দেশ বিদেশ
একদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা অন্যদিকে হামলায় নিহত ৬২
মানবজমিন ডেস্ক
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
নানা জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে ‘চূড়ান্ত’ হতে যাচ্ছে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি। এমনটাই জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। এই যখন অবস্থা তখনও ইসরাইলি হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে কমপক্ষে ৬২ জনকে। একটি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র বানানো হয়েছিল, সেখানে এবং গাজা উপত্যকার বিভিন্ন বাড়িতে বোমা হামলা জোরালো করে ইসরাইলি বাহিনী। একদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছার আশার বাণী শোনানো হয়েছে। অন্যদিকে গাজায় রক্তের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে ইসরাইল। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ইসরাইল এবং হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওই চুক্তিতে যোগ দিতে। অন্যদিকে চুক্তির দাবিতে হাজার হাজার মানুষ র্যালি করেছে ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবে। এর কারণ, চুক্তি হলেই হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিরা মুক্তি পাবে। অন্যদিকে জেরুজালেমে বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার কট্টরপন্থি। তারা যুদ্ধ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গাজায় হামলা চালিয়ে ইসরাইল কমপক্ষে ৪৬,৭০৭ জন ফিলিস্তিনিকে গণহত্যা করেছে। আহত করেছে কমপক্ষে এক লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জনকে। কাতারের রাজধানী দোহায় গাজায় যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করা নিয়ে টানা আলোচনায় বসে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর। এ বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গতকালই যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানানোর প্রতিশ্রুতি দেয় মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। কাতারের রাজধানী দোহায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরাইলি জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আট ঘণ্টা বৈঠক করেন সংশ্লিষ্টরা। বৈঠকে হামাস-ইসরাইলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এবারের আলোচনা আগের চেয়েও অনেক বেশি ফলপ্রসূ বলে জানিয়েছেন তারা। কিন্তু মঙ্গলবার হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা ইসরাইলকে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। কেননা, তারা এখনো ইসরাইলের পক্ষ থেকে গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের নকশা হাতে পাননি।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, উভয় পক্ষ একটি লিখিত বিবৃতি উপস্থাপন করেছে, যা নিয়ে শেষ পর্যায়ের আলোচনা চলছিল। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একজন প্রতিনিধিকে সঙ্গে রেখে যুদ্ধবিরতির আলোচনা পর্যবেক্ষণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি শেষ পর্যায়ে। মঙ্গলবার জো বাইডেন ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে কথা বলেন। উভয় নেতা সরাসরি এবং তাদের টিমের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। দুই নেতার ফোনালাপের পর হোয়াইট হাউস বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে। চুক্তি কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন ওই দুই প্রেসিডেন্ট। আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে হামাস। ইসরাইলও একই কথা জানিয়েছে। তেল আবিব বলছে, আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে এখনো কিছু বিষয়ে বিশদ বিবরণ প্রয়োজন। অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, আশা করা হচ্ছে এই সপ্তাহেই গাজায় জিম্মিদের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।