ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

দেশ বিদেশ

পানির নিচে পুরান ঢাকা, দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই

স্টাফ রিপোর্টার
১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার
mzamin

পুরান ঢাকার সমস্যার যেন অন্ত নেই। কেমিক্যাল কারখানায় আগুনে মৃত্যু, ভবন বিস্ফোরণে মৃত্যু, দিনরাত সবসময়ই যানজট- এ যেন পুরান ঢাকার নিত্য নৈমিত্তিক সমস্যা। ঘটনার পর নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। উল্টো দিন দিন নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে পুরান ঢাকায়। গতকাল তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে পুরান ঢাকার বেশির ভাগ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দোকানপাট, হাসপাতাল ও বাসাবাড়িতে পর্যন্ত সন্ধ্যা পর্যন্ত হাঁটু পানি ছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই দুর্ভোগের মূল কারণ ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নয়া বাজার, তাঁতী বাজার ও বংশাল এলাকায় সুয়ারেজ লাইনের কাজ চলছে। কিন্তু কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্রুত গতিতে কাজ শেষ হলে বিল পেতে ঝামেলা হয়। এ ছাড়া টেন্ডারের বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য এই কাজ ধীরগতিতে করছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষরা জানান, সামান্য বৃষ্টিতে এভাবে পুরান ঢাকাকে আগে পানির নিচে দেখিনি। এমন কি বন্যার সময়ে এমনটি ঘটেনি বলে জানান তারা। সবগুলো সড়কে এভাবে পানি থাকায় তাদের কষ্টের শেষ নেই। ক্ষোভের সঙ্গে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সরকারের এত উন্নয়ন দিয়ে আমরা কি করবো। যদি এভাবে আমাদের দুই/তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাঁতী বাজারের কাগজ ব্যবসায়ী রহমান মিয়া বলেন, আজ ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে সুয়ারেজ লাইনের কাজ চলছে। একটা কাজ করতে কি এতদিন লাগে। তারা আস্তে আস্তে কাজ করছে। আসলে তাদের কাজে তদারকি করার তো কেউ নেই। যে কারণে এভাবে কাজ চলছে। পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখতে এখন কেউ আসবে না। 

শুধু ভোটের সময় তাদের দেখা যাবে। এখন পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কাউকে দেখিনি ড্রেন পরিষ্কার করতে আসতে। এতে একে তো চারদিকে পানি, তার ওপর বাসা-বাড়িতে গ্যাস নেই। তাই  শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাসা থেকে বের হয়ে বাইরে খাবার কিনতে যেতে হচ্ছে। সিএনজিতে সদরঘাট থেকে মহাখালী যাচ্ছেন এক পথচারী। তাঁতী বাজার আসার পর সিএনজিতে পানি গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে  কোনো যানবাহন না পেয়ে বাধ্য হয়ে হেঁটেই রওনা দেন। তিনি বলেন, এত পানি হবে কল্পনা করিনি। জরুরি প্রয়োজনে গ্রামে যাবো এজন্য বের হয়েছি। তাঁতী বাজার থেকে কোমর সমান পানি মাড়িয়ে হেঁটেই যাচ্ছি। দোকান মালিকরা বলেন, এভাবে পানি না কমলে তো আমাদের লাখ লাখ টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি তারপরও পানি নামছে না। ড্রেনগুলোর অবস্থা একেবারে নাজেহাল।

 এরমধ্যে আরও বৃষ্টি হলে মনে হচ্ছে বুক সমান পানি হয়ে যাবে। আল্লাহ জানে আমাদের কি অবস্থা হবে।  সরজমিন দেখা যায়, পুরান ঢাকার বেশির ভাগ সড়কে হাঁটু সমান পানি আটকে থাকতে দেখা যায়। পুরান ঢাকার ধোলাইখাল, শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার, তাঁতী বাজার, নয়া বাজার, বাবু বাজার, বংশাল, মালিটোলা, নাজিরা বাজার ও গুলিস্তান ছিদ্দিক বাজার, আলু বাজারসহ অলিগলির রাস্তাগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আশপাশের সবগুলো দোকানপাট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। অনেক দোকান মালিক পানি সরানোর চেষ্টা করলেও কোনো ভাবেই সুয়ারেজ লাইনের ড্রেন দিয়ে নামছে না পানি। এ ছাড়া মুদি দোকান, ওষুধের দোকান ও খাবার হোটেলসহ অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খুলতে পারছেন না বিক্রেতারা। তবে কিছু ওষুধ ও খাবার হোটেল খোলা থাকলেও সড়কে পানি থাকায় বিপাকে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।
এসব রুটে চলাচলকারী যানবাহনসহ জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের কষ্ট যেন দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এদিকে, পানি না কমায় সড়কে চলাচলকারী সিএনজি, মোটরসাইকেল, বাস, কার, এম্বুলেন্স ও রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত পানির কারণে একাধিক বাস, সিএনজি ও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে মাঝ রাস্তায় বন্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

পাঠকের মতামত

যারা হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে খাচ্ছে তাদেরকে এর কয়েক গ্লাস পানি গেলানো দরকার।

Shahidul
১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ১:০৫ পূর্বাহ্ন

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status