ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ রজব ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পেছনে একটা মতলবি মহল আছে: ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার
১৭ জুলাই ২০২৪, বুধবার

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পেছনে একটা মতলবি মহল আছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যকেও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আদালতের রায় বল প্রয়োগের মাধ্যমে পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এসবের পেছনে একটা মতলবি মহল আছে। গতকাল  ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। ছাত্রলীগকে দোষ দেয়া যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, পত্র-পত্রিকায় যা দেখতে পেলাম, তাতে ছাত্রলীগকে দোষ দেয়া যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। সব দোষই যেন নন্দ ঘোষ ছাত্রলীগের। অথচ এই হামলায় ছাত্রলীগের ৫০০ জন আহত হয়েছেন।

এর মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা আছেন ২০ জন। দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, তারেক রহমান আর রাজনীতি করবেন না বলে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফবিআই এসেও সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। সেই সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান তার দল হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আন্দোলন করতে গিয়ে বার বার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যা বাংলাদেশে চলছে এর নেতৃত্ব নিয়েছেন লন্ডনের দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান। তার দল বিএনপি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে। একটি অরাজনৈতিক আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। তারেক রহমান প্রতিনিয়ত ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৮-এর মতো রাজনৈতিক আন্দোলন করার জন্য বিভিন্ন অপশক্তিকে লেলিয়ে দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের পাশাপাশি কিছু সমমনা দলও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর আগেও তারা (বিএনপি) সড়ক ও কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে রাজনৈতিকভাবে ফসল কুড়াতে চেয়েছিল। সে ব্যর্থ চেষ্টার পর অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। রাজনীতিতে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। এতে কতো পুলিশ, চালক, নিরীহ যাত্রী হত্যা করেছে, পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের সে আন্দোলনও ব্যর্থ হয়। জনগণের অবস্থানের কাছে তারা পরাস্ত হতে বাধ্য হয়। সারা দেশব্যাপী জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোটা আন্দোলন করতে দেয়া প্রশাসনিক দুর্বলতা কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা প্রশাসনিক দুর্বলতা না, আমরা ধৈর্য ধরছি। ধৈর্য ধরা মানে দুর্বলতা নয়। আমরা জোর করে আন্দোলনের ওপর চড়াও হবো, তখন আপনি কি বলবেন? সময়মতো সব কিছুই দেখবেন, সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়: আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত আমাদের তরুণ প্রজন্ম, আগামীর ভবিষ্যৎদের বিপথগামী করছে। এরা কোটা আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসের পথে হামলা করতে উস্কানি দিচ্ছে। এরা চায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই জনদুর্ভোগ দেশের মানুষ মেনে নিতে পারে না। ছাত্র ও ছাত্রীদের কাঁধে ভর দিয়ে একটি গোষ্ঠী জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে এটি আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা মনে করি আদালতে যে বিষয়ে বিচারাধীন আছে সেটি আদালতে ফয়সালা হবে। আদালতের ফয়সালার পর যদি সরকারের কাছে কোনো সুযোগ আসে তাহলে অবশ্যই সরকার এর সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাধান করবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যত্যয় হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, আইনের শাসন ও আদালতকে আমাদের সম্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। সব সময় সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। আদালতের বাইরে গিয়ে সরকারের কোনো কিছু করার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়টি না বুঝার কোনো কারণ নেই। একটি গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের ভুল পথে বিপথগামী করার চেষ্টা করছে। আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বাঙালির সংস্কৃতি, আত্মপরিচয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনির্মাণে, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে যার অবদান সব থেকে বেশি সেটি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্রছাত্রী যখন নিজেদের  রাজাকারের সন্তান বলে গর্বিত ভাব প্রকাশ করে, নিকৃষ্ট ভাষায় স্লোগান দেয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাস করে না বলে দাম্ভিকতা দেখায়, সেই দাম্ভিকতাকে বাংলাদেশের ছাত্র, যুবসমাজ সহ সকল পেশাজীবী মানুষ মেনে নিতে পারেনি। এটি মেনে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, এই রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করার জন্য আমরা আহ্বান জানাবো। যারা নিজেদেরকে রাজাকারের উত্তরাধিকার মনে করে তাদের পরিচয়ও আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই। এখন আমাদের এই ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে ধৈর্য, সাহসিকতা, সহনশীলতার মধ্যদিয়ে প্রতিহত করবো। যারা দেশের মানুষের স্বার্থের বাইরে যাবে তাদেরকে আমরা ছাড় দিবো না। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হক সাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

 

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Bangladesh Army

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status