শেষের পাতা
থমথমে বানিয়াচং
অবুঝ ৩ সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন কাদিরের স্ত্রী
বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
১১ মে ২০২৪, শনিবারহবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সিএনজি স্ট্যান্ডে অটোরিকশার সিরিয়াল দেয়াকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ৩ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল ১২টা ৫০ মিনিটে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে আগুয়া গ্রামে নিহতদের লাশ এসে পৌঁছে। একটি মিনি ট্রাকে করে লাশগুলো নিয়ে আসা হয়। লাশের গাড়ি দেখেই হাজার হাজার জনতা ভিড় জমান। এ সময় নিহতদের স্বজনের আর্তনাদে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আছর নামাজের পর নিহত ৩ জনের জানাজার নামাজ শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হাসিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামছুল হক, বানিয়াচং থানার অফিসার মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জানাজার নামাজ শেষে নিহতদের স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে তাদের শান্ত্বনা দিয়ে আসেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান ডিআইজি শাহ মিজানুর রহমান। ডিআইজি শাহ মিজানুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন।
গতকাল সরজমিন নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাদের স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ চলছে। নিহত কাদির মিয়ার ৩ অবুঝ সন্তানকে জড়িয়ে তার স্ত্রী ঝুমা আক্তার বাকরুদ্ধ। স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই চলে স্ত্রী ঝুমা আক্তারের আর্তনাদ। স্বামীর জন্য কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে স্ত্রী ঝুমা আক্তারের। ৩ অবুঝ সন্তানের ভবিষ্যত কি হবে এ শঙ্কা ঘিরে ধরেছে তাকে। একই অবস্থা নিহত লিলু মিয়ার পরিবারেও। লিলু মিয়ার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে দুচোখে অন্ধকার দেখছে তার পরিবার। একই অবস্থা রিরাজ করছে সিরাজ মিয়ার পরিবারেও। গত বৃহস্পতিবার তুচ্ছ ঘটনার জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বানিয়াচংয়ের ১৩নং মন্দরী ইউনিয়নের আগুয়া গ্রাম। এ এলাকার একটি সিএনজি স্ট্যান্ডের অটোরিকশার সিরিয়াল দেয়াকে কেন্দ্র করে সিএনজি অটোরিকশার লাইন ম্যানেজার বদির মিয়ার সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয় ড্রাইভার কাদির মিয়ার।
পরে এ ঘটনার জের ধরে দুইপক্ষ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। তন্মধ্যে গুরুতর আহত সিরাজ মিয়া, লিলু মিয়া এবং কাদির মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে মারা যান। অপর গুরুতর আহত আনু মিয়া সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল এবং জিলুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। তাদের দুজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন জানান, এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় মামলা দায়ের হয়নি বলেও তিনি জানান।
এই ধরনের দেশীয় অস্ত্র তৈরি করা বন্ধ করুন.কারা এর সাথে জড়িত তাদের ধরুন।