অর্থ-বাণিজ্য
ডলারের দামে রেকর্ড: কার লাভ কার ক্ষতি?
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৭ মাস আগে) ৯ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘ সময় ধরে চলমান ডলার সংকটের মধ্যেই দেশে একদিনেই মার্কিন মুদ্রাটির দাম রেকর্ড ৭ টাকা বেড়েছে। ডলারের ব্যাংক রেট এখন ১১৭ টাকা, যা খোলাবাজারে আরও বেশি। এর ফলে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৬.৩ শতাংশ। আমদানির জন্য এলসি খুলতে গেলেও এ দামে ডলার মিলবে না বলে মনে করেন আমদানিকারকরা। এতে বাড়বে আমদানি খরচ। মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। আমদানিনির্ভর পণ্যগুলো কিনতে হবে আরও বেশি দামে। পণ্যের দাম বাড়লে চাপে পড়বেন সাধারণ মানুষ।
আমদানিকারকরা বলেছেন, ডলারের দাম বাড়া ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। কারণ যেসব নিত্যপণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ঋণপত্র খুলতে অনেক ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি ডলার কিনতে হয়। যার প্রভাব পড়বে বর্তমান নিত্যপণ্যের বাজারে। আর আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়বে।
বর্তমানে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ (দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি) পদ্ধতিতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে। এখন ডলারের জন্য গুনতে হবে আগের চেয়েও বেশি দাম। এতে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পণ্যের দামও বাড়াতে বাধ্য হবেন আমদানিকারকরা। চাপে পড়বেন সাধারণ মানুষ। মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে, মানুষ কষ্ট পাবে।
বেশ কয়েক মাস ধরেই ডলারের বাড়তি দামের কারণে খুচরা বাজারে বেড়েছে আমদানি করা নিত্যপণ্যের দাম। দেশে খাদ্যশস্য এবং অন্য পণ্য আমদানি করতে হয় পুরোপুরি জোগান মেটাতে। যে কারণে দেশের বাজারে পণ্যের দামে ডলারের সবচেয়ে বড় প্রভাব থাকে। বিশেষ করে চিনি, পাম তেল, সয়াবিন তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, আদা, মরিচ, গম, চাল, মসুর ডাল, পিয়াজ, আদা, রসুন, তেলবীজ রয়েছে শীর্ষ খাদ্যসামগ্রী আমদানির মধ্যে। এছাড়া সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সাবান, শ্যাম্পু থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বাড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়। আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি বাড়লে গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে। এমনিতেই এখন বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। তার সঙ্গে পোশাক, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পরিবহন খাতেও খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা আমদানিনির্ভর। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের অর্থনীতি চাপে আছে। এখন হঠাৎ করেই ডলারের দাম খুব বেশি হলে এর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে। বিশেষ করে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে যাবে। এতে পণ্যের দামও বাড়াতে বাধ্য হবেন আমদানিকারকরা। এতে চাপে পড়বে সাধারণ মানুষ। মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে, মানুষ কষ্ট পাবে।
ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ডলারের দাম বাড়লে সবচেয়ে বড় বিপদে পড়বে আমদানিকারকরা। ডলারের অপ্রতুলতায় বেশির ভাগ ব্যাংকই এলসি খুলতে অনীহা প্রকাশ করছে, এ প্রবণতা বাড়বে। আমদানি কমে পণ্যের দামও বাড়বে।
আরেক আমদানিকারক বলেন, ডলারের দাম বাড়াটা আমাদের (আমদানিকারকদের) জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হবে। সবশেষ ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ১১০ টাকা ছিল। তখন এলসি খোলার জন্য ১২০-১২২ টাকা দরে ডলার কিনেছি। এখন পরিস্থিতি কী হবে।’ এটা আমাদের এখন সমন্বয় করতে গেলে পণ্যের দাম বাড়বে। যে পদ্ধতিতে ডলারের দাম নির্ধারণের কথা বলা হচ্ছে, সে দামে ডলার মিলবে না। বরং এ দাম বাড়িয়ে নির্ধারণের জন্য এলসি খুলতে আরও ৭ টাকা হয়তো বেশি খরচ হবে।
দেশের অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির (এমপিসি) এক বৈঠকেও সেটি স্বীকার করা হয়েছে। ওই বৈঠকে অর্থনীতির দুটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে মূল্যস্ফীতির অব্যাহত উচ্চহারের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের ক্রমাগত অবক্ষয়কে নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে ডলারের এ দরবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ আরও শক্তিশালী করছে।
টাকার অবমূল্যায়নে কার লাভ?
ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে মূলত রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা লাভবান হন। যেমন ডলারের বিপরীতে টাকার দর ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অর্থ হচ্ছে টাকার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে ৭ টাকা। এর ফলে রপ্তানিকারকেরা প্রতি ডলার আয় থেকে বাড়তি ৭ টাকা বেশি হাতে পাবেন। এতে রপ্তানিকারকরা আরও বেশি উৎসাহী হন। একইভাবে প্রবাসীরাও রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারের বিপরীতে ৭ টাকা বেশি পাবেন।
কার ক্ষতি?
আমদানি করতে হয় ডলার কিনে। ফলে আগের চেয়ে ৭ টাকা বেশি দিয়ে আমদানিকারকদের ডলার কিনতে হবে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ওপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এরফলে দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। টাকার অবমূল্যায়নের আগে সাধারণ মানুষ যে পরিমাণ উপার্জন করতেন এখনো তাই করছেন। তারা চাইলেই আগের মতো একই পরিমাণ পণ্য বা পরিষেবা কিনতে পারবেন না। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ভ্রমণ ও বিদেশি শিক্ষার ব্যয় বেড়ে যায়। টিউশন ফি ও ফ্লাইটের টিকিট ডলারে পরিশোধ করতে হয়। তাই এতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়।
পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ।
দেশটাকে উন্নয়নের নামে ভোট চুরি করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
দেশ আজ চোরদের উন্নয়নে দিশাহারা। সরকারও মাশাল্লাহ এই পেশার উন্নয়নে এই চোরদের সাথে হাতে হাত মিলিয়েছে। অবশ্য চোরেরা সবই সরকারের নিকট আত্মীয়, বন্ধু বান্ধব।
এই দেশের জনগনের মরন ছাড়া উপায় নাই,আর সরকার এটাই চাচ্ছে। দুর্নীতি করে দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে।তারপরও ক্ষমতা ছাড়বেনা!
দেশ মূলতঃ চালায় গার্মেন্টস মালিকেরা। বহু বছর ধরে তারা সরকার এর প্রায় সব সুবিধা ভোগ করে আসছে। সে হিসাবে দেখবেন কবে যেন ডলার ১৩০/ হয়ে গেছে।
কানাডার ভিজিট ভিসার কারণে বাংলাদেশের মানুষ পাগলের মত এ দেশে আসছে । অনেকের ধারণা কানাডায় পৌছলেই বস্তা ভরে কানাডার সরকার ডলার দিবে । তাই যে কোন মূল্য দিয়ে ডলার কিনে আনছে । এতে ডলারের উপর প্রভাব পড়ছে।
এটাই হচ্ছে ভোট চোরদের উন্নয়ন। গোটা দেশটাকে উন্নয়নের নামে ভোট চুরি করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। জনগণের সরকার না আসা পর্যন্ত দেশে শান্তি আসবে না, জনগণ স্বস্তি পাবে না।