খেলা
মায়ের যেসব শর্ত পূরণ করলে খেলার সুযোগ পেতেন তামিম
স্পোর্টস ডেস্ক
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার![mzamin](uploads/news/main/110998_s6.webp)
বিশ্বকাপের আগে ধারাবাহিকভাবে স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ‘দ্য গ্রিন রেড স্টোরি’ নামের এই অনুষ্ঠানে এবার এসেছিলেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। বিসিবি’র ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে তামিম জানান, মায়ের নানা শর্ত পূরণ করলেই ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেতেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন তামিম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি মাসে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় এই ওপেনারের। ১২ই মে শেষ হওয়া ৫ ম্যাচের এই সিরিজে দুটি ফিফটি ছিল তার। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে টি- টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে ওপেন করেছেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। বগুড়ার ছেলে তামিমের সরকারি চাকরিজীবী বাবা ছেলে পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। কিন্তু ছেলে স্বপ্ন দেখতেন ক্রিকেট নিয়ে। ক্রিকেটের নেশার কারণে বাবা তাকে বাড়ি থেকে বেশ কয়েকবার বেরও করে দিয়েছেন। সেসব দিনের কথা স্মরণ করে তামিম বলেন, ‘সব মা-বাবাই চান তার ছেলে পড়াশোনা করে অনেক ভালো কিছু হবে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমার মা-বাবাও সেই স্বপ্নই দেখেছিল। গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে এসেছিলেন পড়াশোনা করার জন্য। জিলা স্কুলে পড়াশোনা করি। খেলার ওপর অনেক ঝোঁক ছিল। যখনই ছুটি পেতাম কিংবা পড়াশোনার ফাঁকে যেটুকু সময় পেতাম, খেলাধুলা করেছি।’
তবে মা অবশ্য খেলার সুযোগ দিতে কিছু শর্ত বেঁধে দিতেন। সেগুলো মনে করে তামিম বলেন, ‘স্কুল শেষে বাসায় টিচার আসতেন। রাতেও টিচার আসতেন। সময় পাওয়া খুব কঠিন ছিল। আম্মু আমাকে বলতেন, স্কুল থেকে আসার পর যদি আমি টিচারদের পড়াটা শেষ করতে পারি, তাহলে আমাকে খেলতে দেবেন। আম্মু আমাকে আরেকটি কথা বলতেন, যদি আমি লেখাপড়ায় ভালো করতে পারি, তাহলে আমাকে একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেবেন, ব্যাট-বল কিনে দেবেন। আমিও পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই ছিলাম। রেজাল্ট ভালো করতাম। এসব শর্ত পূরণ করলে আম্মু আমাকে খেলতে দিতেন।’
তবে বাবা অনেক বেশি কঠোর ছিলেন বলে জানান তামিম। যদিও এখন বাবা-মা দু’জনই সমর্থন দেন তাকে। তামিম বলেন, ‘আব্বু অফিস থেকে ফিরে হয়তো দেখতেন, আমি বাসায় নেই। টিচার এসে বসে আছেন। আমি মাঠে খেলতে গিয়েছি। বাবা এজন্য অনেক রাগ করতেন। বাবা যে কঠোর হতেন, এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এখন আমার মা-বাবা অনেক সমর্থন দেন। ভালো ও খারাপ দুই সময়েই সমর্থন দেন।’
২৩ বছর বয়সী তানজিদের আন্তর্জাতিক অভিষেক গত বছর আগস্টে। এর ৪ বছর আগে জিতেছেন যুব বিশ্বকাপ। সেটা নিয়ে এখনো সবাই গর্ব করে বলে জানান তামিম। বাংলাদেশের হয়ে ১৫টি ওয়ানডে ও ৫টি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ওপেনার বলেন, ‘আমার বন্ধু-বান্ধব, যারা ছোটবেলায় আমার সঙ্গে ক্রিকেট খেলতো, তারাও এখন আমার জন্য গর্ব অনুভব করে। গ্রামে কিংবা শহরে তাদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া হয়। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর সবাই এ ব্যাপার নিয়ে গর্ব অনুভব করে।’
গত অক্টোবরে অনেকটা চমক হিসেবে তামিমকে বিশ্বকাপ দলে নেয় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে ভালো না করতে পারলেও খেলতে পারাও তার কাছে সৌভাগ্যের। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে বিশ্বকাপে খেলতে পেরেছি। একটি ব্যাপার বিশ্বাস করি যে, হয়তো নিজে তেমন ভালো করতে পারিনি। কিন্তু যে বিষয়গুলো আমি দুই বছর পর শিখতাম, সেগুলো আমি হয়তো বিশ্বকাপে খেলার মাধ্যমে শিখেছি। বড় বড় খেলোয়াড়ের পরিণত মানসিকতা দেখেছি, যেটা আমাকে পরবর্তী সময়ে অনেক সাহায্য করবে।’