দেশ বিদেশ
পথশিশুদের অন্যরকম দিন
তানিয়া মোমিন খান
২৫ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবারপুরো শহর জুড়ে নীরবতা। পথ-ঘাট শূন্য। পথশিশুরা রাস্তায় এলোপাতাড়ে ছুটোছুটি করছে। গত কয়েকদিন ধরে এমন চিত্রই দেখা যাচ্ছে ফার্মগেটে। ফুটপাথে তাদের দৌড়ঝাঁপ দেখে জিজ্ঞাসা করলাম কমলা নামে এক শিশুকে কেমন লাগছে? হাসতে হাসতে বললো, খুব খুশি লাগছে আগে রাস্তায় খেলতে পারতাম না। এখন ইচ্ছামতো ফুটপাথ দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছি কেউ কিছু বলে না। হাতে বিস্কুট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মরজিনা বললো মা কাজে গেছে, সারাদিন ধরে ফুটপাথে কতো রকম খেলা যে খেললাম আগে কাওরান বাজারে গুদামে বসে খেলতাম। মানুষের ভিড়ে মনের মতো করে খেলতে পারতাম না। সাত বছরের ময়না দৌড়ে এসে বললো এমন যদি সবসময় থাকতো কতোই না মজা হতো! অপর দিকে দম বন্ধ অবস্থা ফ্ল্যাটে থাকা শিশুদের, যাদের সময় কাটে মোবাইলে গেম খেলে। তাদেরও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। দুই বছরের শিশু মিম তাকে কিছুই খাওয়ানো যচ্ছে না। মা বলেন মোবাইলে গেম খেলে খেলে ওকে খাওয়াই এখন যে কি বিপদে পড়েছি। দিনহামের মা জানান, গত কয়েকদিন ধরে বাচ্চা কিছুই মুখে দিচ্ছে না শুধু মোবাইল হাতে নিয়ে কাঁদছে। পাঁচ বছরের আরহাম উপায় না পেয়ে নানিকে বার বার ফোন দিচ্ছে নেট এনে দাও তা না হলে আমি কিছু খাবো না। স্কুল পড়ুয়া শিশুদের অবস্থা আরও বেহাল। সময় কাটছে নিঃসঙ্গ অলসতায়। ষাণ্মাসিক পরীক্ষা চলছিল অনেকের। ব্যস্ত সময় কাটছিল তাদের। হঠাৎ স্থগিত। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফাতিমা জানায়, সারাদিন অলস সময় কাটছে, ইন্টারনেট নেই, নেটওয়ার্কও থাকে না তাই সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। ৬ষ্ঠ শ্রেণির বৃষ্টি বলে, সারাদিন ঘুমিয়েই দিন কেটে যায়, পরীক্ষা কবে হবে জানি না। ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া বৃন্দা বলেন, প্রজেক্টে অনেক কাজ বাকি আছে। মনে হচ্ছে আমি যেন সব ভুলে যাচ্ছি, মানসিক চাপ অনুভব করছি। এমবিএ’র ছাত্রী তারিন জানায়, সত্যি ভাবতে অবাক লাগে ডিজিটাল বাংলাদেশে নেট নেই।