অনলাইন
সহযোগীদের খবর
গ্যাস–সংকটে সামনে আরও ভোগান্তি
অনলাইন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:১২ অপরাহ্ন

প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘গ্যাস–সংকটে সামনে আরও ভোগান্তি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের ব্যাপক সংকটে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। অনেক জায়গায় দিনের বেলায় গ্যাস থাকছে না। রান্নার চুলা জ্বালাতে রাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। প্রয়োজনীয় গ্যাস পাচ্ছেন না শিল্পের গ্রাহকেরাও। ফলে রপ্তানিমুখী কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
সাধারণত শীতের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্ধেকে নেমে যায়। এতে বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের চাহিদা কমে যায়। ফলে শিল্প, আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এবার গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন টানা কমছে। ফলে শীতেও গ্যাস–সংকট ভোগাচ্ছে গ্রাহকদের। বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, সামনে এটি আরও ভোগাবে।
দিনে এখন গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দিনে সর্বোচ্চ ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হলে পরিস্থিতি সামলানো যায়। তবে এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ২৫০ কোটি ঘনফুট।
দেশে একসময় দিনে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো। ২০১৮ সালের পর থেকে উৎপাদন কমতে থাকে। ঘাটতি পূরণে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকে যায় গত আওয়ামী লীগ সরকার। নতুন গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোয় তেমন জোর দেওয়া হয়নি। ফলে উৎপাদন কমে এখন ১৯৩ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে। গত বছরও এটি ২০০ থেকে ২১০ কোটি ঘনফুট ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি বিভাগের অবহেলা ও অদক্ষতা এর জন্য দায়ী। সর্বোচ্চ মজুত থাকার পরও কারিগরি পরিকল্পনা ও দক্ষ প্রযুক্তির অভাবে তিতাস ও কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো যায়নি। অথচ কম মজুত থাকা বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে কয়েক গুণ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে।
সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে এখন তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। সর্বশেষ উন্মুক্ত দরপত্রে কোনো কোম্পানি সাড়া দেয়নি। এখন নতুন করে আবার দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি নিচ্ছে পেট্রোবাংলা। আগামী কয়েক বছরেও সমুদ্রে গ্যাস আবিষ্কারের সুযোগ নেই। স্থলভাগে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে তেমন গতি নেই। পুরোনো গ্যাসক্ষেত্রে নতুন কূপ খনন করে উৎপাদন বাড়ানোর কাজ চলছে ধীরগতিতে। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি কূপ খননের কথা থাকলেও তিন বছরে হয়েছে মাত্র ১৬টি।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চাইলেই চট করে গ্যাসের সংকট সমাধান করা যাবে না। উৎপাদন কমছে, এলএনজি আমদানির সক্ষমতাও সীমিত; আবার এলএনজির দামও বাড়তির দিকে। দেশে উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া কোনো সমাধান নেই। তাই অনুসন্ধান ও উৎপাদনে জোর দিয়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো হচ্ছে।
চুলা জ্বালাতে রাতের অপেক্ষা
রাজধানী ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্যাস না পাওয়ার ফোন আসছে তিতাসের অভিযোগ কেন্দ্রে। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা লাইজু বেগম বলেন, রান্নার চুলা জ্বালাতে রাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। দিনের বেলায় গ্যাস থাকে না। শুধু মোহাম্মদপুর নয়; ধানমন্ডি, কলাবাগান, মিরপুর, উত্তরাসহ রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার মানুষ গ্যাসের অভাবে রান্নার চুলা জ্বালাতে পারছেন না।
গাজীপুরেও গ্যাসের অভাবে রান্না করতে পারছেন না আবাসিক গ্রাহকেরা। কোথাও কোথাও জ্বলছে না রান্নার চুলা, আবার কোথাও কোথাও আগুন থাকলেও তা কোনোরকমে মিটমিট করছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন গাজীপুর মহানগর, সদর ও কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও।
যুগান্তর
‘দরপত্রে বেড়েছে তদবির’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, রাজধানীর নগর সংস্থাগুলোর দরপত্রে নানামুখী তদবির বেড়েছে। কেনাকাটা, সেবা ও উন্নয়নকাজের দরপত্রে তদবিরের চাপে কাবু হয়ে পড়েছেন প্রকৌশলী-কর্মকর্তারা। সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও নানাভাবে তদবির করছেন। কাজের তুলনায় তদবিরের পরিমাণ বেশি হওয়ায় আগ্রহীরা দরপত্র আহ্বানকারীদের ওপর অসন্তুষ্ট হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন যারা দরপত্রে অংশ নিচ্ছেন, তাদের অধিকাংশেরই অভিজ্ঞতা নেই। কারও কারও কাজের ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণাও নেই। তবুও তারা কাজ পেতে চাচ্ছেন। যে কোনো মূল্যে কাজ দিতে প্রকৌশলী-কর্মকর্তাদের চাপ দিচ্ছেন আগ্রহী ঠিকাদাররা। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্তরা। বিভিন্ন দলের নেতারাও ওইসব ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার অনুরোধ করছেন। কেউ কেউ বড় নেতাদের নামও ভাঙাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন উপদেষ্টা, বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা অনেকের জন্য তদবির করেছেন। তদবিরগুলো অগ্রাহ্য করার মতো নয়, আবার আইন অনুযায়ী তাদের সুবিধা দেওয়া যায় না। এ ধরনের জটিলতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন নগর সেবা সংস্থার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রকৌশলী-কর্মকর্তারা।
তারা জানান, একজন কর্মকর্তার রুমে অতিথিদের জন্য ২ থেকে ৩টা চেয়ার থাকে। এসব রুমে ১০-১৫ জন লোকের সমাগম থাকে। কর্মকর্তারা বহিরাগতদের জন্য নিজেদের কাজটিও ঠিকমতো করতে পারেন না। কেউ সরাসরি এসে কাজ দাবি করছেন। আবার কারও জন্য ফোনকল আসছে। দরপত্র আহ্বানের পর যারা কাজ পাচ্ছেন, তারা খুশি হচ্ছেন; আর যারা পাচ্ছেন না, তারা দায়িত্বপ্রাপ্তদের হুমকিধমকি দিচ্ছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে ওয়ার্ডভিত্তিক আবর্জনা পরিষ্কারের দরপত্র হয়েছে। সেখানে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ পেতে তুমুল লড়াই হয়েছে। বিভিন্ন দলের সমর্থক বা নেতাকর্মী দাবি করে একেকটি ওয়ার্ডের জন্য গ্রুপে গ্রুপে লোকবল মহড়া দিয়েছে নগর ভবনে। পট পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত হওয়ার পর একাধিক প্রভাশালী ব্যক্তি, ইসলামপন্থি দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও এসব কাজ পাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাতে দেখা গেছে।
আরও জানা যায়, মশক নিয়ন্ত্রণ এবং বাৎসরিক উন্নয়ন ও সংস্কারকাজেরও দরপত্র হয়েছে। এসব কাজের জন্যও তুমুল লড়াই চলছে। কিছু দরপত্র হয়েছে, কিছু সামনে হবে। এসবকে কেন্দ্র করে ডিএনসিসি নগর ভবন রীতিমতো মাছের বাজারে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোয়। যেসব প্রকৌশলীর দপ্তরে বিভিন্ন কাজ রয়েছে, তারা খুবই শঙ্কায় দিনাতিপাত করছেন। বেশি লোকের জটলা এবং ভীতিকর পরিবেশ উপলব্ধি করলে অফিস থেকে বেরিয়ে যান কেউ কেউ; কেউবা ফোন বন্ধ করে রাখছেন।
ডিএনসিসির এক প্রকৌশলী জানান, বড় বড় জায়গা থেকে ফোন আসছে, এতে তারা বিব্রতবোধ করছেন। আগে এসব বিষয় মেয়ররা ম্যানেজ করতেন। এখন প্রকৌশলী পর্যায়ে চলে আসে বলে তারা খুবই শঙ্কার মধ্যে পড়ে যান। কেননা দরপত্রের নিয়ম অনুসরণ করতে চান না তারা। কিন্তু নিয়ম অনুসরণ করায় এতে যারা যোগ্য, তারা কাজ পাচ্ছেন। আর যারা তদবির করছেন, তারা কাজ না পাওয়ায় প্রাক্কলিত মূল্য বা দরপত্রের গোপন দর জানিয়ে দেওয়ার চাপ দিচ্ছেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৯ ডিসেম্বর ডিএনসিসির ওয়ার্ড পর্যায়ের গৃহস্থালির বর্জ্য অপসারণের ঠিকাদারি কাজ না পাওয়ার ক্ষোভে কয়েকজন ঠিকাদার সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর খায়রুল আলমকে হেনস্তা করেন। এ সময় তারা নিজেদের বিএনপির রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বলে দাবি করেন। তারা গুলশান-২ ডিএনসিসি নগর ভবনে সিইওর রুমে প্রবেশ করে গালাগাল করেন এবং তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছেন।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘ব্যবসা গোটাতে চান উদ্যোক্তারা’। খবরে বলা হয়, বর্তমানে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির চাপে আছেন ব্যবসায়ীরা। এই সময় উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে পণ্য ও সেবা বিক্রি কমে যাওয়ায় বিপরীতমুখী চাপে আছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে তাঁদের নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ নেই। বরং এখন কঠিন বাস্তবতার মুখে রুগ্ণ ও সংকটে থাকা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সরকারের কাছে নীতিমালা চান ব্যবসায়ীরা।
স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বিনিয়োগবান্ধব হতে পারেনি দেশ। এখনো একজন বিনিয়োগকারীকে দেশে বিনিয়োগ করতে হলে ২৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪১টি ছাড়পত্র নিতে হয়। এই জটিলতার পরও সরকারের দেওয়া সেবার মূল্য ও কর বৃদ্ধি অব্যাহত। গত তিন বছরে গ্যাসের দাম ২৫০ শতাংশ থেকে প্রায় ৪৫০ শতাংশ বেড়েছে।
যদিও আবার দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। এসবের সঙ্গে আছে উচ্চ সুদের হার, ঋণপত্রে জটিলতা, বেতন-বোনাস, উচ্চ উৎপাদন ব্যয় ও ডলার দর বৃদ্ধিতে এখন নাজেহাল অবস্থা।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সংগঠনের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করে এমন দবি করেছে। এ বৈঠকেই তারা এখন বিনিয়োগ করতে আগ্রহ পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে।
একই সঙ্গে তারা সামনে আর যাতে লোকসানে না পড়তে হয়, সে জন্য কিছু কিছু ব্যবসাও গুটিয়ে নিতে চায়। জানা যায়, ২০২১ সালের পর থেকেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসায় ভাটা পড়েছে। এমনকি সরকার পরিবর্তনের পরও বিনিয়োগে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে এক হাজার ৮৩টি ব্যবসা প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৩৩৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। পরের বছর এক হাজার ৮১টি ব্যবসা প্রকল্প নিবন্ধনের মাধ্যমে এক হাজার ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল।
২০২৩ সালে আরো কমে ব্যবসার ৯৯৮টি প্রকল্পে ৮৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলার হয়। আর চলতি বছরে ব্যবসার ৭৪২টি প্রকল্পে এক হাজার ১৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ নিবন্ধন হলেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকেই ২৫৪টি প্রকল্পে ৬৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনকালীন জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তা কমে ১৮৬টি প্রকল্পে মাত্র ১৮৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার হয়েছে।
রিজার্ভের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বিদেশি বিনিয়োগ। রিজার্ভ যেমন কমছে, বিদেশি বিনিয়োগও কমছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৮.৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে নিট বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ১৪৭ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে যা ছিল ১৬১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।
সমকাল
‘সুন্দরবনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, প্রাণ-প্রকৃতির সর্বনাশ’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন ভ্রমণে বাড়ছে ভ্রমণপিয়াসীদের ঝোঁক। সেখানে প্রতিবছর ছুটছেন দেশি-বিদেশি লাখ লাখ পর্যটক। মানুষের এই আগ্রহকে সামনে রেখে এগিয়ে এসেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। গেল ছয় বছরেই সুন্দরবন ভ্রমণে পর্যটক টানতে যুক্ত হয়েছে ২৯টি বিলাসবহুল নৌযান। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এসব নৌযানের কোনো কোনোটিতে সুইমিংপুলসহ তিনতারকা মানের সেবা দেওয়া হয়। এর পেছনে লগ্নি হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
তবে সুন্দরবনে পর্যটকের পদচারণায় বনের জীববৈচিত্র্যের ওপর পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। বিপন্ন হচ্ছে প্রাণ-প্রকৃতি। অতিরিক্ত নৌযান ও পর্যটকের চাপ বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের যাতে ক্ষতি না করে, এ জন্য ২০১৪ সালে সুন্দরবন ভ্রমণ নীতিমালা তৈরি করা হয়। এতে বনের অভয়ারণ্যের ওপর চাপ কমিয়ে প্রান্তসীমায় নতুন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পাশাপাশি জোর দেওয়া হয় প্রকৃতিবান্ধব পর্যটনে। তবে নীতিমালা উপেক্ষা করে এখন দৈনিক গড়ে ৩০টি নৌযান অভয়ারণ্যে দিনভর অবস্থান করে। ইকোট্যুরিজমের কথা বলা হলেও বন ভ্রমণের নামে পিকনিক পার্টি বসে নৌযানে।
বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনে ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পুরোটাই সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এর ৫৩ শতাংশ এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে সম্পদ আহরণ ও বনজীবীর প্রবেশ নিষিদ্ধ। সুন্দরবনের ভেতরে বন বিভাগের ১১টি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে অভয়ারণ্য এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে চারটি।
গেল ২৫ বছরে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময় পর্যটক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ গুণ। ২০০১-০২ অর্থবছরে বন ভ্রমণ করেছিলেন ৫৯ হাজার ১৬৯ পর্যটক। ২০০৯-১০ অর্থবছরে তা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ লাখ ১৬ হাজার ১৪৩ জন এবং পরের বছর বন ভ্রমণে যান ২ লাখ ১১ হাজার ৫৭ জন। গত আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৯৯ জন পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণে গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পর্যটকের সুন্দরবনযাত্রা এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে ভরপুর পর্যটন ব্যবসার আড়ালে চাপা পড়ছে পর্যটকের নিরাপত্তার বিষয়। সুন্দরবন উপকূলে চলাচল-নিষিদ্ধ নৌযানে মেটানো হচ্ছে পর্যটকের ভ্রমণ-তৃষ্ণা। ট্রলার, জালি বোটে বনের গহিনে চলে যাচ্ছেন পর্যটক। আবার বনের ভেতর কোনো পর্যটক হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হলে সে ব্যক্তিকে উদ্ধারের কোনো পথ নেই।
সুন্দরবন ভ্রমণের উপায় দুটি। এক, দিনের মধ্যে প্রান্তসীমায় থাকা পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখা। অন্যটি, বনের গহিনে ঘুরে বেড়াতে পর্যটকবাহী নৌযানে তিন দিনের সফর। এক দিনের জন্য সাধারণত ছোট ট্রলার ও জালি বোট ব্যবহার করা হয়।
সুন্দরবনে পর্যটনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালমা বেগম। তিনি বনের প্রান্তসীমায় থাকা পর্যটনকেন্দ্রে দৈনিক ৪ হাজার ২১৬ জন পর্যটক থাকলে পরিবেশের ক্ষতি হবে না বলে সুপারিশ দিয়েছিলেন। তবে তা আমলে নেওয়া হয়নি।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি দখলে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা’। খবরে বলা হয়, চাঁদা না পেয়ে দখলের চেষ্টা করা হচ্ছিল মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার। সেটাও সম্ভব হয়নি ছাত্র-জনতা ও ব্যবসায়ীদের কারণে। ক্ষোভ থেকেই গত ১০ জানুয়ারি রাতে টার্গেট করে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে কোপানো হয় দুই ব্যবসায়ীকে। তবে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহতের ঘটনায় নতুন করে সামনে এসেছে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম, যারা একসময় অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রক ছিলেন। তারা হলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন ও মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল। যারা গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর গত ১৫ ও ১৬ আগস্ট কারাগার থেকে জামিনে বের হন।
জানা গেছে, হামলার নেপথ্যে রয়েছে এ দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজির দ্বন্দ্ব। যারা জেলে থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধ জগত্। গত শুক্রবার রাতে ব্যস্ত সড়কে ১২-১৫ জনের দুর্বৃত্ত দলের এক থেকে দেড় মিনিটের অতর্কিত হামলার শিকার হন এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ওয়াহেদুল হাসান দীপু এবং ইপিএস কম্পিউটার সিটির (মাল্টিপ্ল্যান) যুগ্ম সদস্যসচিব এহতেসামুল হক। এ ঘটনার ১০-১২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে চাপাতি দিয়ে কোপানোর নৃশংসতা ফুটে উঠেছে।
পরে তাদের উদ্ধার করে পাশের পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় হাত ও পায়ে মারাত্মক জখম নিয়ে এহতেসাম এখনো হাসপাতালে ভর্তি। আর হাতে জখম নিয়ে চিকিত্সা শেষে ছাড়া পেয়ে শনিবার রাতে নিউ মার্কেট থানায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী দীপু। মামলার বাদী দীপু মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালের বড় ভাই। দায়ের করা মামলায় দীপু চাঁদাবাজির জেরে হামলায় জড়িত হিসেবে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের আসামি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল হক ওরফে ইমনকে (৫২)। মামলার অন্য আসামিরা হলেন মুন্না (৪৭), আসিফ ঝন্টু (২৮), এ কে এম চঞ্চল (৪৩), শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সহযোগী খোকন (৪০), সাইদ আসাদ (৪১), জসিম ও কলা জসিম (৩৫), তুষার ওরফে কিলার তুষার (৩৫), তৌফিক এহসান (৬৩) ও মো. জাহিদ (৪৪)।
এ ঘটনায় মামলার ৩ নম্বর আসামি আসিফুল হক আসিফ ওরফে ঝন্টু (৩২) ও কাউসার মৃধা (২৪) নামে সন্দেহভাজন এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার আসিফ শরীয়তপুরের ডামুড্ডা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল হক আকনের ছেলে। আর কাউসার মৃধা পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জের কিসমত শ্রীনগরের মোহাম্মদ হালিম মৃধার ছেলে।
নয়া দিগন্ত
‘টেকানো যাচ্ছে না টিউলিপের মন্ত্রিত্ব’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটেনের বিজ্ঞানমন্ত্রী পিটার কাইল বলেছেন, টিউলিপের পক্ষে মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখা ‘অসম্ভব’। তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেখছেন স্টারমার নিজে। তিনি স্বাধীন তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবেন। একের পর এক দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার বিষয় ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে এবার মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীসরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস টিউলিপ সিদ্দিককে ক্ষমা চাওয়ার এবং পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে সানডে টাইমসকে বলেছেন, তিনি দুর্নীতি দমনমন্ত্রী হয়ে নিজেকে রক্ষা করছেন।
বলেছেন, এটা বুঝতে পারেননি, কিন্তু এখন আপনি এটা বুঝতে পারছেন। কিন্তু বলছেন না যে দুঃখিত, আমি তখন জানতাম না, আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছি যে, আমি এটা করেছি এবং আমি পদত্যাগ করছি।
ড. ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের দেয়া লন্ডনের সম্পত্তিতে বসবাস করার বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত। লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তির বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। একই সাথে শেখ হাসিনা সরকারের সময় হওয়া লুটপাট থেকে তার সুবিধা পাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে বিচারের জন্য দেশে ফেরত পাঠানো উচিত বলে জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে রোববার বলা হয়, তলবের পর টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের মন্ত্রী মান বিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে তার বিরুদ্ধে বিনে পয়সায় ফ্লি্যাট নেয়ার ব্যাপারে বক্তব্য দিতে বলা হয়। টিউলিপের পক্ষে মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখা ‘অসম্ভব’। তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেখছেন স্টারমার নিজে।
টিউলিপ অবশ্য তার বিরুদ্ধে এ ধরনের তদন্ত শুরু করার জন্য স্যার লরিকে লেখা একটি চিঠিতে দাবি করেন যে তিনি কোনো ভুল করেননি। কিন্তু ব্রিটেনের বিজ্ঞানমন্ত্রী পিটার কাইল বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে ‘তদন্তের প্রয়োজন’। পিটার স্কাই নিউজের সানডে মর্নিং উইথ ট্রেভর ফিলিপসকে বলেন, ‘আমি মনে করি এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সঠিক উপায় হলো কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করার অনুমতি দেয়া, আমরা সেই কর্তৃপক্ষকে স্বাধীন তদন্ত করার জন্য আরো ক্ষমতা দিয়েছি, এবং আপনি ভালো করেই জানেন যখন কেয়ার স্টারমারের কথা আসে, তখন তিনি কর্তৃপক্ষের কথা শুনবেন। স্টারমার নিজেই বলেছেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করা দরকার।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘সরকারের ঋণ ২০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের ঋণের পরিমাণ গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ২০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে বিদেশী ঋণের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৪৪৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। প্রতি ডলার ১২০ টাকা (ওই সময়ের বিনিময় মূল্য) হিসাবে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকায়। বাকিটা অভ্যন্তরীণ ঋণ। রাজস্ব আহরণ ও বৈদেশিক আয়ের তুলনায় এ ঋণের পরিমাণ বর্তমানে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের ভাষ্য, কার্যকর ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশলের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে ভবিষ্যতে কঠিন সংকটের মধ্যে পড়তে হতে পারে।
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের সর্বনিম্ন দেশগুলোর একটি। রফতানি ও রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও আয় আসছে না কাঙ্ক্ষিত মাত্রায়। অথচ প্রতি বছরই বাড়ছে ব্যয়ের পরিমাণ। এ অবস্থায় ব্যয় মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী উৎস থেকে ক্রমাগত ঋণ করেছে পতিত শেখ হাসিনা সরকার। আবার এ ঋণের অর্থ থেকে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারও হয়েছে। তাই গত আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব নেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাঁধে বিশাল ঋণের বোঝা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেয়ার আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে জাতির কাঁধে রেখে যায় ১৮ লাখ ৩২ হাজার ২৮২ কোটি টাকার ঋণের বোঝা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ ছিল ১০ লাখ ২০ হাজার ২০৫ কোটি ও বিদেশী ঋণ ৮ লাখ ১২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা।
শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে দেশের বাজেটের আকার যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি স্ফীত হয়েছে সরকারের ব্যাংক ঋণ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশী-বিদেশী উৎস থেকে সরকারের মোট ঋণ ছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদেশী উৎস থেকে নেয়া হয়েছিল ১ লাখ ৬১ হাজার ২০ কোটি টাকার ঋণ। বাকি ১ লাখ ১৫ হাজার ৮১০ কোটি টাকা নেয়া হয় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। ব্যাংক খাতের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রসহ অন্যান্য খাত থেকে নেয়া হয় এ ঋণ।
আজকের পত্রিকা
‘বাড়তি ভ্যাটে বাড়ছে দাম’-এটি আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পুরানা পল্টনের বাসিন্দা আলিমুজ্জামান গতকাল রোববার বের হয়েছিলেন বারডেম হাসপাতালে একজন পরিচিত রোগীকে দেখতে। পথে সেগুনবাগিচা বাজারে থামেন রোগীর জন্য ফল কিনতে। আপেলের দাম জিজ্ঞেস করেই থমকে গেলেন। গত বৃহস্পতিবার এই একই বাজার থেকে যে দামে আপেল কিনেছিলেন, আজ (গতকাল) তার চেয়ে ২০ টাকা বেশি চাইছেন বিক্রেতা। তাঁর দাবি, আড়তে ফলের দাম বেড়েছে প্রতি কার্টনে ১০০-১৫০ টাকা। কাঁচাবাজারের ছোট ফল বিক্রেতা ভ্যাটের হিসাব অত না বুঝলেও আলিমুজ্জামান ঠিকই বুঝে গেলেন, ফলসহ বেশ কিছু পণ্য ও সেবায় সরকার যে ভ্যাট বাড়িয়েছে, তার প্রভাব শুরু হয়ে গেছে বাজারে।
বাজারেই কথা হলে এ প্রতিবেদককে আলিমুজ্জামান বলেন, এখন তেমন দেশীয় ফলের মৌসুম নেই। বছরজুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। বিশেষ করে ঢাকায় ডেঙ্গু ও সাধারণ জ্বরের রোগীর পথ্য হিসেবে আপেল, কমলা ও মাল্টার বাড়তি চাহিদা থাকে। এসব পণ্যকে বিলাসী হিসেবে ধরে আগেই এক দফা কর বাড়ানো হয়েছে। এখন আবার ভ্যাট বাড়ানোয় অনেক সাধারণ মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।
সরকার গত বৃহস্পতিবার শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, তার প্রভাব ইতিমধ্যে বাজারে ফুটে উঠেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পণ্য ও সেবার খরচ বেড়ে গেছে। রেস্তোরাঁ-মালিকেরা ক্রেতার কাছ থেকে বিলে বাড়তি ভ্যাট আদায় করছেন। পোশাকের নতুন দাম কার্যকর করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। মোবাইল ফোনের কল ও ইন্টারনেটের বাড়তি খরচ কেটে নিচ্ছে অপারেটরগুলো। বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেসব পণ্যের দাম এখনো বাড়েনি, সেগুলোর উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারীরা বলছেন, পুরোনো চালানের মজুত শেষ হয়ে নতুন পণ্য বাজারে এলে সেগুলোর দামও বাড়বে। নানা কারণে পণ্য উৎপাদন খরচ আগে থেকেই বেড়েছিল। এখন সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর কারণে খরচের সীমা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘ভ্যাট প্রত্যাহারে একাট্টা সবাই’। খবরে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি হঠাৎ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। সেই ঘোষণা গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে কার্যকর হয়েছে। এমনিতেই গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকে ভোগ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারও বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এরই মধ্যে নতুন করে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এ সংক্রান্ত ঘোষণার পর থেকেই দেশব্যাপী সব মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। ভোক্তা, ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দল সব পক্ষই একাট্টা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে। গত দুদিন ধরে বিবৃতি ও ছোটখাটো সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের প্রতি ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো অব্যাহত রয়েছে। আবার ভোক্তা পর্যায়ে অসন্তোষ বাড়ছে। দুদিনেই ভ্যাট ও করের চাপ পড়েছে সব পর্যায়ের মানুষের মধ্যে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় নামারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এর আগে অংশীজনদের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই ১ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিসংক্রান্ত এনবিআরের প্রস্তাব পাস হয়। তারপর ভোক্তা পর্যায় থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সংগঠন ও অর্থনীতিবিদরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেন। একপর্যায়ে ৪ জানুয়ারি এনবিআর এক বিবৃতিতে দাবি করে, যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করা হচ্ছে, তার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই। এতে সর্বসাধারণের ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাবে না; মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে না।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে মূল্যস্ফীতি বেশি, ডলারের উচ্চমূল্য এবং ব্যাংকের অতিমাত্রায় সুদের বেড়াজালে দেশের মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে এমন বাস্তবতায় শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত তাদের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে। এই ভ্যাট ও কর বৃদ্ধির যত যৌক্তিক কারণই থাকুক না কেন এর বিষয়ে বিকল্প কিছু ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তাদের মতে, রোজার বাকি আর মাত্র দেড়মাস। ফলে এই চাপ গিয়ে রমজানের বাজারে পড়বে। তারা মনে করেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের রিভিউ দরকার।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘India’s fencing along border ‘unauthorised’ অর্থাৎ সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া ‘অননুমোদিত’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুমোদন ছাড়াই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ঘটনা দুই দেশের সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষুণ্ন করেছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা।
সীমান্তে বিএসএফের সাম্প্রতিক তৎপরতার কারণে উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে অননুমোদিত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা এবং বিএসএফের অপারেশনাল কার্যক্রম সীমান্তে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।’
এদিকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংক্রান্ত যেকোনো ‘অসম চুক্তি’ বাতিলের জন্য চাপ দেবে ঢাকা।