অনলাইন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একটি জটিল প্রক্রিয়া
ডাঃ ওয়াজেদ খান
(৮ মাস আগে) ১৬ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১২:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:০৩ অপরাহ্ন

জর্জ ওয়াশিংটন থেকে জো বাইডেন, যুক্তরাষ্ট্রের ২৩৫ বছরের ইতিহাসে ৫৯টি নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন ৪৬ জন। এদের মধ্যে কেউ কেউ দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। কেউ আবার পূর্ণ করতে পারেননি এক মেয়াদ কালও। আমেরিকানরা এবার তাদের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে যাচ্ছে আগামী ৫ নভেম্বর, মঙ্গলবার। প্রতি চার বছর অন্তর নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের প্রথম সোমবারের পর মঙ্গলবার প্রথা মাফিক অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এই নির্বাচন। জাতীয় এই নির্বাচনে ভোটারগণ প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি গোটা দেশ জুড়ে ১১৯তম ইউএস কংগ্রেসের ৪৩৫ জন হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ এবং ইউএস সিনেটের ১০০ সদস্যের মধ্যে ৩৪ জনকে নির্বাচিত করবে। এছাড়া গভর্নর নির্বাচিত করবে ১১টি রাজ্যে। ডেমোক্র্যাট দলীয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনর্বার প্রার্থীতা ঘোষণা করেন অনেক আগেই। গত জুনে দলটির জাতীয় সম্মেলনে চূড়ান্ত করা হয় তার প্রার্থীতা। পরবর্তীতে বয়োবৃদ্ধ বাইডেন দলীয় চাপে সরে দাঁড়ান নির্বাচনী ময়দান থেকে। গত ৫ আগস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনীত করে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। কমালা হ্যারিসের রানিংমেট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট মিনেসোটা রাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালটজ। পক্ষান্তরে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। আদালত কর্তৃক অভিযুক্ত ও বহুল বিতর্কিত ট্রাম্প ওহাইয়োর সিনেটর জেডি ভেঞ্চকে বেছে নিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ কোটি। তাদের মাঝে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয় দলেরই ভোট ব্যাংকে রয়েছে নিবন্ধিত ভোটার। যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো রাজ্য রয়েছে যেখানে বরাবরই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হন। আবার দেশটির মধ্য পশ্চিমাঞ্চলীয় অপেক্ষাকৃত ছোট রাজ্যগুলোর ভোটারদের পছন্দ রিপাবলিকান পার্টি। যাদের সিংহভাগই শ্বেতাঙ্গ এবং কট্টরপন্থী। এর বাইরে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভেনিয়া ও উইসকনসিন এই সাতটি রাজ্যের ভোটারগণ দোদুল্যমান অবস্থানে। নির্বাচনে এসব রাজ্যের ভোটাররা যে পার্টির দিকে ঝোঁকে বিজয়ী হন সেই পার্টির প্রার্থী। ফলে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা এসব রাজ্যেই অধিকতর মনোনিবেশ করে থাকেন প্রচারণায়। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান শিবিরের প্রার্থীদ্বয় নির্বাচনী প্রচারণায় চষে বেড়াচ্ছেন বিশাল দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের শহরগুলো। বিভিন্ন ইস্যুতে প্রার্থীদের প্রচারণা এখন তুঙ্গে। সর্বশেষ নির্বাচনী জরিপ অনুযায়ী ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে তিন শতাংশ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমালা হ্যারিস। চূড়ান্ত ফলাফলে জয়ী হলে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাস গড়বেন কমালা হ্যারিস।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা: সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে অবশ্যই জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক এবং কমপক্ষে ১৪ বছর আমেরিকায় বসবাসের প্রমাণ থাকতে হবে। বয়স হতে হবে কমপক্ষে ৩৫ বছর। সাংবিধানিকভাবে আমেরিকান সরকার নির্বাহী, আইন ও বিচার এই তিন শাখায় বিভক্ত। পারস্পরিক ভারসাম্য রক্ষাকারী এই তিনটি বিভাগ এমনভাবে গঠিত যে এক বিভাগ অন্য বিভাগের উপর প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করে থাকে যাতে কোনো বিভাগ তার এখতিয়ার বর্হিভূত কোনো কর্মকাণ্ডে ব্যাপৃত না হয়। সরকারের নির্বাহী বিভাগ প্রেসিডেন্ট কর্তৃক পরিচালিত হলেও তা কখনোই খুব দুর্বল বা শক্তিশালী নয়। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাও সাংবিধানিকভাবে সীমিত করে দেয়া আছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একটি জটিল প্রক্রিয়া। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ধাপ মূলত চারটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দলীয়ভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হলেও যুক্তরাষ্ট্রে দলীয় সমর্থকগণই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন ভোটের মাধ্যমে। এই পর্যায়ে একই দল থেকে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনের বছরের শুরুতেই বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে তাদের স্ব স্ব প্রচারণা ও ফান্ড রেইজিং শুরু করেন। অঙ্গরাজ্যর দলীয় রেজিস্ট্রার্ড ভোটারগণ প্রাইমারি ইলেকশনের মাধ্যমে বাছাই করেন একজন দলীয় প্রার্থীকে। পরবর্তীতে তাকে জিতে আসতে হয় সিংহভাগ রাজ্য থেকে। নভেম্বরের নির্বাচনের পূর্বেই গ্রীষ্মের কোনো এক সময়ে অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে যোগদানকারী দলীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ‘ন্যাশনাল কনভেনশন’এ চূড়ান্ত করা হয় প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনয়ন। দ্বিতীয় ধাপ দলীয় কনভেনশন আমেরিকান রাজনীতির একটি উল্লেখযোগ্য দিক। কনভেনশনে নিজ দলের প্রতিনিধিগণ চূড়ান্ত করেন তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। এই কনভেনশন থেকে দলীয় প্রতিনিধিগণ নির্বাচনী প্রচারণা এবং ইস্যুগুলো নির্ধারণ করে থাকেন। তৃতীয় ধাপে গণ-প্রচারণা শুরু হয় কনভেনশনের পরদিন থেকে এবং নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত প্রার্থীগণ ছুটে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। নির্বাচনী সভায় জনগণের সাথে মতবিনিময় করে চেষ্টা করেন তাদের দলীয় কর্মসূচীর প্রতি আনুগত্য লাভের। প্রধান দুই দলের প্রার্থীগণ টিভি বিতর্কে অংশ নেন কয়েক দফা। ফান্ড রেইজ করে থাকেন দলীয়ভাবে। সংগৃহীত এই অর্থকে বলা হয় ‘সফট মানি’। চতুর্থ ধাপে নির্বাচনের দিন জনগণ ভোট দেন তবে সরাসরি প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দেন না। ভোটারগণ প্রথমে ভোট দেন ইলেক্টোরাল কলেজকে। পরে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটারগণ তাদের ভোট প্রয়োগ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন।
নির্বাচনে কারা ভোট দিতে পারেন : আঠারো বছরের ঊধ্বের্র যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলেই ভোট দেয়া যায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। তবে অনেকগুলো স্টেটে আইন রয়েছে যেখানে ভোট দেওয়ার আগে তাদের নিজেদের পরিচয়ের প্রমাণ স্বরূপ কাগজপত্র দেখাতে হয়। বেশিরভাগ ভোটার নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন। পোস্টাল ব্যালট ব্যবহার ও ডাকযোগে ভোট দেয়া যায়। তবে বিকল্প পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে সাম্প্রতিক সময়ে।
আমেরিকানরা কি আসলেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দেন? এক কথায় বলতে গেলে না। ভোটাররা আপাত দৃষ্টিতে যদি মনে করে থাকেন যে তারা তাদের পছন্দনীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন আসলে তা ঠিক নয়। তারা ভোট দেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রতি প্রতিশ্রুত ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্যদেরকে। ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি সত্যিকারার্থেই একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা সাধারণ ভোটারদের নিকট দুর্বোধ্য। আমেরিকায় মোট ইলেক্টোরেটের সংখ্যা ৫৩৮। তন্মধ্যে ৫০ টি অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ৫৩৫ জন এবং ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ৩ জন। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা সম এবং নির্দিষ্ট সিনেট সদস্য সংখ্যার সমান ইলেক্টরেট বাছাই করা হয় । মোট ৫৩৮ জন ইলেকটরাল এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী যিনি ২৭০ ভোট পাবেন তিনিই বিজয়ী হবেন। প্রায় দুশ’ বছর যাবত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চলে আসছে এই পদ্ধতি। এ নিয়ে বিতর্কও হচ্ছে অনেক। এখানে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট একই দল থেকে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এটি এক ধরণের প্যাকেজ ডিল।
পপুলার ভোট: নির্বাচনের দিন সাধারণ ভোটার প্রদত্ত গণনাকৃত মোট ভোটকেই বলা হয় পপুলার ভোট। যে অঙ্গরাজ্যে যে দলের প্রার্থী সবচে’ বেশি ভোট পান সে রাজ্যে ইলেকটরেটগণ ঐ দলের হিসেবে জয়ী হন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, স্ব স্ব প্রার্থীর প্রতিশ্রুত ইলেকটরগণ ইচ্ছে করলে তাদের প্রার্থীকে ভোট নাও দিতে পারেন। যদিও এ ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটে না। তারপরও ১৮৭৬-এর নির্বাচনে রাদারফোর্ড হেইস এবং ১৮৮৮-এর নির্বাচনে বেঞ্জামিন হ্যারিসন কম পপুলার ভোট পেয়ে এভাবে নির্বাচিত হন। সংখ্যাধিক্য পপুলার ভোট পেয়েও নির্বাচনে হেরে যাওয়া নজির রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই পেতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইলেকটরাল ভোট। অর্থাৎ ৫৩৮টি ভোটের মধ্যে ২৭০টি ভোট পেতে হবে। কোনো প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠ পপুলার ভোট পেলেও যদি ইলেকটরাল ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না হয় তাহলে হেরে যাবেন সে প্রার্থী। ২০০০ সালের নির্বাচনে জর্জ বুশের চেয়ে ৫ লাখ পপুলার ভোট বেশি পেয়েও আলগোর ইলেকটরাল ভোটে হেরে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি।
বিজয়ীর দায়িত্বভার গ্রহণ: আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ২০ জানুয়ারি, ২০২৫। যেটি অভিষেক অনুষ্ঠান নামেই বেশি পরিচিত। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের বাইরে হবে এই অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানের পর নতুন প্রেসিডেন্ট যাত্রা করবেন হোয়াইট হাউজের উদ্দেশ্যে এবং গ্রহণ করবেন তার চার বছরের দায়িত্বভার ।
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ও সীমাবদ্ধতা: যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান নির্বাহী প্রেসিডেন্ট সংবিধান ও কংগ্রেস কর্তৃক পাসকৃত আইন প্রয়োগ এবং সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কেবিনেট মন্ত্রীসহ সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। প্রধান আইন প্রণেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসে পাসকৃত বিলে যেমন ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতা রাখেন, তেমনি বিল পাস করার ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে করতে পারেন প্রভাবিত। কিন্তু দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে আবার তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে কংগ্রেস। প্রেসিডেন্ট আমেরিকার প্রধান ডিপ্লোম্যাট এবং পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারক, বৈদেশিক চুক্তির মধ্যস্থতাকারী। কংগ্রেসের অনুমোদন সাপেক্ষে বিদেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের অধিকারী তিনি। প্রেসিডেন্ট আর্মী, নেভি, এয়ারফোর্স ও মেরিনের প্রধান-কমান্ডার ইন চীফ। তিনি নিয়োগ প্রদান করেন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের। দেশের ভেতরে ও বাইরে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাতে পারলেও আন্তর্জাতিক কোনো সংঘর্ষের ক্ষেত্রে কংগ্রেস কর্তৃক আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা ব্যতিরেকে ৯০ দিনের অধিক তা বহাল রাখতে পারবেন না তিনি। চীফ অব স্টেট হিসেবে প্রেসিডেন্ট দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
প্রেসিডেন্টের বেতনভাতা: প্রেসিডেন্টের বেতন বার্ষিক বেতন ৪ লাখ ডলার ও অতিরিক্ত ভাতা ৬০ হাজার ডলার (ট্যাক্স কর্তনযোগ্য), ভ্রমণ ও আপায়্যান ভাতা ১ লাখ ডলার (ট্যাক্স ফ্রি) পেয়ে থাকেন।
হোয়াইট হাউস: আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হচ্ছে হোয়াইট হাউস। প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের সরকারি বাসভবন ছিল পেনসিলভেনিয়ায়। জর্জ ওয়াশিংটনই প্রথমে প্রেসিডেন্টের জন্য স্থায়ী একটি ভবন তৈরির উদ্যোগ নেন এবং ১৭৯০ সালে হোয়াইট হাউস নামে ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন এই ভবনের। ওয়াশিংটন ডিসি’র পটোম্যাক নদীর ১০ বর্গ মাইলের মধ্যে অবস্থিত এই ভবনে ১৮০০ সালে আমেরিকার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডমস এবং তার স্ত্রী অ্যাবিগেল অ্যাডমস প্রথম বসবাস শুরু করেন। হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন ক্ষমতাসীন অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনজন প্রেসিডেন্ট। তন্মধ্যে প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লীভল্যান্ডের বিয়ের অনুষ্ঠান শুধু হোয়াইট হাউসে হয়। দু’বার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা পায় হোয়াইট হাউস। সময়ের ব্যবধানে অনেক পরিবর্তন হয়েছে হোয়াইট হাউসের আঙ্গিকে। ৬ তলা বিশিষ্ট হোয়াইট হাউসে মোট ১৩২টি কক্ষ রয়েছে। হোয়াইট হাউসে ১৮৪৫ সালে ক্যামেরায় প্রথম ছবি তোলা হয় প্রেসিডেন্ট জেমস পুলকের। হোয়াইট হাউস আঙ্গিনায় প্রথম মটরযানে আরোহন করেন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট (১৯০১-১৯০৯)। প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট (১৯৩৩-১৯৪৫) প্রথম উড়োজাহাজে চড়ে পানাম সফরে যান। হোয়াইট হাউসের পশ্চিমাংশে ডিম্বাকৃতির কক্ষটি হচ্ছে ওভাল অফিস। ১৯০৯ সালে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হাওয়ার্ডের সময় থেকে ওভাল অফিস প্রেসিডেন্টের প্রধান সরকারী দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রায় শতাধিক বিভাগে সামরিক ও বেসামরিক মিলে প্রায় ৩০ লাখ কর্মকর্তা প্রেসিডেন্টের অধীনে কর্মরত।
--

লেখক: সম্পাদক সাপ্তাহিক বাংলাদেশ নিউইয়র্ক।
পাঠকের মতামত
আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নিয়ে কী লাভ - নিজের ঘর ঠিক করি আগে.......