দেশ বিদেশ
আইএমও’র নির্বাহী পরিষদে বাংলাদেশের জয় বিজয়ের মাসে আরেকটি বড় অর্জন
স্টাফ রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ৪ ডিসেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৬:৪০ অপরাহ্ন

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নির্বাহী পরিষদে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ। বিজয়ের মাসে এটি আরেকটি বড় অর্জন। এই অর্জন বাংলাদেশের বৈশ্বিক মেরিটাইম সেক্টর এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সমর্থনের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এমপি। তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নির্বাহী পরিষদে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ। এ বছর জুনে আমরা হংকং কনভেনশন অনুসমর্থন করি; এতে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম মানদণ্ড বজায় রাখতে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে, যা এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই নির্বাচন মেরিটাইম সেক্টরকে সুগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং সংগঠিত করবে; যার মাধ্যমে বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ পরিচালনা এবং জাহাজ পুনর্ব্যবহার সেক্টরের দক্ষতা বৃদ্ধি করে বিদেশে খ্যাতি অর্জন করবে। তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিমুক্ত মানুষের পক্ষে বিশ্বব্যাপী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করেছে আইওএম এবং জাতিসংঘ সমর্থিত গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি সংস্থা; এটিও আমাদের অনেক বড় অর্জন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৭৪টি দেশ নিয়ে সংস্থাটি গঠিত। এখানে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছিলাম নির্বাহী পরিষদের সদস্য হতে। আমরা এর আগে ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে কাউন্সিল হিসেবে ছিলাম। তখন সেটা নির্বাচিত না, সিলেকশনের মাধ্যমে হয়েছিল। ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত নয় অথচ যেসব দেশের সামুদ্রিক পরিবহন বা নেভিগেশন নিয়ে বিশেষ আগ্রহ আছে এবং যাদের কাউন্সিলে নির্বাচন বিশ্বের সব প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করবে, এমন ২০টি দেশ ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছে। ১৬৮টি দেশের বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ১২৮টি ভোট। কাউন্সিল নির্বাচনে ‘সি’ ক্যাটাগরি সদস্য নির্বাচনে মোট ২৫টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৬৮টি বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৮টি ভোট পেয়ে ১৬তম হয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে।
উল্লেখ্য, আইএমও নির্বাহী পরিষদে নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি ‘সি’তে জয়লাভ করেছে। গত ১লা ডিসেম্বর ২০২৩ জাতিসংঘের শিপিং সংক্রান্ত বিশেষায়িত এ সংস্থার ৩৩তম অধিবেশনে আইএমও-কনভেনশন ১৬ ও ১৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনটি ক্যাটাগরিতে কাউন্সিল সদস্য পদে গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে ২০২৪-২০২৫ সালের জন্য ক্যাটাগরি ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’-তে ৪০ সদস্যের নতুন আইএমও কাউন্সিল সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়। ক্যাটাগরি ‘এ’ ও ‘বি’তে ১০ জন করে ২০ জন এবং ক্যাটাগরি ‘সি’তে ২০ জন নির্বাচিত হয়।
ক্যাটাগরি ‘এ’তে আন্তর্জাতিক শিপিং পরিসেবা প্রদানে সর্বাধিক আগ্রহী এমন ১০টি দেশ নির্বাচিত হয়েছে। দেশগুলো হলো- গ্রিস, ইতালি, জাপান, চায়না, নরওয়ে, পানামা, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, লাইবেরিয়া। ক্যাটাগরি ‘বি’ তে আন্তর্জাতিক সমুদ্রবাহিত বাণিজ্যে সর্বাধিক আগ্রহী এমন ১০টি দেশ নির্বাচিত হয়েছে। দেশগুলো হলো-ইন্ডিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রাজিল, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও সোমালিয়া। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে জয়লাভ করা ২০টি দেশ হলো-সিঙ্গাপুর, মালটা, সৌদি আরব, তুরস্ক, মিশর, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাহামা, সাইপ্রাস, মরক্কো, ডেনমার্ক, কাতার, বাংলাদেশ, কেনিয়া, পেরু, ফিনল্যান্ড ও জ্যামাইকা।
আরও উল্লেখ্য, আইএমও-তে দু’বছর পর ৪০ সদস্যের গভর্নিং বডি গঠিত হয়। ৪০ সদস্যের মধ্যে ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ১০টি করে ২০টি এবং ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ২০টি পদে নির্বাচন/মনোনীত হয়। বাংলাদেশ ১৯৮১ সালে আইএমও’র সদস্য পদ লাভ করে এবং ১৯৮১ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত ক্যাটাগরি ‘সি’ এবং ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ক্যাটাগরি ‘বি’ তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রতিনিধিত্ব করে।
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আইএমও নির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি ‘সি’তে জয়লাভ উপলক্ষে এ প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।