে দক্ষিণে ওমান উপসাগরের কাছাকাছি কোনো একটি স্থানে রাজধানী গড়ে তোলা হতে পারে। প্রাথমিকভাবে উপকূলীয় মাকরান অঞ্চলের কথা ভাবছে ইরান সরকার।
ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে সরিয়ে নেয়ার চিন্তাভাবনা নতুন নয়। ১৯৭৯ সালে দেশটিতে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই এ ভাবনা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এ ভাবনা বাস্তবে রূপ দেয়ার পেছনে যে বিশাল খরচ ও কর্মযজ্ঞ চালাতে হবে সেই বিবেচনায় এ পরিকল্পনা বারবার অবাস্তব বলে বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সম্প্রতি নতুন করে ওই ভাবনাকে উসকে দিয়েছেন। ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমি মোহাজিরানি বলেন, মাকরানের কথা আমরা ভাবছি। দু'টি পরিষদ আমরা গঠন করেছি। একটি পরিষদ রাজধানীর সম্ভাব্য সব সমস্যা পর্যালোচনা করছে। আরেকটি পরিষদ কাজ করছে সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর। দু'টি পরিষদই মাকরান অঞ্চলে সকল সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। ওমান উপসাগর উপকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল মাকরান। এটি ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় অনুন্নত সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশ ও প্রতিবেশী হরমুজগান প্রদেশের একটি অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
গত রোববার এক বক্তব্যে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ‘হারানো স্বর্গরাজ্য মাকরানকে ইরান ও ওই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে।’
সূত্র এনডিটিভি