দেশ বিদেশ
ঝিনাইদহ চেম্বারের সাবেক কমিটির ৭০ লাখ টাকার হদিস নেই
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
৩ নভেম্বর ২০২৪, রবিবারঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক কমিটির (নাসির-হিলু-ফোটন প্যানেল) বিরুদ্ধে ৭০ লাখ ১২ হাজার টাকার লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট আড়াল করতে সাবেক কমিটির কথিত নেতারা জেলা প্রশাসক বরাবর ভুয়া অভিযোগে স্মারকলিপি দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন চেম্বারের বর্তমান কমিটির নেতারা। সাবেক কমিটির অর্থ লোপাটের ঘটনায় অডিট করে আপাতত ৭০ লাখ ১২ হাজার টাকার দুর্নীতি পাওয়া গেছে আরও কিছুর অভিযোগে তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। শনিবার (২রা নভেম্বর) ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- পরিচালক মো. আব্দুল মতিন মুক্ত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্সের কনিষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. বকুল বাশার, চেম্বারের পরিচালক মোস্তাকিম মনির, আলমগীর হোসেন আলম, এমএ সামাদ, এএসএম এনায়েত উল্লাহ (নয়ন), মো. মানিক মিয়াসহ আর অনেকেই। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংগঠনটির সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ জেলার ব্যবসায়ীরা সাবেক কমিটির নেতাদের বাধ্যতামূলক এ বছরই গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচন দিতে বাধ্য করি। কমিটির সংবিধান ‘অনুযায়ী চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পন্থায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাণিজ্য সংগঠন আইন-২০২২ অনুযায়ী নির্বাচন থেকে শুরু করে সংগঠনের সকল কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করছি। চেম্বারের বিগত কমিটির পরাজিত (নাসির-হিলু-ফোটন) প্যানেল বিনা কারণে আমাদের নির্বাচিত কমিটিকে হয়রানি করার জন্য নানারকম ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমরা এ সবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তাদের এই ষড়যন্ত্র আমরা প্রতিহত করবো ইনশাআল্লাহ্।’ চেম্বারের বিগত কমিটির দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের বিষয় তুলে ধরে মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘নাসির-হিলু-ফোটন প্যানেল কোনো নির্বাচন না দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন চেম্বারের দায়িত্ব পালন করেছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে বাণিজ্যমেলার রয়্যালটি বাবদ গৃহীত সর্বমোট ১ কোটি ৫ লাখ টাকার পৃথক দু’টি চুক্তি হয়। কিন্তু আয়ের হিসাবে দেখানো হয়েছে মাত্র ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ৭০ লাখ ১২ হাজার টাকার কোনো হদিস নেই।’
এভাবে আরও কয়েক কোটি টাকা এই কমিটি আত্মসাৎ করেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। যা গত ৭ বছরের হিসাব-নিকাশ তদন্ত করলেই বোঝা যাবে।
চেম্বারের সভাপতি আরও বলেন, আগের কমিটি লাখ লাখ টাকার কোনো হিসাব দেয়নি। প্রতি মাসে মাসিক মিটিং করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা কোনো মিটিংই করেনি। কারণ, মাসিক মিটিংয়ে প্রতিমাসের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হয়। পেশিশক্তির জোরে দীর্ঘদিন নির্বাচন না দিয়ে তারা লুটপাট চালিয়েছে। অথচ এখন তারা একটি নির্বাচিত কমিটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের শিক্ষা আমাদের সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। নেতৃত্ব আসবে, নেতৃত্ব চলে যাবে। কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রেখে দুর্নীতি করার মধ্যে আমরা নাই। প্রতি দুই বছর পর পর নিয়মানুযায়ী চেম্বারের নির্বাচন হবে। ব্যবসায়ীরা ভোট না দিলে আমরা পরাজয় মেনে নির্বাচিত কমিটির কাছে ক্ষমতা অর্পণ করবো। আমরা ব্যবসায়ীদের সেবা করতে চায়। নিজেরা দুর্নীতি করে লাভবান হওয়ার জন্য চেম্বারের নেতৃত্বে আসিনি।’