দেশ বিদেশ
কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে: সিপিডি
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবারকর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে সিপিডি আয়োজিত ‘বৃত্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা, কিশোরী ও যুবাদের কাজের সুযোগ ও কর্মব্যবস্থা’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। শিল্প প্রতিষ্ঠানে নারীবান্ধব পরিবেশ, নারীকে উদ্যোক্তা, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় সেমিনারে। অনুষ্ঠানে রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্টের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ, বিশেষ অতিথি হিসেবে শ্রম অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহমেদ, সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক তানিয়া শারমিন, সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমসহ অন্যান্য উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা নারীকে স্বাবলম্বী ও দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে করণীয় বিষয়গুলো আলোচনা করেন। বাংলাদেশ ‘ডমেসটিক ভায়োলেন্স’ এর কারণে ২ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি হারাচ্ছে প্রতি বছর। দেশে বর্তমানে ১৫ লাখ দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে বলেও জানান তারা। শ্রম অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহমেদ বলেন, যুব সম্প্রদায়কে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গড়ে তুলতে হবে। ৯০ দিনের মধ্যে একটা কমিশনের রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব না। রিপোর্টের ভিত্তিই হলো অংশীজনদের মতামত আর সিপিডি’র গবেষণা পুঙ্খানুপুঙ্খ হয়। এজন্য আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। শ্রম কল্যাণের প্রথম শর্তই হলো ভালো কাজের জন্য তৈরি করা। যেনো তেনো কাজের জন্য নয়। কিশোরগঞ্জের শ্রমবাজারে নিয়ে করা একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট একটি জেলা নিয়ে এত সুন্দর গবেষণা একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। প্রতিটি জেলা নিয়ে এমন গবেষণা করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। প্রতিটি জেলারই আলাদা ব্যান্ডিং রয়েছে। এভাবে কাজ করলে প্রণোদনা দেয়া যায়, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা যায়।
সিপিডি পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নানামুখী প্রতিবন্ধকতার কারণে জেলা পর্যায়ে কিশোরী ও তরুণীদের জন্য চাকরির বাজার অনেক চ্যালেঞ্জিং। যে কারণে শহুরে নারীদের চেয়ে গ্রামীণ নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমের আওতা বাড়াতে হবে। নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে ফ্রি ট্রেনিং, উপজেলা লেভেলে ইনসেন্টিভের ব্যবস্থা করা এবং কৃষি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকাগুলোতে পেইড ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্টের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ বলেন, স্কিল বলতে আমরা প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা বুঝি। কীভাবে এবং কেন করতে হবে সেটা জানতে হবে। একটি জেলাকে নিয়ে এভাবে গবেষণা করার জন্য সিপিডি’র গবেষকদের ধন্যবাদ জানান। সবাইকে নিয়ে কাজ না করলে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। তিনি আরও বলেন, প্রতিনিয়ত প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও এনএসডিএ কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি সেক্টরের শিল্পের মালিকদের নিয়ে আমরা কাউন্সিল গঠন করেছি। এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। প্রশিক্ষণের যখন মূল সিলেবাস তৈরি করি যারা শিল্পের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ, তাদেরকে নিয়েই আমরা কাজ করছি। নারীর উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া গ্রামাঞ্চল নারীদের এগিয়ে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম অধিকার কমিশনকে নারীদের কর্মসংস্থানে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূরীকরণের আহ্বান জানায় সিপিডি।