অর্থ-বাণিজ্য
চিকিৎসকদের ফি নেয়ার রশিদ দিতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবারকরের আওতা বাড়াতে চিকিৎসক ও আইনজীবীদের মতো পেশাজীবীদের নেয়া ফি’র বিপরীতে রশিদ দেয়ার নিয়ম চালুর আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বলেন, ‘আমি তো দেখেছি চিকিৎসকরা ফি নেন, রশিদ দেন না। এখন তারা রশিদ দিলে একটা ডকুমেন্ট থাকবে’।
সোমবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
জেলা, উপজেলা এবং গ্রামাঞ্চলে যেসব ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, আইনজীবীর মতো সরকারি- বেসরকারি কর্মজীবী রয়েছেন, যারা কর দেয়ার মতো আয় করছেন, সবার কাছে কর আদায়ের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের।
জোর করে করহার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারাই (ডিসি) বিষয়টি তুলেছেন। অনেকেরই কর দেয়ার সামর্থ্য আছে, দিচ্ছেন না। তাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করা। ‘শুধু ঢাকা নয়, বাইরের শহরগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুযোগ আছে। আমি বলেছি, সেখানে গুরুত্ব দিতে। তারা অলরেডি ড্রাইভ দিয়েছেন গ্রাম থেকে ভ্যাট, ট্যাঙ আদায় করতে।’
ব্যবসায়ী, চিকিৎসক ও আইনজীবীদের লেনদেন অনলাইনে করার তাগাদা দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক ব্যবসায়ী অনলাইনে টাকা-পয়সা লেনদেন করেন না। নগদ লেনদেন করায় সব কিন্তু করের আওতায় আসছে না- এটা সম্ভবও না।’
ডাক্তার ও ব্যবসায়ীরা নগদ লেনদেন করায় তা করের আওতায় আসছে না- মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, লেনেদেন কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হলে করের আওতায় আনা যাবে। এবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘লেনদেন যেন ডিজিটাল মাধ্যমে বাড়ে, তা বলা হয়েছে। তাহলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।’
কর্মসংস্থান বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, এডিপি বাস্তবায়নে স্থানীয় কর্মসংস্থান যেন হয়, তাদের চাহিদা যেন মেটানো যায়, সেদিকে তিনি নজর দিতে বলেছেন।
এসএমই পণ্য উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের উদ্যোক্তাদের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে জানিয়ে চীনের উদাহরণ দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘চীনের একটি গ্রামের পণ্য বিশ্বের নামি-দামি স্টলগুলোতে পাওয়া যায়। তারা গ্রামে বসেই সিঙ্গাপুরের মতো বাজারে পণ্য রপ্তানি করছে। কারণ তাদের যোগাযোগমাধ্যমটি আছে, আমাদের নেই। আমরাও সেই অনলাইন মাধ্যমের সুযোগটি করতে চাই।’
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে চিকিৎসক আছেন এক লাখের মতো, তাদের বেশির ভাগই শহরাঞ্চলে বসবাস করেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপের তথ্যঅনুযায়ী, দেশে চিকিৎসক পরিবারের সদস্যদের মাথাপিছু মাসিক আয় সবচেয়ে বেশি।
কোনো পরিবারের প্রধান একজন পুরুষ ডাক্তার হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মাসিক মাথাপিছু গড় আয় হয় ৪৬ হাজার ৯৩৮ টাকা। পরিবারের প্রধান একজন নারী ডাক্তার হলে সদস্যদের গড় আয় হয় ৪৮ হাজার ৪৮৪ টাকা।
বর্তমানে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, আইনজীবীর মতো পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ ও নবায়নের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দিতে হয়।
পাঠকের মতামত
এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। অনেক ডা. মানি রিসিট দিতে অনাগ্রহী। ক্যাশ টাকা নিবেন অথচ মানি রিসিট দেবেন না, তা কিভাবে হয়? অনেক ডাক্তারের মাশাআল্লাহ যা ইনকাম, কিন্তু তাঁরা অনেকে ঠিকমত জাকাত আদায় করেন কিনা এবং হিসেব করে ট্যাক্স দেয় কিনা সেটা প্রশ্ন? রিসিটের ব্যাপারটা প্রচার ও কড়াকড়ি আরোপ করা আবশ্যক।
সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত। উকিল এবং ডাক্তার দের অবশ্যই লেনদেন রশিদ দিতে হবে।
আইনে পরিণত করুন