বিশ্বজমিন
রাফায় ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই হামাসের
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ১৪ জুন ২০২৪, শুক্রবার, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১১ পূর্বাহ্ন

রাফায় ইসরাইলি সেনাদের বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই করছে যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস। ইসরাইল হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালাচ্ছে। ড্রোন ব্যবহার করছে। যুদ্ধবিমান থেকে গোলা নিক্ষেপ করছে। কিন্তু তাদের সামরিক শক্তির তুলনায় দুর্বল হামাস মানসিক শক্তিকে পুঁজি করে জবাব দিয়ে যাচ্ছে। রাফার রাস্তায় রাস্তায় তারা মুখোমুখি যুদ্ধ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই যুদ্ধ বন্ধে বা যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আশা প্রকাশ করেছেন, এখনও যুদ্ধবিরতি সম্ভব। তিনি যখন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছেন, তখন কিন্তু ওই ইসরাইল থেমে নেই। তারা পূর্ণ শক্তি নিয়ে গাজার রাফায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের জবাব দিতে যুদ্ধ করছে হামাস। গাজা সিটির উত্তরাঞ্চলে আবাসিক ভবনে আকাশ থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে কমপক্ষে ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, নিকট ভবিষ্যতে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে বলে তিনি মনে করেন না। সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান- শিগগিরই কি একটি যুদ্ধবিরতি হবে? জবাবে বাইডেন বলেন, না। আমি আশা ছাড়িনি।
ওদিকে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক ঘাঁটিকে টার্গেট করে ড্রোন ও রকেট হামলা করেছে লেবাননের যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এর জবাবে লেবাননের দক্ষিণে ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এর ফলে গাজা ও ইসরাইল যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৭ই অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইল কমপক্ষে ৩৭,২৩২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ সময়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮৫,০৩৭ ফিলিস্তিনি। ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে গাজার হাসপাতালগুলোকে। খাদ্য, পানি, ওষুধ, চিকিৎসা সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ভয়াবহ সঙ্কটে গাজাবাসী অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার। ইসরাইল যেহেতু তার হামলা বন্ধ করছে না, তাই হামাস বলেছে- ইসরাইল যদি এভাবে অগ্রসর হতেই থাকে, তাহলে তাদের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের পরিণতি খারাপ হবে।
হামাসের মুখপাত্র ও রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ওসামা হামদান বলেন, গাজায় এখন কতজন জিম্মি জীবিত আছে, সে সম্পর্কে কারো কোনো ধারণা নেই। তিনি লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। ওসামার কাছে জানতে চাওয়া হয়- ৭ই অক্টোবর হামাসের রকেট হামলার জন্য এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে হামাস কি অনুশোচনা করে কিনা? জবাবে ওসামা হামদান ইসরাইলে হামলাকে সমর্থন করেন। বলেন, ইসরাইলে ওই হামলা চালানো হয়েছে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ওই দখলদারিত্বের জন্য দায়ী ইসরাইল। যদি আপনি এই দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে তারা আপনাকে হত্যা করবে। যদি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করেন, তাহলেও তারা আপনাকে হত্যা করবে। তারা আপনাকে আপনার দেশ থেকে বের করে দেবে। সুতরাং আমাদের করার কি আছে, শুধু অপেক্ষা করবো? এ সময় তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে একটি স্থায়ী চুক্তিতে সম্মত হতে ইসরাইলি সরকারকে রাজি করাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, মাত্র ৬ সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি চায় ইসরাইল। তারপর আবার তারা যুদ্ধে ফিরবে। আমি মনে করি মার্কিনিরা এখনও ইসরাইলকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে পারেনি।
ওদিকে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শিশু অধিকার বিষয়ক পরিচালক জো বেকার বলেছেন, শিশুদের অধিকারকে ভয়াবহভাবে লঙ্ঘিত করার কারণে ইসরাইলকে কালো তালিকাভুক্ত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতিসংঘ মহাপরিচালক অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ, তার যথার্থই বা পুরোপুরি সঠিক। ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইসরাইলি সেনাদের হামলায় কমপক্ষে ৮৭০০ শিশু নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ হিসাব পেয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালে যে মাত্রায় নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে তা এতটাই ব্যাপক যে, মহাসচিব তা এড়িয়ে যেতে পারেননি।
পাঠকের মতামত
বিশ্বের সকল পরাশক্তি গাদ্দার মুসলিম বিদ্বেষী। আমেরিকা মুখে এক কথা বলে ভিতরে অন্য কথা। তাই ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হবে। আসুন আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করি।
ইসরায়েলকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিৎ। তোরা একদিন এর মাশুল দিবি।আজ মধ্য প্রচ্যের কিছু মুনাফেকদের কারণে মুসলিমদের রক্ত ঝরাচ্ছুর! আল্লাহ তোদের ধ্বংস করুক।আমিন।
হামাস জিন্দাবাদ, ইসরাইল নিপাত যাক। ইনশাআল্লাহ হামাসের বিজয় সুনিশ্চিত, গণহত্যার জন্য ইসরাইল কে চরম মূল্য দিতে হবে।