অনলাইন
ইকোনমিস্টের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন এবং...
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ মাস আগে) ২৭ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:২১ পূর্বাহ্ন
চলতি মাসে বাংলাদেশে যে সংকট দেখা দিয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে নজিরবিহীন ঘটনা। সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামার জেরে এর সূত্রপাত হয়। তারা পুলিশ এবং ক্ষমতাসিন দলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং রাজধানী ঢাকার রাস্তার নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয়। তারা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন) -তেও হামলা করে, যখন সহিংসতা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রায় অর্ধেক জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। জবাবে সরকার সশস্ত্র সৈন্য পাঠায় এবং ২০ জুলাই থেকে দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশের পাশাপাশি দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে।
২৩শে জুলাই আংশিক পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবাগুলোও বন্ধ করে দেয় সরকার । বিশ্ব থেকে দেশের ১৭১ মিলিয়ন মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ততক্ষণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপগুলো ঢাকার বিক্ষোভকে অনেকটাই শান্ত করে এনেছে। প্রতিদিন দুই ঘণ্টার জন্য সাধারণ মানুষকে বাইরে বেরোনোর ছাড়পত্র দেয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় কাজ সারার জন্য। তবুও গত কয়েকদিনে প্রায় ২০০ জন বিক্ষোভকারী এবং তাদের সমর্থনকারী নিহত হয়েছে (সম্ভবত আরও বেশি) এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে, হিসাবটা হয়তো এমন যা সামনে আনার মানসিকতা শেখ হাসিনার নেই।
১৫ বছরের নিরবচ্ছিন্ন শাসনের মধ্যে এটি তার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। সাম্প্রতিক দিনের সহিংসতার জন্য কর্তৃপক্ষ কমপক্ষে ৬১,০০০ জনকে অভিযুক্ত করেছে, যার মধ্যে অনেকেই বিরোধী দলের। যাদের শেখ হাসিনা সর্বদা দেশে যা কিছু ঘটে তার জন্য দায়ী করে এসেছেন। এমনকি আন্দোলনের উপর এই ক্র্যাকডাউন অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেললেও, প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ‘অপরাধীদের’ বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রতিশোধের আহ্বান জানিয়েছেন। সঙ্কটের মধ্যে তার প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং আপসহীন প্রতিক্রিয়া জনগণের মধ্যে ভুল ধারণার জন্ম দেয়। ক্ষমতার উপর তার দখল নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক করে ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগটি প্রথম সামনে আসে জুন মাসে, যখন হাইকোর্ট ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারি চাকরির ৩০% আলাদা করে রেখে দীর্ঘদিনের কোটা ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।
একবার বিবেচনা করুন যে, ক্ষমতাসিন দল আওয়ামী লীগের (আ.লীগ) শিকড় স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে প্রোথিত এবং শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ( যিনি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ১৯৭৫ সালে তাকে হত্যার আগ পর্যন্ত নতুন দেশের নেতা ছিলেন) কন্যা হওয়ার জন্য অনেক কিছুই করেছেন।
এর অর্থ হলো কোটা আওয়ামী লীগের সদস্যদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছিল । যেখানে দুই-পঞ্চমাংশ তরুণ বাংলাদেশিদের নিয়মিত কর্মসংস্থান নেই, সেখানে এই কোটা ব্যবস্থা তাদের স্নায়ুতে আঘাত করে। প্রায় ৪ লাখ স্নাতকদের ইতিমধ্যেই একটি অনিশ্চিত কর্মসংস্থানের বাজারে মাত্র ৩০০০ সরকারি চাকরির জন্য প্রতি বছর প্রতিযোগিতা করতে হয়। অন্ততপক্ষে সরকার একটা ভালো কাজ করেছিল যে, তাড়াহুড়ো করে দেশের শীর্ষ আদালতকে নিম্ন আদালতের রায়কে বাতিল করতে বলা। ২১শে জুলাই সুপ্রিম কোর্ট কোটা কমিয়ে ৭% করেছে। তবে কোটা পদ্ধতির চেয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ অনেক বেশি। একজন শিক্ষিত তরুণ বাংলাদেশির জন্য প্রায় প্রতিটি চাকরির সুযোগ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে পুলিশ সদস্য থেকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি পর্যন্ত, আওয়ামী লীগের মাধ্যমে চলে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং রাজপথে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি পেটোয়া বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে স্নাতকদের কক্ষ বিতরণও তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকেই এই সংগঠনকে ভেঙে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু সেটি কখনো হবার নয়।
শেখ হাসিনার শাসনের স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা নেই। বিগত ১৫বছরে তিনি বড় ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন, কিন্তু একইসঙ্গে নির্বাচনে কারচুপি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ক্ষুণ্ন করা এবং আওয়ামী লীগ ও এর ব্যবসায়িক বন্ধুদের মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতির সভাপতিত্ব করার অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি । এখন যারা তার শাসনের সমালোচনা করে তাদের প্রতি হাসিনার প্রতিক্রিয়া হলো, তাদের ‘রাজাকার’ হিসেবে অভিযুক্ত করা -১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সহযোগী। এটাই বোঝায় যে, ৭৬ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী বাস্তবতা থেকে কতটা দূরে রয়েছেন। এমনকি মিত্ররাও গোপনে স্বীকার করেছেন যে, তিনি ভুল করছেন। তারপরও কোনো মন্ত্রী তার মুখের ওপর কথা বলার সাহস পান না। এর অর্থ হলো ক্ষমতাসিন দলের অবক্ষয় টিয়ার গ্যাসের দুর্গন্ধের মতো তীব্র হচ্ছে। আ.লীগ আপাতত টিকে থাকবে, এমনকি সরকার-সংশ্লিষ্ট সহিংসতার রিপোর্ট বাড়ার পরেও। দলের একজন অভ্যন্তরীণ ব্যক্তি বলেছেন, আ.লীগ ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ দেশের সেবা করা থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে। আর তাই আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার জন্য সংকটের দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি বিপর্যয়কর প্রমাণিত হতে পারে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে প্রবন্ধ প্রবন্ধ টা একবার পড়ে দেখার অনুরোধ করছি
ধন্যবাদ সঠিক কথাগুলো তুলে ধরার জন্য।
একাটা যেৌক্তিক আন্দোলনে এভাবে গুলি করে মানুষ মারার জন্য দেশটা স্বাধীন করা হয়নি। স্বাধীনদেশে এভাবে ভাই হয়ে ভাইয়ের বুকে গুলি চালাবে এটা মেনে নেয়া যায় না।
সুসঠু,গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হচ্ছেনা প্রায় ১৫ বছর-তাই সংকটগুলো দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে।যতদিন সুসঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার রদবদল হবেনা,ততদিন বাংলাদেশের অসন্তোষ,বিশৃংখলার অবসান হবেনা
স্বাধীন দেশে জন্ম গ্রহন করে পরাধীন ভাবে জীবন যাপন করা
এ লেখায় অনেক কথার ফাঁকে ফাঁকে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় ও সুকৌশলে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের বিরুদ্ধে নানা বিষয় ও নানা কথা তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু যেসব সন্ত্রসী-জঙ্গীরা ভয়াবহ ও ভয়ঙ্করভাবে ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড ও তাণ্ডব চালিয়ে দেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে, তাদের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। একই সাথে যারা এসব ভয়ঙ্কর তাণ্ডবে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়েছে, সেসব ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলের ব্যাপারেও কোন বক্তব্য নেই। অর্থাৎ এ লেখার মাধ্যমে সন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করা হয়েছে। এখানে লেখক সম্পূর্ণভাবে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে তার ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরেছেন।
কোন কিছু বলার ভাষা বা ক্ষমতা নেই, আজ আমরা বোবা, বধির, কেবল দাসের মত আছি, 1984 এর মত এ দেশ চলছে
ইকোনমিস্টের এ লেখাটি পক্ষপাত দুষ্ট। নিরপেক্ষভাবে ঘটনার বিশ্লেষণ না করে এক পক্ষীয় মন্তব্যের পর মন্তব্য করা হয়েছে। লেখার ফাঁকে ফাঁকে ঠাণ্ডা মাথায় ও সুকৌশলে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এ লেখায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের ভয়াবহ, ভয়ংকর সন্ত্রাস ও তাণ্ডবে একটি দেশে ও জনগণের সম্পদ কিভাবে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ধ্বংস করা হলো তার কোন বিবরণ নেই। একই সাথে এ ধ্বংসযজ্ঞে যারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সহযোগিতা করেছে, সেসব ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলের ব্যাপারেও কোন কথা নেই। এ লেখার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে জঘন্য অপরাধকে সমর্থন করা হয়েছে। যিনি লেখক তিনি সম্পূর্ণভাবে তার নিজের পক্ষপাতদুষ্ট মতামত তুলে ধরেছেন।
Porlam ,bujlam, nejer Moner moddhe raklam, onnoder moto motamot dite parlamna, perdon me
Reality
সেই লাইন টা বাদ দেওয়া হলো ক্যানো ?
গঠনমূলক সমালোচনা। দেশি-বিদেশি বহু মোড়লের খায়েশ, বিবাদটা লেগে থাকুক। দেশের অবস্থান যত দুর্বল হবে,তত তাদের দেনদরবার ও ব্যবসা করতে সুবিধা হবে। বাংলাদেশ যেন সেই সর্বনাশের দিকে পা না দেয়। আমাদের সন্তানদের ভুল শুদ্ধ আমরা বুঝতে হবে, অন্য কেউ নয়।
এ রকম অস্থির বাংলাদেশ আমরা চাই না।যেখানে ভাই হয়ে ভাইয়ের বুকে গুলি চালাবে।
আজ মনেহয় বেচে থাকা অর্থহীন, আমাদের তরুণরা জীবন দিছে...
আমার প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের কোণ শেক্টর কি দুর্নীতি মুক্ত? একটা সেক্টরের নাম বলুন যে সেক্টরে দুর্নীতি নাই। ক্ষমতা কেউ ছাড়তে চায় না। ছাত্রলীগের পদ পাবার জন্য ৮ বছরে একটা ছাত্র পাশ করতে পারে না। আল্টিমেটলি কোন মেধা কি রাজনীতিতে সক্রিয়? দেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নামক ডিপার্টমেন্ট আছে, সেই সচ ছাত্রদের কাজ কি? কয়জন মন্ত্রীর ডক্টরেড আছে? কয়জন এমপি কন্সটিটিউশন পুরোটা জানে? কয়জন এমপির ছেলে ছাত্রলীফ, যুবলীগ এর নেতা। কয়টা মন্ত্রীর ছেলে দেশে পড়াশুনা করে?
এ রকম অস্থির বাংলাদেশ আমরা চাই না।যেখানে ভাই হয়ে ভাইয়ের বুকে গুলি চালাবে।
মূলতঃ দেশে একটি পরিষ্কার বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আহত,নিহত ছাত্র জনতার সংখ্যা কত? আহত,নিহত ছাত্র, জনতার কথা কেউই কি ভাবছেন? তাদের অপরাধ কি? কেন তাদের কে হত্যা করা হলো? আহত করা হলো?
ঝড় উঠলে কাক নাকি চোখ বুঝে থাকে । সে ভাবে চোখ বুঝে থাকলে থাকলে ঝড় তাকে স্পর্শ করবে না । বর্তমান ক্ষমতাসীন রা এই কাক ঘোরের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ।
ক্ষমতাসিন দলের অবক্ষয় টিয়ার গ্যাসের দুর্গন্ধের মতো তীব্র হচ্ছে। ১০০% সত্য।
"ক্ষমতাসীন দলের অবক্ষয় টিয়ার গ্যাসের দুর্গন্ধের মতো তীব্র হচ্ছে!"
সত্য প্রতিষ্ঠা করতে দুই শ্রেণীর লোক লাগে এক যে সত্যি বলতে পারে দুই যে সত্য শুনতে পারে। ইকোনোমিস্ট সত্য বলতে পেরেছে, ভারতীয় কিছু বুদ্ধিজীবী কিছু এক্টিভিস্ট কিছু সংবাদ ম্যাধ্মম সত্য বলতে পেরেছে। সরকার সেটা শুনবে না আর তাই সত্য প্রতিষ্টা পাবে না। হয়তো আরও অনেক জীবন নেবার পর কোনো একদিন সত্য সামনে আসবে ? তা কত জীবনের বিনিময়ে আমরা জানি না।
Shortly a good discussion.....
অত্যন্ত সুন্দর গোছালো আলোচনা।