দেশ বিদেশ
খুবি ছাত্র অর্ণবকে গুলি করে হত্যা, মা জানে দুর্ঘটনা
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
২৬ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণবের মা চণ্ডী রানী জানেন না তার ছেলেকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি জানেন ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ছেলেকে হারিয়ে তিনি বিলাপ করছেন। প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। চণ্ডী রানীর কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। সন্তানকে হারিয়ে শুক্রবার রাত থেকে নির্ঘুম কাটিয়েছেন তিনি। আর অর্ণবের বাবা আর ছোট ভাই শোকে বিলাপ করছেন।
গতকাল দুপুরে নগরীর বানরগাতি এলাকায় অর্ণবের বাড়িতে গেলে এ দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। পরিবারের সদস্যরা অর্ণবকে হারিয়ে নির্বাক। রাস্তার মোড়ে নিহত অর্ণবের বাবাকে বসে থাকতে দেখা যায়। তাকে ঘিরে অনেক মানুষের জটলা। নির্বাক হয়ে বসে আছেন তিনি। তাকে সান্ত্বনা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন অনেকে। কিছুক্ষণ পরপরই সন্তানের নাম নিয়ে চিৎকার করছেন। তিনি উপস্থিত সকলকে বলতে থাকেন আমার বাবা কারও সঙ্গে কোনোদিন কোনো দুর্ব্যবহার করেনি। কেন ওরা আমার ছেলেকে এভাবে হত্যা করলো। বাসার একটি কক্ষে অর্ণবের মা চণ্ডী রানীকে বিলাপ করতে দেখা যায়। তাকে জানানো হয়নি যে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে বলে জানেন চন্ডী রানী। অর্ণবের ছোট ভাই অনীক কুমার সরকার বলেন, অর্ণবের সঙ্গে কারও শত্রুতা থাকতে পারে না। তাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো।
কার কাছে বিচার দিলে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার পাবো। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর শেখপাড়া তেঁতুলতলা মোড়ে একটি মোটরসাইকেলে হেলান দিয়ে অর্ণব চা পান করছিলেন। এ সময় ১০-১৫টি মোটরসাইকেলে সশস্ত্র লোকজন এসে প্রথমে তাকে গুলি করে। গুলি তার গায়ে লাগার পর রাস্তার উপর পড়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পার্শ্ববর্তী খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের ছাত্র। তার রোল নম্বর ২৩০৩১৭। জানতে চাইলে সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অর্ণব হত্যার ঘটনায় শনিবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত মামলা হয়নি। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে অর্ণবের মরদেহ বেলা পৌনে একটায় তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।