খেলা
ফুটবলে থাকছে না শেখ রাসেল
বেকায়দায় প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের আরও চার ক্লাব
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৬ আগস্ট ২০২৪, শুক্রবার
দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে প্রিমিয়ার লীগের দল বদলের সময় বাড়াতে ফিফার কাছে আবেদন করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কিন্তু বুধবার বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে জানানো হয়, দল বদলের সময় বাড়াতে পারবে না। তাতে ১৯শে আগস্টই শেষ হচ্ছে প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের দল বদল। এই অবস্থায় বেকায়দায় পড়েছে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স, ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স এবং ব্রাদার্স ইউনিয়নের মতো ক্লাবগুলো। আর্থিক কারণে দল গড়তে পারছে না এসব ক্লাবগুলো। ক্লাব কর্তারা পলাতক থাকায় গভীর সংকটে আছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আবাহনীও। তবে দেশের ফুটবলের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের প্রিমিয়ার লীগে অংশ না নেয়ার খবরটি। দল গুছিয়ে আনার পরেও সরকারের পটপরিবর্তনে ফুটবল থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে ক্লাবটি। শুধু শেখ রাসেলই নয়, শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবেরও লীগে অংশ নেয়াটা অনিশ্চিত। দু’টি ক্লাবকে এতদিন ধরে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সরকার পরিবর্তনের পর এই গ্রুপটিও এখন শেখ জামাল ও শেখ রাসেলকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তাতে করে দেশের অন্যতম দু’টি শক্তিশালী ক্লাবের ফুটবলাররা পড়ে গেছেন মহাসংকটে। খেলোয়াড়দের নতুন ক্লাব খুঁজে নেয়ার নির্দেশ দিলেও এই কয়েকদিনে ঠিকানা বদল করাটাও কঠিন তাদের জন্য।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ক্লাবটি। সেখানে আছে ট্রেনিং গ্রাউন্ড। আর ধানমণ্ডিতে অবস্থিত শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই ক্লাবটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। নতুন মৌসুমের জন্য শেখ জামাল দলও গুছিয়ে ফেলে। শেখ রাসেলও ঘর গোছানোর কাজটি প্রায় সম্পন্ন করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বসুন্ধরার নিয়ন্ত্রণে থাকা দু’টি ক্লাবকে নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। এরইমধ্যে শেখ রাসেল আসন্ন লীগে খেলবে না বলে ফুটবলারদের জানিয়ে দিয়েছে। শেখ জামালের একটি সূত্র না খেলার বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও যেহেতু এই ক্লাবটিও বসুন্ধরার গ্রুপের অধীনে, তাতে ধরে নেয়া যায়, প্রিমিয়ার লীগের সাবেক চ্যাম্পিয়নদের দেখা যাবে না নতুন মৌসুমে। দল বদল পেছানোর জন্য বেশি অনুরোধ ছিল নতুন দুই ক্লাব ঢাকা ওয়ান্ডারার্স এবং ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের। এখন বাফুফের অনুরোধ ফিফা প্রত্যাখ্যান করায় ব্যাকফুটে চলে গেছে ওয়ান্ডারার্স। দলটির সভাপতি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় বর্তমানে চলে গেছেন আড়ালে। দেখভাল করছেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। লীগে খেলবে কি খেলবে না ওয়ান্ডারার্স তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছেন না তিনি। এদিকে কষ্ট হলেও ১৮ কিংবা ১৯শে আগস্ট দল বদল করতে চায় ফকিরাপুল। ১৬ই আগস্ট ক্যাম্প শুরুর চিন্তা করছেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান মাইনু। গত মৌসুমে অবনমন হলেও নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তে প্রিমিয়ারে টিকে যাওয়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবও দেশি কিংবা বিদেশি কোনো ফুটবলার নিবন্ধন করেনি। মঙ্গলবার ফুটবলার নিবন্ধনের ফরম বাফুফে থেকে পেয়েছে ক্লাবটি। তবে এই কয়েকদিনের মধ্যে দল গুছিয়ে দল বদল কার্যক্রম করতে চায় ব্রাদার্স। এদিকে ছয় বারের লীগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনীও আছে বেকায়দায়। সরকারের পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর করেছে আবাহনীতে। ক্লাবটির অনেক অর্জনের সাক্ষী বহন করা ট্রফি ও স্মারক নিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ক্লাবের সাবেক কিছু খেলোয়াড় একাট্টা হয়েছিলেন ক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানে ছিলেন না ক্লাবটির বড় কোনো কর্মকর্তা। ক্লাবটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ কাজী নাবিল আহমেদ আছেন আত্মগোপনে। ক্লাবটির অন্য কর্মকর্তারাও ক্লাবে আসছেন না। এই অবস্থায়ে দল বদলে আবাহনী অংশ নিতে পারবে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না।