খেলা
ম্যাচ হেরে শান্তর উদ্ভট অজুহাত
স্পোর্টস ডেস্ক
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবারইতিহাস, ঐতিহ্য, শক্তিমত্তা কোনো কিছুতেই বাংলাদেশের ধারেকাছেও নেই আইসিসির সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই সহ-আয়োজক এই দলটির বিপক্ষে ৩ ম্যাচে একটি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। আর সেখানেই কিনা প্রথম ম্যাচে হেরে বসলো টাইগাররা। সবকিছু বিবেচনায় এই হার বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য বিব্রতকর। যদিও ম্যাচ শেষে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এই হারের জন্য ঘরের মাঠে খেলা জিম্বাবুয়ে সিরিজের উইকেটকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলেন।
গত মঙ্গলবার আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ১৯ নম্বরে থাকা দলটি দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশকে আটকে রাখে ১৫৩ রানে। এরপর রান তাড়ায় শুরুতে ভালো করতে না পারলেও পরে কোরি অ্যান্ডারসন ও হারমিত সিংয়ের দারুণ জুটিতে স্মরণীয় এক জয়ের দেখা পায় তারা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম দেখাতেই হার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। এমন ম্যাচের পর যেকোনো পূর্ণ সদস্যের দলের অধিনায়ককে ম্যাচ শেষে একটু বিব্রত হতে দেখা যাওয়ার কথা। যদিও শান্ত এদিন বরং সংবাদ সম্মেলনে অজুহাতের মেলা বসালেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘২০ রান কম হয়েছে।’ তার কথা অনুযায়ী বাংলাদেশ শুরুটা ভালো করেছিল, ‘শুরুটা ভালোই হয়েছিল আমাদের, কিন্তু পরে কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলি। আমার মনে হয়, আর ২০ রান বেশি করতে পারলে ভিন্ন কিছু হতে পারতো।’ আসলে শুরুটা ভালো কীভাবে হলো সেটাও একটা প্রশ্ন! পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ রান তুলতে পেরেছিল মাত্র ৩৭। টপ অর্ডারে লিটন কুমার দাস, শান্তরা ভুগছেন জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি লিটন। একটি চার ও ছক্কা মারতে পারলেও ১৫ বলে ১৪ রান করে ফেরেন তিনি। আর শান্ত ৩ রান করতে খেলেন ১১ বল। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। আউট হন ১৩ বলে ২০ রান করে। মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ৬ রান করেন ১২ বলে! এই হচ্ছে অধিনায়কের ভালো শুরুর নমুনা। এরপর যখন ব্যাটারদের তাড়না নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তখন অধিনায়ক সেখানে কোনো সমস্যা খুঁজে পান না। তাকে এই হারের ব্যর্থতা ঢাকতে টানতে হলো কয়েকদিন আগে ঘরের মাঠে খেলা জিম্বাবুয়ে সিরিজের উইকেট। টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আমার মনে হয়, (ব্যাটসম্যানদের) তাড়না নিয়ে সমস্যা ছিল না। সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজেও আমরা খুব ভালো উইকেটে খেলিনি। তবে মূল ব্যাপারটি হলো মানসিকতার এবং আশা করছি, ব্যাটসম্যানরা দ্রুতই ফর্মে ফিরবে।’ শক্তিমত্তা অনুযায়ী ১৫৩ রান নিয়েই জেতার কথা বাংলাদেশের। অথচ ডেথ ওভারে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বোলার মোস্তাফিজ যেন বোলিং করাই ভুলে গেলেন। শেষ চার ওভারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন ছিল ৫৫ রান। মোস্তাফিজ আর শরিফুল দু’জনই বেদম মার খেলেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই ব্যাটার হারমিত সিং ও কোরি আন্ডারসনের কাছে। শেষ ওভারে ৯ রান ডিফেন্ড করতে হতো বাংলাদেশকে। দলের সেরা স্পিনার সাকিব আল হাসানের ওভার বাকি থাকা সত্ত্বেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে বল তুলে দেন শান্ত। ৩ বলেই জিতে যায় যুক্তরাষ্ট্র। শান্তর মতে স্পিনাররা ভালো বোলিং করেছেন এদিন। অথচ এদিন বোলিং করা ৪ স্পিনারের ৩ জনই কোটা পূরণ করতে পারেননি। বলা ভালো তাদের কোটা পূরণ করেননি অধিনায়ক। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ বৃহস্পতিবার, একই মাঠে। শান্তর কণ্ঠে সেই পুরনো গান, পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পিনাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। শেষ দুই-তিন ওভারে আমাদের পেসাররা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আশা করি পরের ম্যাচে তারা ঘুরে দাঁড়াবে।’ গুণিজনরা বলেন, সমস্যার সমাধান করতে গেলে আগে সেটা স্বীকার করতে হয়। তবে বাংলাদেশ দলে যেই অধিনায়কত্ব করুক, তারা স্বীকারের চেয়ে সেটা নানা অজুহাত দিয়ে ঢাকার জন্য বিশেষ দক্ষ হন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৬ দিন পর, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। তবে সাম্প্রতিক পারফরমেন্স অনুযায়ী টাইগারদের নিয়ে ভালো কিছু আশা হয়তো পাড় ভক্তরাও আর করছেন না।