দেশ বিদেশ
যা আছে ছাত্রদলের ডাকসু সংস্কার প্রস্তাবনায়
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে ডাকসু কেন্দ্রিক তৎপরতা। এবার ডাকসু’র সংস্কার প্রস্তাবনা দিলো ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর ডাকসু’র সংস্কার প্রস্তাবনা দেয় ছাত্র সংগঠনটি। একইসঙ্গে বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্কার প্রস্তাবনা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে। সংস্কার প্রস্তাবনায় ২০১৯ সালে সংযুক্ত বিষয়াবলীরও কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। ডাকসু’র গঠনতন্ত্রে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ নির্বাচনে ‘ভোটার ও প্রার্থী’ হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা সুনির্দিষ্টভাবে ৩০ বছর না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ‘ভোটার ও প্রার্থী’ হওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। নিয়মিত ছাত্রত্বের বিস্তারিত সংজ্ঞায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের, ডাকসু’র গঠনতন্ত্রে নির্দিষ্ট বয়সসীমা উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চায় না বলে জানায় সংগঠনটি।
ডাকসু’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছাত্র সংসদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে ছাত্র সংগঠনটি। তাই শিক্ষার্থীদের কার্যকরী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং সামাজিক অর্থনৈতিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখা এবং লালন করা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুনাগরিকতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী সৃষ্টি, এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিভিত্তিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম করাকে লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসেবে দেখতে চায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
ছাত্রদলের সংস্কার প্রস্তাবনায়, ডাকসু ও হল সংসদসমূহের নির্বাহী কমিটির সভাপতির পদকে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তাবনা দেয়ার পাশাপাশি সভাপতি পদের ক্ষমতার ভারসাম্য আনার জন্য শিক্ষক, প্রশাসক, অ্যালামনাই ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বাজেট অনুমোদনসহ সভাপতি পদের কিছু দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে নির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাহী কমিটির দায়িত্ব পালন করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে। প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদে আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর। আরও থাকবেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, ডিনস কমিটির একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি সিন্ডিকেটের একজন নির্বাচিত সদস্য (প্রফেসর ক্যাটাগরি), অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ডাকসু’র নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত সহ-সভাপতি (সদস্য সচিবের দায়িত্বে)। বিদ্যমান কাঠামোয় সভাপতি অনির্বাচিতভাবে ভাইস চ্যান্সেলর হয়ে থাকলেও, ছাত্রদল চাইছে সভাপতি শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে নির্বাচিত হোক। এক্ষেত্রে তারা নজির টেনেছে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। একইসঙ্গে ডাকসু’র ওপর সিন্ডিকেটের অত্যধিক ক্ষমতা চর্চার বিষয়েও সংস্কার চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পদ বৃদ্ধির কথা বলেছে ছাত্র সংগঠনটি। বর্তমান গঠনতন্ত্রের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদটির নাম ‘মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক সম্পাদক’-এ রূপান্তর করে এ পদের কার্যাবলী নাম অনুযায়ী পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। দুটি ভিন্ন পথকে একীভূত করে সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক নামে একটি পদকে প্রস্তাব করা হয়েছে। চাওয়া হয়েছে মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন।