অর্থ-বাণিজ্য
বাণিজ্য উপদেষ্টা
এক গ্রুপ যাওয়ার পর আরেক গ্রুপ চাঁদা দাবি করেছে
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ মাস আগে) ১৮ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ৫:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন
এক গ্রুপ চলে গেলে আরেক গ্রুপ এসে আবার চাঁদা দাবি করেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে কী ভূমিকা রাখবেন জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, কাওরান বাজারেই একটা পণ্য চারবার হাতবদল হয়, তাই না। এগুলো প্রিজামপটিভ মানি, তুমি এত টাকায় বিক্রি করলে এত টাকা পাবে। এভাবে টাকা আদায় করা হয়। এগুলো বন্ধ করতে হবে। চাঁদাবাজি হয়, একটা ট্রাক ঢাকা পর্যন্ত আসতে সাত হাজার টাকা লাগে, কেউ একজন আমাকে বলেছিলেন। তবে এটা কিন্তু বাণিজ্য কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব না। এটা যাদের দায়িত্ব, তাদের সঙ্গে কথা বলবো।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অনেকে আত্মগোপনে গেছে। নতুন করে চাঁদাবাজ তৈরি হবে না, সেই নিশ্চয়তা কী, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে অনেক প্রতিবেদন আসছে। চাল কিনবে চাতাল থেকে, এক গ্রুপ নিয়ে চলে গেছে, আরেক গ্রুপ এসে আবার চাঁদা দাবি করেছে। তখন আমি বলেছি, তাৎক্ষণিকভাবে ডেপুটি কমিশনারকে বলো, খোঁজ-খবর নিতে, যাতে ভালো ব্যবসায়ীরা বাধাপ্রাপ্ত না হয়। আমি জানি, এক গোষ্ঠী গেলে, নতুন আরেক গোষ্ঠী আসবে।ট্রেডিং
কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা, প্রশ্নে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে খোলা বাজারে কিছু বিক্রি করতে হবে। তবে সবকিছু একদিনে প্রত্যাশা করতে না বলেছেন এই উপদেষ্টা। তিনি বলেন, হঠাৎ করে সবকিছু বন্ধ করে দিলে নিষ্পাপ লোকজন ভুক্তভোগী হবেন।
এসময়ে এক কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে টিসিবির ডিস্ট্রিবিউশন স্থগিত আছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটা চালু করা হবে।
এদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের দেশীয় প্রধান এডিমন গিনটিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি উৎপাদন ও সরবরাহের সঙ্গে সম্পর্কিত। দেশে কোনো পণ্যের উৎপাদন কম হলে যতটা সম্ভব আমদানি করতে হবে। সাধারণ মানুষ যেন চাপে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে কী কী করা দরকার, সরকার সে বিষয়ে সজাগ আছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে সরকারি কর্মচারীরা রেশন চাইলে কী করা হবে এবং এ ক্ষেত্রে বেসরকারি চাকরিজীবীদের কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তার কাছে সবাই সমান। সবাই যেন শোভনভাবে জীবন যাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে। আমদানির বিষয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বলা হয়, অনেক ক্ষেত্রে তা আমদানিবাহিত। এ বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যতটা সম্ভব, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হবে। দুর্নীতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে। মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বাণিজ্যের বড় ভূমিকা আছে। ফলে এসব ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা করা হবে।
মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য সংগঠনগুলোর সঙ্গে শিগগিরই বৈঠক করে বিদ্যমান সমস্যা দূর করার চেষ্টা করা হবে বলে জানান অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা। বাণিজ্য সংগঠনগুলোর বড় ভূমিকা আছে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের তিনি আশ্বস্ত করেন, ‘বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কী হয়, সে বিষয়ে আমার ধারণা আছে। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকেন, এ বিষয়ে যা করা দরকার, আমরা তা করব।’
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘চলমান যেসব প্রকল্প যৌক্তিক, সেগুলো চালিয়ে নেয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। সেই সঙ্গে পাইপলাইনে যেসব প্রকল্প আছে বা ভবিষ্যতে আরও যেসব প্রকল্প নেয়া হবে, সেখানে তারা সহায়তা করবে। তারা ইতিবাচক। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যিনি এসেছেন, তাকে আমরা জানি; আমরা জানি কী করতে হবে।’