বিশ্বজমিন
ব্যাংকার থেকে ইউটিউবার
বছরে আয় ৮ কোটি রুপি
মানবজমিন ডেস্ক
১৪ জুলাই ২০২৪, রবিবার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে জীবন-জীবিকার ধরন। কেউ টেলিভিশনে ভালো পদ, বেতন ছেড়ে হচ্ছেন ব্লগার, ইউটিউবার। কেউ ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে হচ্ছেন ইউটিউবার। আর তাতে রাতারাতি ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে জীবনধারা। হচ্ছে বাড়ি, গাড়ি। ছড়িয়ে পড়ছে খ্যাতি। হ্যাঁ, এমনই একজন নিসচা শাহ। তিনি লন্ডনে একটি উচ্চ পর্যায়ের বিনিয়োগ বিষয়ক ব্যাংকে চাকরি করতেন। কিন্তু এক বছরের কিছু সময় আগে তা ছেড়ে দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এক ক্যারিয়ার বেছে নেন। তার আগে মিস শাহ করপোরেট জগতে কাটিয়েছেন এক দশক। তখন তিনি বছরে মোট বেতন পান ছয় অংকের। চাকরি ছেড়ে দেন। সেই বেতনের টাকায় কেনেন একটি ক্যামেরা। ব্যাস, শুরু করে দেন ইউটিউবের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করা। পূর্ণাঙ্গ সময় এটা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। এতেই তিনি ব্যাপক সফলতা পান। তার স্বপ্ন পূরণ হয়। এক বছরেই আয় করেন ৮ কোটি রুপি।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে বলা হয়, লন্ডনে ক্রেডিট এগ্রিকোলেতে সহযোগী পরিচালক হিসেবে ২০২২ সালে চাকরি করতেন নিসচা শাহ। তখন তিনি বছরে আয় করতেন কমপক্ষে ২৫৬০০০ ডলার (প্রায় ২ কোটি রুপি)। কিন্তু লোভনীয় এই কাজ ত্যাগ করেন তিনি। মিস শাহ শুরু করেন নতুন যাত্রা। আরও অর্থপূর্ণ ক্যারিয়ারের পেছনে দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। তার আগে প্রায় ৯ বছর ব্যাংকে কাজ করেছেন। সেখানে তিনি অনুধাবন করেছেন চাকরিতে চ্যালেঞ্জিং এবং বুদ্ধিমত্তা প্রকাশের কিছু নেই। তিনি বলেন, আমি এমন একটি পথ খুঁজে পেতে চেয়েছি, যার ফলে অন্য মানুষের উপকার হবে। ব্যাংকে কাজ করার মাধ্যমে আমি যেটা করছিলাম তা হলো করপোরেশনকে, এবং সরকারকে। ফলে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মিস শাহ তার উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে দেন। হয়ে যান ফুলটাইম ইউটিউবের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। তাতে ফোকাস করেন ব্যক্তিগত আর্থিক খাত। তার এই ঝুঁকিতে সফলতা পান। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত ইউটিউব মনিটাইজেশনের মাধ্যমে তিনি আয় করেন কমপক্ষে ৮ কোটি রুপি। এই চ্যানেলে তিনি বিভিন্ন কোর্স এবং প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয় করেন এই অর্থ। তিনি বলেন, ব্যাংকে চাকরি করে যে অর্থ উপার্জন করতাম তার চেয়ে অনেক বেশি আয় হচ্ছে। এ জন্য আমি টাকার পেছনে দৌড়াচ্ছি না। আমি যেটা করছি সেটা আমার ভালোর জন্য, আমার ভালোলাগা থেকে এবং আমি এটা বাস্তবেই এনজয় করছি। এর আগে আমি যা যা পেয়েছি, তার সবটাকে অতিক্রম করে যাচ্ছে এটা।
চাকরি ছাড়লে কীভাবে চলবেন- সেজন্য তিনি কমপক্ষে ৯ মাস চলতে পারেন এমন ন্যূনতম আর্থিক সাপোর্ট তৈরি করেন। এই অর্থ তাকে আস্থা দেয় যে, তিনি পূর্ণ সময় কাজটা করতে পারবেন। ইউটিউব থেকে তিনি সফলতা তাৎক্ষণিকভাবে পাননি। চ্যানেলের ১০০০ সাবস্ক্রাইবার হতে সময় লেগেছে ১১ মাস। কিন্তু ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরটা একটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে আসে। ওই সময় একজন বিনিয়োগ বিষয়ক ব্যাংকার হিসেবে তার জীবনের কাহিনী নিয়ে বানানো ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। দ্রুত সাবস্ক্রাইবার হয়ে যায় ৫০ হাজার। এতে উপার্জন হয় কমপক্ষে ৩ লাখ রুপি। নিসচা শাহ’র ভিডিও বিভিন্ন টপিকসের ওপর। এর মধ্যে আছে ‘মানি হ্যাবিটস কিপিং ইউ প্যুর’ ‘হাউ টু ইনভেস্ট ইয়োর ফার্স্ট ১০০০ ডলার’ ‘৭ প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়াস’। তার ভিডিও দেখা হয় এক লাখ থেকে ৯০ লাখ বার। ফলে তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে একজন সফল ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন।