ঢাকা, ১৭ মে ২০২৫, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মানবসৃষ্ট এবং পরিকল্পিত - বাপা

স্টাফ রিপোর্টার
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মানবসৃষ্ট এবং পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মো. নূর আলম শেখ। তিনি বলেন, বার বার সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ফলে সামগ্রিকভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। বনের শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রভাব পড়ছে প্রাণীকুলের খাদ্যচক্রে। অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় বনবিভাগ কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা আয়োজিত ‘বারংবার আগুন সন্ত্রাসের কবলে সুন্দরবন: কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সর্বশেষ গত ৪ঠা মে সকাল ১১টায় পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির লতিফের ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। এতে পুড়ে যায় ৭ দশমিক ৯ একর বনভূমি। নূর আলম বলেন, সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চল হলেও আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি অঞ্চলে চোরা শিকারিসহ মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। গণমাধ্যমে এসেছে, গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৫ থেকে ২৬ বার আগুন লেগেছে। সরকারি হিসেবে প্রায় শতাধিক একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বারে বারে সুন্দরবনে আগুন লাগানো হচ্ছে। সুতরাং এর দায়ভার বনবিভাগকেই নিতে হবে।  

তিনি বলেন, বনবিভাগের উদাসীনতায় প্রথমদিকে আগুন নেভাতে বিলম্বে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগুনে প্রায় ৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। আমুরবুনিয়ার আগুন লাগার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হবে না। বিগত সময়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারণ অনুসন্ধান করতে যেয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের সঙ্গে আলাপকালে বনবিভাগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই এশিয়ার ফুসফুস সুন্দরবনের মানবসৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং এই ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ড বন্ধে বনবিভাগ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, পরিবেশকর্মী, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। নূর আলম বলেন, দুঃখজনক হলেও বিগত সময়ে আগুন লাগার ঘটনায় কেবলমাত্র বনবিভাগের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৫ বার জেলে-বনজীবী-মৌয়াল, ৪ বার দাবদাহ, ৪ বার মাছ আহরণ এবং ৪ বার আক্রোশমূলক ঘটনাকে দায়ী করেছেন।

 তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আগুন লাগার জন্য যাদের দায়ী করা হলো তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হলো না? অপরাধীদের কেন গ্রেপ্তার করা হলো না? অদক্ষ মৌয়ালদের কারণে যদি আগুন লেগে থাকে তাহলে মৌয়ালদের দক্ষ করার দায়িত্ব কার? আমাদের প্রশ্ন- মৌয়ালদের কারণে কেন সুন্দরবনের অন্য অঞ্চলে আগুন লাগে না? কেন মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলার আমুরবুনিয়া, ধানসাগর, নাংলী, রাজাপুর এলাকার একই জায়গায় বারে বারে আগুন লাগছে? এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিন বিভাগের অধ্যাপক ও বাপা’র জাতীয় কমিটির সদস্য ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাপা’র সহ-সভাপতি মহিদুল হক, কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন,  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের প্রমুখ।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status