প্রথম পাতা
দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে দুদকে পদায়ন!
মারুফ কিবরিয়া
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার
সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ-সচিব মো. আমিন আল পারভেজ। রোববার তাকে প্রেষণে পরিচালক পদে বদলি করা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। পাঁচ বছর আগে সংস্থাটির করা একটি মামলায় আমিন আল পারভেজকে অভিযুক্ত করা হয়। এখনো সে মামলার চার্জশিট হয়নি। অবশ্য দুদকের মামলায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে সংস্থাটিতেই প্রেষণে নিয়োগ দেয়ায় এরইমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। গতকাল দিনভর দুদকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভেতর বিষয়টি নিয়ে চলেছে জোর আলোচনা। তবে সদ্য বদলির আদেশ পাওয়া উপ-সচিব আমিন আল পারভেজ বলেন, মামলার তদন্তকালে তার নাম আসার কথা শুনেছেন তিনি। কিন্তু দুদক থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো পত্র কখনোই পাননি। এদিকে, অভিযুক্ত কর্মকর্তা কীভাবে দুদকে নিয়োগ পান- এমন বিষয়টি সামনে আসতেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বসেছে সংস্থাটি। দুদকের একাধিক সূত্র মানবজমিনকে জানিয়েছে, আল আমিন পারভেজের নিয়োগের বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) দায়িত্ব পালনকালে পিবিআই ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অধিগ্রহণ মামলায় (এলএ কেস) আমিন আল পারভেজকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলাটির তদন্ত হয় দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা)-২ এ। সংস্থার একজন উপ-সহকারী পরিচালক মামলাটি (নং-১, তারিখ : ১০.০৩/২০২০ ইং ও স্পেশাল মামলা নং ০৬/২০২০ ইং) তদন্ত করেন। তদন্তে প্রকল্পের ২২ কোটি ২১ লাখ ২৮ হাজার ৮৩৬ টাকা ৮৩ পয়সা আত্মসাতের প্রমাণ বেরিয়ে আসে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় ২০২০ সালে। পাঁচ বছর কেটে গেলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি দুদক।
সংস্থাটির তদন্ত প্রতিবেদনে আল আমিন পারভেজ সম্পর্কে বলা হয়, তিনি অসদুদ্দেশে প্রতারণার আশ্রয়ে পরস্পর যোগসাজশে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে নিজে লাভবান হয়ে এবং অন্যকে অন্যায়ভাবে লাভবান করার নিমিত্তে প্রতারণাপূর্বক জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ‘মেসার্স ইলিয়াছ ব্রাদার্স’র আপত্তির প্রেক্ষিতে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির দায়িত্ব পালন করেছেন। তদন্তে আল আমিন পারভেজের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা রুজুর সুপারিশ করা হয়।
যদিও তদন্তের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন বর্তমানে সুরক্ষা সেবা বিভাগে দায়িত্বরত উপসচিব মো. আল আমিন পারভেজ। তিনি মানবজমিনকে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে একবার ফোনে জানিয়েছেন এ বিষয়ে। কিন্তু কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক চিঠি আমাকে দেয়া হয়নি। আমাকে তো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। এদিকে দুদকে নিয়োগের পর বিষয়টি সামনে আসায় মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছি। আমি তো অভিযুক্ত। চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত আমাকে দুদকের মামলার আসামি বলা কি উচিত হবে?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন মানবজমিনকে বলেন, দু’জনকে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে একজনের বিষয়ে অভিযোগের কথা শুনেছি। আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। তারপর সিদ্ধান্ত হবে।
পাঠকের মতামত
সাবাস ! চোরের কাছে ঘরের চাবি। রেহানার মেয়েকে লন্ডন থেকে এনে দুর্নীতি দমন পরিচালক পদে পদায়ন করা যায়। সেও দুর্নীতিবাজ এবং ব্রিটিশ সরকার দুর্নীতি দমন পদায়ন করেছিল।
দুর্নীতি আর অনিয়ম দুর করতে হলে সৎ আর সাহসী মানুষ দরকার। আমাদের দেশের মানুষ বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তারা কর্মচারিগণ মানুষের সেবক না হয়ে মনিব হয়ে গেছেন। আর রাষ্ট্রীয় সম্পদ যেন গনিমতের মাল। সবাই মিলে ভাগবাটোয়ারা করতে ব্যাস্ত সবাই। সংস্কার হবে কীভাবে। ভালো মানুষ তো নাই।
এই হলো দুূদক!
বহু কষ্টে শর্ষের ভূত তাড়ানো হলে - আবার ভূত ডাকা ডাকা চলবে না
এভাবেই প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দুর্নীতি মুক্ত হয়ে থাকেন।
It's reality of our country