দেশ বিদেশ
চট্টগ্রামে শ্রমিকদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ আহত ১০
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১২ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবারচট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে এই সংঘর্ষ দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে থামে। আহতদের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এক কর্মকর্তা বলেন, সিইপিজেড থেকে আহত যাদেরকে আনা হয়েছে তাদের কারও মাথা ফেটেছে, কারও শরীরে আঘাত রয়েছে। তবে কারও অবস্থা গুরুতর নয়।
জানা গেছে, বাৎসরিক ৯ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের মুখে অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে নিয়েছে। দেখাদেখি একই দাবিতে অন্য কারখানাগুলোর শ্রমিকরাও আন্দোলন শুরু করেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল ৯টার দিকে যখন আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা তখন হঠাৎ মডিস্ট, জেএমএস এবং মেরিকো কারখানার শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় অনেকের হাতেই লাঠিসোঁটা দেখা যায়। একপক্ষ আরেকপক্ষকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, আন্দোলনের সময় কারখানার মূল গেট খোলা নিয়ে এক কারখানার শ্রমিকের সঙ্গে আরেক কারখানার শ্রমিকের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই তাদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় একপক্ষ আরেকপক্ষকে ঢিল ছুড়তে থাকে। এতে অনেকেই আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনাবাহিনীও ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে। চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবহান বলেন, ‘জেএমএস এবং মেরিকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে একটু মারামারি হয়েছে। মালিকরা তাদেরকে বুঝিয়েছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। একটি কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে, আরেকটি লাঞ্চের পর ছুটি দেয়া হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে আর্মি, নেভি, শিল্প পুলিশ এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুটো কারখানাই এক নম্বর সড়কে।’ তবে কতজন শ্রমিক আহত হয়েছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।
মেরিকো কোম্পানির ফিনিশিং ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আহত আলী আকরাম হোসেন বলেন, ‘দুপুরে লাঞ্চ, ৯ পারসেন্ট বেতন বাড়ানোসহ আট দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করছিলাম। কোম্পানি আমাদের দাবি-দাওয়া মানছে। একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করছে। এরপরে অফিসে এলে আমাদেরকে ১টায় ছুটি দিয়ে দিছে। আমরা যখন বের হইতে যাবো তখন গেইট আটকায় আমাদের ওপর হামলা চালায়। কারণ মালিকপক্ষ আমাদের দাবি মেনে নিছে কিন্তু মডিস্ট আর জেএমএসের মালিকপক্ষ তাদের দাবি মেনে নেয় নাই। এখন আমরা কেন তাদের সঙ্গে আন্দোলন করছি না এ কারণে আমাদের ওপর হামলা চালায় তারা।’ শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সুলাইমান বলেন, এটি বেতন-ভাতা সংক্রান্ত কোনো সমস্যা নয়। দু’টি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ হয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।