দেশ বিদেশ
পিএসসি’র প্রশ্নপত্র ফাঁস
সন্দেহের তালিকায় প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারীরা
স্টাফ রিপোর্টার
১১ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবারবাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তদন্তসংশ্লিষ্টরা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করেন এমন ব্যক্তিদের সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন। তদন্তসংশ্লিষ্টদের ধারণা, যে চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁস করতো তাদের সঙ্গে প্রণয়নকারীদের যোগসাজশ রয়েছে। সবাই মিলেমিশে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতো। সাম্প্রতিক সময়ে রেলওয়ের প্রশ্নফাঁসসহ আরও কয়েকটি প্রশ্নফাঁসের খবর গণমাধ্যমে প্রচারের পর নড়েচড়ে বসেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও পিএসসি প্রথমদিকে বলেছিল প্রশ্নফাঁস হওয়া অসম্ভব। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ৮ই জুলাই রাতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে পিএসসি’র সাবেক গাড়িচালকসহ উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করে পিএসসি। এ ছাড়া অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পিএসসি’র যুগ্ম সচিব ড. আব্দুল আলীম খানকে আহ্বায়ক ও কমিটির সদস্য সচিব করা হয় পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হককে এবং একমাত্র সদস্য হিসেবে রাখা হয় আরেক পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পিএসসি’র প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পরপরই ইমেজ সংকটে রয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। বিভিন্ন মহলে পিএসসি নিয়ে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেটি কাটিয়ে ওঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে পিএসসি। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের ওপর নির্ভর না করে নিজেরাও তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে। ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দিবে। তদন্তে অংশ হিসাবে সম্ভাব্য যেসব চ্যানেলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে সেদিকেই নজর দিচ্ছে। শুরু করেছে জিজ্ঞাসাবাদও। তবে পিএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ক্ষেত্রে কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখছে না।
সিআইডি সূত্র বলছে, যে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে পিএসসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারী ৬ জন। এরমধ্যে ৫ জন এখনো কর্মরত। আরেকজন ১০ বছর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। যারা কর্মরত আছেন তাদের সবাই বিভিন্ন সময় প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযোগ ছিল। অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছিল পিএসসি। সিআইডি কর্তৃক গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ২০১৪ সালে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। তবে বিভিন্ন সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরও পিএসসি এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা করেনি। সিআইডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ৫ই জুলাই পিএসসি’র অধীনে নেয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ননক্যাডার) পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। নিয়োগ প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর বিতরণ করেছেন তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন, বিগত বছরগুলোতেও বিভিন্ন সময়ে বিসিএসসহ পিএসসি’র বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন। সিআইডি বলছে, ৫ই জুলাইয়ের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় অন্তত ৫০ জন জড়িত।
পাঠকের মতামত
এখানেও ভাষতের সাথে মিল রয়েছে
পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান শিক্ষাসচিব থাকার সময়কালে ইন্টারের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।উনাকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। উনার সম্পদের হিসাব দেখতে দুদকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রশ্ন তৈরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট A TO Z সকলকেই এই সন্দেহের তালিকায় রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।
একটি দেহের সম্পুর্ন অংশ পচে গেলো অথচ অপারেশন এর সুযোগ হলো না এটা কেমন লাগে।
যে পিএসসি বলেছিল যে, প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া অসম্ভব ! এখন বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর সেই পিএসসি'ই নড়েচড়ে বসেছে এই বিষয়ে! আমাদের আস্হার জায়গাগুলো ক্রমশঃ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে .......... আমরা কাকে বিশ্বাস করবো !?! ব্যক্তি, সমাজ, প্রতিষ্ঠান সবক্ষেত্রেই ক্ষয় এখন ভয়ানক পর্যায়ে !!