দেশ বিদেশ
সিপিডি’র তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া
বাজেটে কর বৈষম্য রয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার
৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবারপ্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কর বৈষম্য রয়ে গেছে বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডি। বাজেটের যে বৈষম্যবিহীন দর্শন, সেটার সঙ্গে বাস্তবের পদক্ষেপ সাযুজ্যপূর্ণ হয় নাই। বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই জানিয়েছেন নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার করা হয়েছে। এটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু এটা স্মরণ রাখতে হবে ৩ বছরের সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। ১০/১১ শতাংশও উঠে গেছে। জুলাই যোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার করা হয়েছে এটাকে স্বাগত জানাই। করের বিভিন্ন স্লট পরিবর্তন হয়েছে। যার মাধ্যমে মধ্যম আয়ের যারা রয়েছেন তাদের ওপর করের হার বেশি পড়বে। যারা উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কম পড়বে। এটা বৈষম্য। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ৫ হাজার করা হয়েছে। এখানেও একটা বৈষম্য হয়েছে। কারণ ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সেবা এক নয়। এটাতে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার বাজেট উত্থাপন করেছে। বাজেটের আকার কিন্তু খুব ছোট না। গত অর্থবছরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি। আগামী অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ৮.৯ শতাংশ। এটা অর্জন করাটাও কিন্তু বড় লক্ষ্য।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২০২৫ সালে ১৩.২ শতাংশ কমানো হয়েছে। সেখানে আমরা দেখি ১৫টা খাতের মধ্যে ১৪টা খাতেই কমানো হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এই তিনটা খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এই তিন খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে এসেছি। ভৌত অবকাঠামো বিশেষ করে ট্রান্সপোর্ট-কমিউনিকেশন, বিদ্যুৎ-জ্বালানি উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে। শুল্কের ক্ষেত্রে যৌক্তিকীকরণ করা হয়েছে। কিন্তু এর কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান চাপের মুখে পড়তে পারে। কারণ মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট বেশি। শুল্কের যৌক্তিকীকরণ করতেই হবে। সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক রাজস্ব-জিডিপি রেশিও সম্পর্কে বলেন, এখানে বলা হয়েছে ২০৩৫ সালে ১০.৫ শতাংশ বাড়বে। এই লক্ষ্যমাত্রা অত্যন্ত কম। এবার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৯ শতাংশ। ১০ বছর পর মাত্র দেড় শতাংশ বাড়বে। এটা কেমন লক্ষ্যমাত্রা? তখন আমরা উন্নয়নশীল হবো। এখানে আকাঙ্ক্ষার নিম্নগামিতা রয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু ভালো উদ্যোগ রয়েছে। ই-কমার্সকে একটা ফরমাল সেক্টরে আনা, করের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। পাবলিক-প্রাইভেট সেক্টরের অধীনে ৫৪০ কোটি টাকার ফান্ড, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছে, এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেট বাড়ানো হয়েছে। আমরা বলছি, কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে যারা নিয়ম মেনে কর দেন তাদের আঘাত দেয়া হয়। এগুলো প্যারালালি চলতে পারে না। এটাকে একবার দু’বার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেয়া উচিত। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কমানো হয়েছে। ১৪০টা কর্মসূচি চলতো এখন ৯৫টা করা হয়েছে। এটা অতিদরিদ্র মানুষের জন্য। মঙ্গলবার সিপিডি’র পক্ষ থেকে বাজেট নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরা হবে বলেও জানান তিনি।