ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫ রজব ১৪৪৬ হিঃ

রাজনীতি

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ২২ ছাত্র সংগঠনের যৌথ প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার

(৬ মাস আগে) ১৭ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ২২ ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্দোলনরত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ক্যাডাররা সশস্ত্র হামলা চালায়। ছাত্রলীগ নামক হায়েনাদের বর্বর হামলায় নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত এবং প্রায় ৬ জন নিহত হয়! আওয়ামী লীগ নেতাদের হুকুমে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম ও সাধারণ সম্পাদক ইনানের নেতৃত্বে এ নৃশংস হামলা চালানো হয়। নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক এ হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে দেশবাসী চরমভাবে সংক্ষুব্ধ।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “বর্তমান অবৈধ প্রধানমনন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে না নিয়ে উল্টো তাদের অকথ্য ভাষায় বিদ্রুপ করে। কোটা সংস্কারের গণতান্ত্রিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য করলে আন্দোলনরত ছাত্রসমাজ আরও সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে আসলে ছাত্রলীগ নামক অছাত্র ও সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। আমরা লক্ষ করছি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চলাকালে পুলিশ অজানা কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে। এমনকি হতাহত সাধারণ শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
এদিকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে দেশের ছাত্রসমাজ পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা কাপুরুষোচিত হামলা চালায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতের অন্ধকারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী লাঠিসোটা, রড, চাপাতি, রামদা নিয়ে হামলা করে। নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীরা ভিসির কাছে নিরাপত্তা চাইতে গেলে সেখানেও নরপশুরা হামলা চালায়। মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ ও এলোপাতাড়ি গুলিতে  নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হন। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে সন্ত্রাসীরা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ছাত্রলীগ ও পুলিশের গুলিতে প্রায় ৬ শিক্ষার্থী নিহত হয়।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের কাছে ছাত্রসমাজ মাথা নত করবে না। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রসমাজ এদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে হামলাকারী চিহ্নিত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে। সেইসাথে পুলিশ প্রশাসনকে জনগণের কাতারে এসে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ক্যাম্পাসে ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে উদ্ভূত পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।  
অন্যথায় ছাত্রলীগের এহেন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। আর এমন কিছু হলে তার দায় সংশ্লিষ্টদের বহন করতে হবে।”
আজ মঙ্গলবার রাতে জাগপা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র সরকার এর স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতি প্রদানকারী নেতৃবৃন্দ হচ্ছেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল বশর আজিজী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিলাল আহমদ চৌধুরী, গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদি হাসান মাহবুব, জাগপা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি তৌফিক উজ জামান পীরাচা, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী ফয়েজ)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আশিকুর রহমান জাকারিয়া, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি এহতেশামুল হক সাখী, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি খালেদ মাহমুদ, ছাত্র ফোরাম (মন্টু)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সানজিত রহমান শুভ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন (ববি হাজ্জাজ)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন (ইরান)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মোঃ মিলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল আলম, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোল্যা রহমাতুল্লাহ্, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আহমেদ ইসহাক, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির আহ্বায়ক ফাইজুর রহমান মনির, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন (লায়ন ফারুক)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, পিপলস এলায়েন্সের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন।

পাঠকের মতামত

ছাত্র ছাত্রীদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সর্ব দলীয় ছাত্র সংগঠন গুলোকে এখনি একই প্লাটফর্মে এসে এখনি সিসাঢালা ঐক্যের প্রাচীর তৈরী করে আওয়ামী সন্ত্রাসবাদ সহ অবৈধ অগণতান্ত্রিক সরকারকে রুখে দিতে হবে। তা না করে কোন দাবী দাওয়া এই স্বৈরশাসকের দরবারে উত্থাপন করে কোন সফলতার আশা লালন করা যায় না। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে এতদ্বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রতিটা ছাত্র নেতাকে জানবাজ সৈনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে এবং স্বৈরাচারের বিদায় ঘন্টা না বাজা পর্যন্ত ময়দান পরিত্যাগ করা যাবেনা।

আলমগীর
২৬ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার, ৬:৩৯ অপরাহ্ন

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Hamdard

রাজনীতি সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status