দেশ বিদেশ
হু’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদের নিয়োগের তদন্ত করবে বাংলাদেশ
১৯ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবারবাংলাদেশ একদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে প্রত্যর্পণের জন্য চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে হাসিনার মেয়ে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদও তদন্তের আওতায় রয়েছেন। তার মা নির্বাচন প্রক্রিয়াতে কারচুপি করেছেন এমন অভিযোগের মধ্যে সায়মা ওয়াজেদ ২০২৩ সালের নভেম্বরে আঞ্চলিক নেতাদের দ্বারা হু’র পদে নির্বাচিত হন। গত বছরের আগস্টে, ছাত্র বিক্ষোভের বিরুদ্ধে কঠোর দমন-পীড়নের পর হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে গণবিদ্রোহ। চাপে পড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান হাসিনা। তিনি বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। সায়মা নয়াদিল্লিতে ডঐঙ ঝঊঅজঙ অফিসে রয়েছেন। এই সপ্তাহে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক জেনারেল আখতার হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন যে হাসিনার বিরুদ্ধে তার কমিশনের তদন্তে সায়মা ওয়াজেদের নামও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। হোসেন মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মার নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানসহ ঝঊঅজঙ-এর ১১টি সদস্য দেশ রয়েছে। তবুও শুধুমাত্র ক্ষুদ্র একটি রাষ্ট্র নেপাল আঞ্চলিক পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রার্থী দিয়েছিল। সদস্য দেশগুলোর দ্বারা সায়মার নির্বাচনের আগে হেলথ পলিসি ওয়াচ দ্বারা প্রকাশিত একটি নিবন্ধে, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুকেশ কপিলা উল্লেখ করেছেন যে, - তার (সায়মার) প্রযুক্তিগত এবং জনস্বাস্থ্য খাতে দক্ষতা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড পূরণ করে না। বিশ্ব জনস্বাস্থ্য খাতে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ট্র্যাক রেকর্ড এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনায় সায়মার উল্লেখযোগ্য দক্ষতা ছিল না, যা হু’র ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়’। কপিলা আরও লিখেছেন- ‘কিন্তু তার (সায়মা) মা সাম্প্রতিক উচ্চ-স্তরের শীর্ষ সম্মেলন যেমন ইজওঈঝ, অঝঊঅঘ, এ২০ এবং টঘ সাধারণ পরিষদে মেয়েকে পরিচয় করানোর মাধ্যমে প্রার্থিতার জন্য সরকারের বৈধ লবিং এবং স্বজনপ্রীতির মধ্যে সূক্ষ্ম রেখা অতিক্রম করেছেন।’ সায়মা ওয়াজেদ একজন মনোবিজ্ঞানী, অটিজমের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ।
আচরণবিধি
২০২৪ সালের এক্সিকিউটিভ বোর্ড সুপারিশ করেছে যে সমস্ত আঞ্চলিক পরিচালকদের আচরণবিধির পরিধি প্রসারিত করা উচিত যাতে যৌন অসদাচরণসহ অন্যান্য আপত্তিজনক আচরণ এবং প্রার্থীদের ব্যক্তিগত স্বার্থ-সংক্রান্ত বিধানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে। আরও দৃঢ়ভাবে প্রার্থীদের রেফারেন্স চেক, যোগ্যতা এবং কর্মজীবনের ইতিহাস যথাযথভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এটি সুপারিশ করা হয়েছে যে, মনোনীত সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তাদের নিয়োগের আগের দুই বছরে প্রার্থীদের জন্য অনুদান বা সহায়তা তহবিল প্রকাশ করা উচিত। ওয়াজেদের নিয়োগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এমন সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় হু বলেছে- ‘যদি হু-এর নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে সদস্য রাষ্ট্রের দ্বারা বা প্রার্থীর দ্বারা অন্যায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে জাতীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত করা উচিত হবে। আমরা এই ধরনের তদন্ত বা কোনো চলমান আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করবো না। ‘হু সংবিধানের ৫২ অনুচ্ছেদ অনুসারে, আঞ্চলিক পরিচালকদের নিয়োগ করা হয়’ হু-এর নির্বাহী বোর্ড আঞ্চলিক কমিটির সঙ্গে একমত- এই ভিত্তিতে। হু’র আইনি পরামর্শের একটি নোট মোতাবেক, সমস্ত প্রার্থীর যোগ্যতার মূল্যায়নের জন্য একটি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১২ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও, শুধুমাত্র ইউরোপীয় অঞ্চলই তা করেছে।
সূত্র: হেলথ পলিসি
পাঠকের মতামত
ASAP Please