অর্থ-বাণিজ্য
ডলারের বাজারে অস্থিরতার পেছনে একটি গোষ্ঠী রয়েছে: এবিবি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৯ মাস আগে) ২৮ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৯:৫১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
একটি গোষ্ঠীর মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার কারণে ডলারের বাজার অস্থির হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। খাতের সমসাময়িক আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে আস্থার অভাব, অকার্যকারিতা- একই সঙ্গে বাজার অস্থির করে সেখান থেকে কিছু গোষ্ঠীর মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার কারণে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ডলারের বাজার।’ তবে কোন গোষ্ঠী বাজার অস্থির করছে তাদের নাম বলেননি সেলিম হোসেন।
তিনি বলেন, আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার বর্তমানে অচল। এটাকে সচল করতে হবে। চলমান ডলার বাজারের অস্থিরতায় হয়তো কোনো ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। এ জন্য আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে আস্থা বাড়াতে হবে। আন্তব্যাংক লেনদেন ব্যবস্থা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের ক্ষেত্রে চালু করতে পারলে সংকট উত্তরণ সম্ভব হবে।
এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মতো দেশে ডলারের বাজার একেবারে ফ্রি ফ্লোর করা সম্ভব না। কিছুটা ম্যানেজ করতে হবে। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার সচল, আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে ডলারের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে মনে করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এবিবি চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনে জারি করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাস্টার সার্কুলারের ফলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতেও জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের করা নতুন পুনঃতফসিল নীতিমালা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটা কার্যকরী হবে, এখানে ব্যাংক খাতকে ছাড় দেয়া হয়নি।
ঋণ পুনঃতফসিল সব দেশেই হয়।
আগে ঋণ পুনঃতফসিল হতে তিন-চার মাস সময় লাগত। এখন ঋণ পুনঃতফসিল হবে সর্বোচ্চ সাত দিনে। এতে খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি ভালো হবে বলে মনে করেন তিনি।
ঋণ পুনঃতফসিল-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনটি ব্যাংকারদের দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহি করবে। যদি ব্যাংকগুলোয় সুশাসন এবং দক্ষ জনবল থাকে, তাহলে অবশ্যই সেই ব্যাংক এই সার্কুলারের মাধ্যমে ভালো ফলাফল করবে।
যদি ব্যাংকে সুশাসন না থাকে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়েও গভর্নর কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। ১০টা সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের তালিকা করে পরিদর্শন ও তদারকি আরও বাড়ানো হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন গভর্নর। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ নজর রাখতে বলেছেন গভর্নর। অনিয়ম হলে সেখানে শূন্য সহনশীলতা দেখানো হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পুঁজিবাজার দুর্বল হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জন্য ব্যাংকে চাপ বাড়ছে বলে মনে করেন এবিবি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক মূলত স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেয়। সর্বোচ্চ দুই-তিন বছরের জন্য চলতি মূলধন বিতরণ করে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে৷ যেটা মূলত বন্ড মার্কেট বা পুঁজিবাজারে সম্ভব।