ঢাকা, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ রজব ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

ডিবি হারুনের প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে এনবিআরের অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
১০ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবারmzamin

সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের তৈরি করা অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল প্রমোদাগার ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ এ অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে এনবিআরের একটি টিম কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত রিসোর্টটিতে অভিযান চালায়। বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে চারটি হার্ডডিস্ক, কিছু কাগজপত্র এবং বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত জব্দ করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন এনবিআরের পরিচালক চাঁদ সুলতানা চৌধুরানী। এ সময় এনবিআরের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মোহাম্মদ আব্দুল্লা আল মামুন তাকে সহযোগিতা করেন। অভিযান শেষে এনবিআর পরিচালক চাঁদ সুলতানা চৌধুরানী বলেন, সার্ভেয়ারের সহায়তায় ল্যান্ড এবং কনস্ট্রাকশনের মেজারমেন্ট নেয়া হয়েছে। এর রিপোর্টগুলোর ভিত্তিতে আসল ফাঁকিটা আমরা বের করতে পারবো। আমাদের টিম সংগ্রহকৃত তথ্য উপাত্তগুলো এবং যারা সাপোর্ট করলো আমাদের তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারবো একচুয়ালি কি পাওয়া গেলো। বিষয়গুলো তদন্তাধীন। তদন্ত সাপেক্ষে যে রেজাল্টটা আসবে তারপরই সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। 
এর আগে কর ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশিদ ও তার পরিবারের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব জব্দে চিঠি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসি। গত ২১শে অক্টোবর সিআইসি থেকে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তাতে সাবেক ডিবি প্রধান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। হারুন ছাড়াও তার বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবও জব্দ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার গ্রামের বাড়িতে শত কোটি টাকা ব্যয়ে রিসোর্টটি গড়ে তুলেছেন। তার ছোট ভাই ডা. এবিএম শাহরিয়ার রিসোর্টটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে রিসোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। রিসোর্টটির প্রিমিয়াম সুইটের প্রতিদিনের ভাড়া ছিলো ২০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ডিলাক্স রুমের ভাড়া ছিলো প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা। এছাড়া সুপার ডিলাক্স রুমের ভাড়া ১২ হাজার টাকা। ২০২১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর রিসোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, রিসোর্টটিতে হারুনের পরিবারের পাঁচ থেকে সাত একর জায়গা রয়েছে। বাকি অন্তত ৩৫ একর জায়গা ছিল অন্যদের। এসব জায়গার মালিকদের দাম দেয়ার কথা বলে হারুন রিসোর্টের জন্য জায়গা দখলে নেন। জায়গার মালিকদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষজন রয়েছেন। এসব জায়গার জন্য কেউই পুরো দাম পাননি। সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদসহ আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী-এমপি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, চলচ্চিত্র জগতের তারকা এবং ভিআইপি ব্যক্তিরা বিলাসবহুল রিসোর্টটিতে সময় কাটিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে রিসোর্টটিতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে রিসোর্টটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Bangladesh Army

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status