খেলা
খুলনার বাঘ নাকি চিটাগংয়ের সিংহ ফাইনালের ‘লঞ্চে’ উঠবে কারা?
স্পোর্টস রিপোর্টার
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
টানা ২ জয়ের পর ৮ ম্যাচে ২ জয়! এমন অবস্থা ছিল প্লে- অফ খেলতে লীগ পর্বের শেষ দুই ম্যাচেই জয় চাই। খুলনা টাইগার্স এমন কঠিন সমীকরণ মিলিয়েই নিশ্চিত করে শেষ চার। এরপর এলিমিনেটরে তারকায় ঠাসা রংপুর রাইডার্সকে স্রেফ গুঁড়িয়ে দেয় মেহেদী হাসান মিরাজের দল। চিটাগং কিংস লীগ পর্বে জিতেছে ৮ ম্যাচ, শেষ ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে হারিয়ে শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত করে তারা। সেই বরিশালের কাছেই আবার কোয়ালিফায়ারে হারে তারা। তবে টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকায় ফাইনালে ওঠার আরও একটি সুযোগ পাচ্ছে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে খুলনা ও চিটাগং।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় চিটাগং। ৩৪ রানেই তারা হারায় ৪ উইকেট। এরপর পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে চিটাগংকে ম্যাচে ফেরান শামীম পাটোয়ারি। তার ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংসে ১৪৯ রানের সংগ্রহ পায় দলটি। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত খেলতে পারলে হয়তো আরও কিছুটা রান যোগ হতো স্কোরবোর্ডে। যদিও মিঠুনের মতে যে পুঁজি ছিল তাতেই লড়াই করা যেতো, কিন্তু বোলাররা ভালো বোলিং করতে পারেননি।
মিঠুন বলেন, ‘ব্যাটাররা ভালো করতে পারেনি। তাতে রানটাও হয়েছে কম, পরে বোলারদেরও আজ বাজে দিন গেছে।’ পুরো টুর্নামেন্টেই চিটাগং খেলছে ৬ ব্যাটার নিয়ে। সেক্ষেত্রে শামীম পাটোয়ারিকে নিতে হচ্ছে বাড়তি দায়িত্ব। তবে এ নিয়ে চিন্তা থাকলেও শুরু থেকে খেলা পরিকল্পনা বদলাতে চান না মিঠুন। তিনি বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্টে আমরা এভাবেই (ছয় ব্যাটসম্যান) খেলছি। আমাদের বিকল্প নেই। এখন নয়, প্রথম ম্যাচ থেকেই এটা (ব্যাটসম্যানের অভাব) মনে হয়েছে। তবে এটা আমরা মনে করতে চাই না। যেহেতু পুরো টুর্নামেন্ট এভাবেই খেলেছি, ভালো করেছি, এখন আর তাই এসব ভাবতে চাই না। ওপরে যে ছয় ব্যাটসম্যান আছি, তারাই দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করছি।’ দলটির জন্য চিন্তার কারণ স্পিনার আলিস আল ইসলাম। দারুণভাবে আসর শুরু করা এই স্পিনার গেল কয়েক ম্যাচে আছেন নিজের ছায়া হয়ে।
অন্যদিকে খুলনা টাইগার্স যেন খোঁচা খাওয়া বাঘ। খাদের কিনারা থেকে উঠে আসা দলটি যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। লীগ পর্বে টানা দুই ম্যাচ জিতে প্লে-অফ নিশ্চিত করা মেহেদী হাসান মিরাজের দল এলিমিনেটর ম্যাচে পাত্তাই দেয়নি রংপুরকে। ম্যাচের আগে দলে আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড, জেমস ভিন্সদের দলে ভেড়ায় রংপুর। এমন বিধ্বংসী সব ব্যাটারদের দিয়ে সাজানো ব্যাটিং লাইনআপকে ৮৬ রানেই গুটিয়ে দেয় খুলনা। দলটির জন্য সবচেয়ে বড় আশার জায়গা ওপেনিং জুটিতে ভালো শুরু পাচ্ছে। নাঈম শেখ তো আসরের ৪৯২ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আর মিরাজও ওপেনিংয়ে খেলছেন দারুণ সব কার্যকরী ইনিংস।
খুলনা প্লে-অফের আগে দলে ভিড়িয়েছে দুই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার ডেড হেটমায়ার ও জেসন হোল্ডারকে। এলিমিনেটর ম্যাচে তাদের কাজে না লাগলেও আজ চিটাগংয়ের বিপক্ষে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন তারা। চিটাগং অবশ্য নক আউটে হুট করে বিদেশি বা বড় নাম দলে ভেড়ানো সমর্থন করছে না। তবে খুলনার স্থানীয়রাও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। রংপুরের বিপক্ষে ৩ উইকেট নেয়া নাসুম, আসরে ১৭ উইকেট নেয়া আবু হায়দার রনিকে নিয়ে সাজানো বোলিং আক্রমণ খুলনার। অধিনায়ক মিরাজও আছেন দারুণ ছন্দে। তবে হাসান মাহমুদের ডেথ ওভারের বোলিংই খুলনাকে সবচেয়ে বেশি ভরসা যোগাবে। তা তাদের জন্য ভয়ের কারণ হতে পারে চিটাগংয়ের শামীম হোসেন পাটোয়ারির পাল্টা আক্রমণ।
লীগ পর্বেই নকআউট ম্যাচ খেলা নাসুমের আশা খুলনা ফাইনাল খেলবে। তিনি বলেন, ‘২ ম্যাচ আগে থেকেই নক আউট খেলছি। সব দলই চায় সেমিফাইনাল খেলা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সেরা চার। আজকে প্রথম ম্যাচ জিতেছি আলহামদুলিল্লাহ। পরের ম্যাচও জেতার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। এই বিশ্বাসটা নিয়েই আমরা গত ৩ মাস খেলে যাচ্ছি।’