দেশ বিদেশ
প্রজ্ঞা’র ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তারা
ধূমপানমুক্ত পরিবেশ অর্জনে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ, খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি
স্টাফ রিপোর্টার
(২ সপ্তাহ আগে) ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৫:০৫ অপরাহ্ন

তামাক নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক মানদণ্ডে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আইনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা রাখার সুযোগ এর অন্যতম প্রধান কারণ। আজ সকাল ১১টায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত ‘গ্লোবাল টোব্যাকো এপিডেমিক প্রতিবেদন ২০২৩ এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতি’ বিষয়ে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা আয়োজিত ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তারা এসব বিষয়ে আলোচনা করেন। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে।
বৈঠকে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র এবারের প্রতিবেদনে ধূমপানমুক্ত পরিবেশের উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) থাকলে অধূমপায়ীদের পাশাপাশি সেবাকর্মীরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। থাইল্যান্ড, নেপাল, আফগানিস্তানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ সূচকে ভালো করলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তবে ডিএসএ বাতিলের প্রস্তাব সম্বলিত খসড়া সংশোধনীটি পাশ হলে বাংলাদেশও এসব দেশের কাতারে পৌছাবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে। তবে খসড়া সংশোধনী অনুযায়ী বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন এবং তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ বন্ধ হলে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে আরো ভালো করবে। ইতিমধ্যে বিশ্বের ৫০টি দেশ বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে এবং ৬২টি দেশ তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী আলোচকবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে এফসিটিসি’র আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার নির্দেশনা প্রদান করেন। এই প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
ভার্চুয়াল বৈঠকে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ অর্জনে আমরা আফগানিস্তান ও নেপালের চেয়ে পিছিয়ে আছি, আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। আইনের খসড়া সংশোধনীটি যাতে দ্রুত পাশ হয় সেবিষয়ে আমাদের কাজ করে যেতে হবে, হতাশ হওয়া চলবেনা।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, আইনের খসড়ায় যেসব প্রস্তাবনা আমরা রেখেছি সেগুলো পাশ করতে পারলে ডব্লিওএইচও’র পরবর্তী প্রতিবেদনে আমাদেরও অগ্রগতি হবে। তবে তামাক কোম্পানিগুলো এই অগ্রগতি থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের এবিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
সিটিএফকে এর বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোন ধূমপায়ীর নৈতিক অধিকার নেই অধূমপায়ীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা বাতিল সংবলিত আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাশ করতে হবে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি ও সাংবাদিক মিনার মনসুর বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি শক্তিশালী আইনগত ভিত্তি তৈরির পাশাপশি জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
ডব্লিওএইচও বাংলাদেশ অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক বলেন, খসড়া সংশোধনীতে যেসব ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে সেগুলোসহ আইনটি পাশ হলে বাংলাদেশও সর্বোচ্চ মানদ- অর্জনকারী দেশগুলোর কাতারে পোঁছার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে। নিউজ টুয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক শাহনাজ মুন্নী বলেন, হোটেল-রেস্তোরাঁয় আমরা প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছি। ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা থাকায় এটি ঘটছে। এই বিধান বাতিল করতে হবে।
প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভার সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল বৈঠকে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ নেন।
মন্তব্য করুন
দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]