প্রথম পাতা
জুুলাই-আগস্টের হত্যা মামলার আসামি যখন উপদেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার
১২ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবারঅন্তর্বর্র্র্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিনের শপথ নেয়ার পরই আলোচনায় এসেছে একটি মামলার নথি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রামপুরা এলাকায় গুলিতে নিহত মো. সোহানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা ওই মামলার এজাহারে নাম আছে শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়ার। আসামির তালিকায় থাকা এই নামের সঙ্গে শপথ নেয়া বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের নাম ও বাবার নামের মিল আছে। মামলার নথি সামনে আসার পর অনেকে প্রশ্ন করছেন, গণহত্যা মামলার এজাহারে নাম থাকা ব্যক্তিকে উপদেষ্টা করা হলো কেন? আর তিনি যদি নির্দোষ হন তালে সেটি স্পষ্ট করা হলো না কেন?
৫৭ জনের নাম পরিচয়সহ ২০০-৩০০ ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি করেছেন নিহত সোহানে মা সুফিয়া বেগম। গত ৭ই অক্টোবর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি হত্যা মামলার আবেদন করেন। সি আর মামলা নম্বর-৯৯। পরবর্তীতে আদালত সেটাকে আমলে নিয়ে রামপুরা থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় রামপুরা থানা পুলিশ গত ১৯শে অক্টোবর মামলা এজাহারভুক্ত করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। মামলা নম্বর-১৮।
ওদিকে গত রোববার নতুন ৩ উপদেষ্টার শপথ গ্রহণের দিন বঙ্গভবনের বাইরে এই উপদেষ্টাদের কাউকে কাউকে নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন কিছু মানুষ। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া একজন আওয়ামী লীগ নেতা। তার বাবা মো. শেখ আকিজ উদ্দিন ভূঁইয়া। বর্তমানে তিনি রাজধানীর বনানী থানা এলাকায় বসবাস করছেন।
মামলায় শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়ার সঙ্গে তার ভাই শেখ আফিল উদ্দিনকেও আসামি করা হয়েছে। আফিল উদ্দিন যশোর-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি। মামলার বিষয়ে রামপুরা থানার ওসি আতাউর রহমান আকন্দ মানবজমিনকে বলেন, মামলায় দুই ভাইয়ের নামই আছে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে যদি তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯শে জুলাই স্থানীয় এমপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ছাত্র আন্দোলনবিরোধী মিছিল নিয়ে রামপুরা সিএনজি স্টেশনের সামনে এসে সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এ সময় নিহত সোহান শাহসহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজন মারা যায়। সোহানের বুকের বাম পাঁজর ভেদ করে ফুসফুসে গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা তাকে রামপুরা ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে গেলে মামলার ১৬ নম্বর আসামি ইমন ফরাজীর নির্দেশে চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। পরে তাকে ঢাকার একাধিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে এসব হাসপাতাল থেকেও উপর মহলের নির্দেশ আছে বলে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়। অনেক চেষ্টার পর পরদিন ২০শে জুলাই সন্ধ্যায় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা আশঙ্কাজনক ও মৃত্যুর শঙ্কা রয়েছে এবং অপারেশন করতে হবে বলে জানান। মা সুফিয়া বেগম বিভিন্ন জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ২০শে আগস্ট রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সিএমএইচে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানায়, সোহানের বুকে বা পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তনালী ও হৃদপিণ্ডের মধ্যে আটকে আছে। পরে অপারেশন করাকালীন গত ২৮শে আগস্ট সোহান মারা যান।
এই হত্যা মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি’র সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ।
মামলার বিষয়ে সোহানের মা সুফিয়া বেগম মানবজমিনকে বলেন, আমার মণি (সোহান) অপারেশন টেবিলে যাওয়ার আগে আমার মাথায় চুমু খেয়ে বলে, মা আমি যাচ্ছি। দোয়া কইরো। সেই যে গেল মণি আর ফিরলো না।
এজাহারের ৪৯ নম্বর আসামি শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়ার নামের বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় যারা উপস্থিত ছিলেন তারা আমাকে বশির উদ্দিন ভূঁইয়া এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন। পরে আমরা প্রকৃত আসামিদের এজাহারভুক্ত করতে সময় নেই।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. ইলতুৎমিশ সওদাগর বলেন, নিহতের মা মামলা করা জন্য লিখিত আবেদন করলে আমরা সেটাকে আদালতে উপস্থাপন করি। পরে আদালত এটাকে এজাহারভুক্ত করে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট রামপুরা থানাকে। তিনি বলেন, শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া মামলার ৪৯ নম্বর আসামি। নিহতের পরিবারে সদস্যরা নামের তালিকা প্রস্তুত করে আমাদের দিলে সেটাকে আদালতে উপস্থাপন করি। এখন তিনি দোষী না নির্দোষ সেটা তদন্ত শেষে আদালতে প্রমাণিত হবে।
এদিকে প্রথম দিনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অফিস শেষে নিজের নামে মামলা প্রসঙ্গে নতুন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, আমি খুব ভালো জানি না। আমাদের লিগ্যাল টিম ব্যাপারটা দেখছে। ওখানে আমার বাবার নামে কিছু অসঙ্গতি আছে। এটা আসলে আমি কিনা সেটা নিশ্চিত জানি না। নিশ্চিত হলে এটা লিগ্যালি ফেস করবো।
তৃতীয় পক্ষ কাজ করছে, এইটা বোঝাই যাচ্ছে। উপদেষ্টা নিয়োগ দুই-একদিন আগে জানাজানি হলে কি সমস্যা? এত গোপনীয়তার কারণ কি এইটাই ?
হতাশ হওয়া ছাড়া আর কি করার আছে।
দেশে অনেক ভালো ব্যবসায়ী নেতা আছে, যেমন এ,কে, খান গ্রুপ, ইস্পাহানি গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ এবং এপেক্স টেনারি গ্রুপ ইত্যাদি। আকিজ গ্রুপের একজন মালিক আওয়ামী মাফিয়া সরকারের সংসদ সদস্য ছিল। আকিজ গ্রুপ থেকে উপদেষ্টা নেয়া ঠিক হয়নি।
আকিজ পরিবারের সদস্যরা সবাই আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা এবং স্বৈরাচার খুনি হাসিনার সহযোগী। কাজেই বশির আহমেদ'কে উপদেষ্টা করার অর্থ, আবু সাঈদ এবং মুগ্ধদের রক্তের সাথে বেইমানি করা।
এত বড় ভুল হয় কিভাবে? জাতি জানতে চায়।
কোন সুযোগ নাই। এখনই উপদেষ্টা থেকে বাদ দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হউক।
সেখ ভুইয়া কেমন কথা। দুই পদবী হয়?
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দেয় কেনা ২৪ এর বাংলাদেশে, স্বৈরাচারী হাসিনার দোসর বাণিজ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই।
স্টুডেন্টস পাওয়ার একবার দেখানো হয়েছে ।আবার কি দেখাতে হবে?