দেশ বিদেশ
কোরিয়া অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে প্রস্তুত: রাষ্ট্রদূত
মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবারভিসা সহজীকরণ, কাস্টমস হাউজে অহেতুক হয়রানি বন্ধ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত এবং কল-কারখানার নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক। ঢাকার সঙ্গে সিউলের বিদ্যমান সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত হওয়ার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যবসা-বান্ধব, পূর্বাভাসযোগ্য এবং স্থিতিশীল কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড) পরিদর্শনকালে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল ডিকাব সদস্যদের কেইপিজেড অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ সার্বিক কর্ম-পরিবেশ সরজমিন দেখানো হয়। সেখানে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে তার দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশে আরও উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোরিয়া ঢাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে প্রস্তুত, যেমনটি আমরা ইতিমধ্যে গার্মেন্ট সেক্টরে করেছি। রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে বন্ধু রাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু পরামর্শ দিতেও আগ্রহী। গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশের ৫ শতাংশ হারে স্থিতিশীল বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক দেশটির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাও তুলে ধরেন। তিনি আশা করে বলেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের আসন্ন উত্তরণ টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশি পুঁজি আকর্ষণে সহায়তা করবে। রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সংক্রান্ত চলমান আলোচনার তাৎপর্যও তুলে ধরেন। এই ইপিএ কোরিয়া বর্তমানে বাংলাদেশকে যে জেনারেলাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা প্রদান করছে তা শুধু প্রসারিত করবে না বরং পারস্পরিক সুবিধার জন্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল, কোরীয় সরকারের কাছ থেকে সফট লোন বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মেকানিজমের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে। কোরীয় দূতাবাস আশা করে যে, চলমান প্রকল্পগুলোর মসৃণ অগ্রগতি হবে এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে। তিনি আরও বলেন, উভয় দেশ পাদুকা, হালকা শিল্প, আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ নির্মাণ, নীল অর্থনীতি এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা, কৃষি ও কৃষি যন্ত্রপাতি, গ্রিন হাউস এবং কার্বন ট্রেডিং প্রকল্পের মতো নতুন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা এগিয়ে নিতে পারে। রাষ্ট্রদূত বলেন, কোরীয় কোম্পানির নতুন প্রযুক্তি রয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোকপাত করে কেইপিজেডের সভাপতি জাহাঙ্গীর সাদাত এবং ডিকাব প্রেসিডেন্ট নুরুল ইসলাম হাসিব অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।