দেশ বিদেশ
তামিম হত্যায় আরও একজন গ্রেপ্তার, স্বজনদের মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার
১৩ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার
রাজধানীর হাতিরঝিলে বেসরকারি টেলিভিশন দীপ্ত টিভি’র সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম তামিম (৩৪) হত্যার ঘটনায় রাসেল নামের আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোর ৫টার দিকে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলমকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো- আব্দুল লতিফ (৪৬), কুরবান আলী (২৪), মাহিন (১৮), মোজাম্মেল হক কবির (৫২) ও বাঁধন (২০)।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রুহুল কবির খান বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাসেলকে শনাক্ত করা হয়। সে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে প্লিজেন্ট প্রোপার্টির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ রবিউল আলমকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে তামিমকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রাণের নিরাপত্তা চাই, ঘাতক প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজের অনুমোদন বাতিল চাই, তামিম হত্যার বিচার চাইসহ বিভিন্ন দাবি লিখে প্ল্যাকার্ড প্রদশন করা হয়। মানববন্ধনে তামিমের মা খুরশিদা বেগম বলেন, আমার ছেলেটা অনেক নিরীহ ছিল। আমার ছেলে কোনোদিন কারও সঙ্গে কোনো বেয়াদবি করে নাই। সবাইরে সালাম দিয়ে কথা বলছে। আমার ছেলেটা যাওয়া মাত্রই তাকে মেরে ফেলেছে। এমন মারা মারছে ছেলেটা এসে বলতেছে, মা আমার বুকটা ব্যথা করে। হাসপাতালে নিতে নিতে শেষ। আমার সন্তানকে সন্ত্রাসী বানাই নাই, মানুষ বানাইছি। লেখাপড়া শিখাইছি। কেউ বলতে পারবে না আমার সন্তান কোনো খারাপ কাজে জড়িত। ঘটনার মূলে রয়েছে রুবেল শেখ, মামুন, কবির এরা ষড়যন্ত্র করে আমার সন্তানকে মারার জন্য এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমার বুকটা জ্বলতাছে। আমার বাচ্চাটারে কেমন কইরা মারলো। একটা মানুষকে এমনে মারে? রবিউল, মামুনের কাছে একটা প্রশ্ন- আমার বাচ্চাটাকে মাইরা ওদের কী লাভ হইছে? আমার বুকটা খালি করে দিছে। আমরা কোনোদিন অন্যায়ভাবে কিছু করি নাই। আমরা শতভাগ ঠিক আছি। আমার সন্তানটারে যারা ষড়যন্ত্র করে হত্যা করছে আল্লাহ তুমি তাদের বিচার করো। আমি ড. ইউনূসসহ সব উপদেষ্টার কাছে আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। মানববন্ধনে তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ, বড় ভাই শামভিল জাহান ইসলামসহ পরিবারের অন্য সদস্য, সহকর্মী, সহপাঠীরা অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার হাতিরঝিল সংলগ্ন আবাসিক এলাকা মহানগর প্রজেক্টে নিজ বাসায় তামিমকে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি পিটিয়ে হত্যা করে। তিনি দীপ্ত টিভি’র সম্প্রচার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তামিমদের জমিতে নির্মাণাধীন ভবনে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় বিএনপি নেতা রবিউল আলম রবি ও মামুনসহ ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।