ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

কলকাতায় চাঞ্চল্যকর নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাস

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা

(৪ সপ্তাহ আগে) ২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ৩:৩২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০০ পূর্বাহ্ন

mzamin

কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি দিযেছেন শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। সোমবার বিচারক এই শাস্তির রায় ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে তিনি নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন। সাজা ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, এটি বিরলতম অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। এর আগে গত শনিবার বিচারক নারী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণে যুক্ত থাকার অভিযোগে এককভাবে কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেন। সেদিনই তিনি জানিয়েছিলেন, সোমবার শাস্তির রায় ঘোষণা করবেন। 

গত বছরের ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হল থেকে এক নারী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। গত ৪ নভেম্বর মামলায় চার্জ গঠনের পরে ১১ নভেম্বর থেকে দীর্ঘ শুনানি চলে। গত ১৮ জানুয়ারি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে।

সোমবার রায় ঘোষণার আগে বিচারক অভিযুক্তের বক্তব্য শোনেন। আগের দিনের মতই অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। তবে সিবিআইয়ের আইনজীবী অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানান। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীও অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সওয়াল করেন।

তবে বিচারকের শাস্তির রায়কে সকলে স্বাগত জানালেও নির্য়াতিতা নারী চিকিৎসকের পরিবারসহ নাগরিক সমাজের বৃহৎ অংশ মনে করেন, অভিযুক্তের একার পক্ষে এই নারকীয় কাজ করা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত। তাদের কন্যার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ন্যায় বিচার না পাওয়া পর্যন্ত নির্যাতিতার পিতা-মাতা লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন , আমরা ক্ষতিপূরণ চাই না। আমরা বিচার চাই। ইতিমধ্যেই তারা সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছেন। নির্যাতিতার পিতা জানান, তারা যে ৬৭টি প্রশ্ন তুলেছেন তার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত তারা থামবেন না। 

প্রথমে ঘটনার তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক ‘বায়োলজিক্যাল’ এবং ‘ডিজিটাল’ তথ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করেছিল তারা। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআইও তদন্ত চালিয়ে আটক সিভিক ভলান্টিয়ারকেই ‘একমাত্র অভিযুক্ত’ হিসাবে বর্ণনা করে আদালতে চার্জশিট পেশ করে।

তার দু’মাস পর রায় ঘোষণা হলো। তবে ধর্ষণ-খুনের মামলায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও গ্রেপ্তার করে সিবিআই। যদিও তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ফলে ওই মামলায় সন্দীপ এবং অভিজিৎ দু’জনেই জামিন পেয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে কবে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়া হবে তা এখনও জানা যায়নি। 

অভিযুক্তের শাস্তি প্রসঙ্গে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের বক্তব্য,  জুনিয়র ডাক্তার থেকে সিনিয়র ডাক্তার ,সমাজের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সবাই বলেছি, একটা বৃহত্তর প্রমাণ লোপাটের ষড়যন্ত্র এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। বারে বারে তা প্রমাণিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট সিবিআই জমা দিতে পারেনি। অনেক প্রশ্নচিহ্ন এখনও রয়ে গিয়েছে। যার উত্তর আমাদের কাছে অজানা।

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট/ আবারো ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক উত্তেজনা

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status