ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

আল্টিমেটামের পরও বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৫ আগস্ট ২০২৩, শনিবার

বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিক্রি বন্ধ হচ্ছে কিনা তা দেখতে ১লা আগস্ট থেকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে অভিযান চালানোর নির্দেশও দেয়া হয়। কিন্তু সঠিক তদারকির অভাবে এখনো বাজারে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল। তবে বিক্রেতারা বলছেন, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করলে বিপাকে পড়বে নিম্ন আয়ের মানুষজন। তাই এই নির্দেশ আবার বিবেচনার অনুরোধ জানান তারা।

রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারে মুদি দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এখনো খোলা তেল বিক্রি চলছে। বিক্রেতারা বলছেন, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ থাকলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বন্ধ হলে তো আমরাই বন্ধ করে দেবো। খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করে দিলে আমাদের যেমন সমস্যা হবে, তেমনি গরিব মানুষেরও সমস্যা হবে। এক বিক্রেতা বলেন, আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে ১লা আগস্টের পর থেকে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করলে জরিমানা করা হবে। কিন্তু এখনো জোরালোভাবে এটা কার্যকর হয়নি। তাই আমরা এখনো বিক্রি করছি। আর সরকার যদি একেবারেই না দেয় তাহলে তো আর আমরা বিক্রি করতে পারবো না।

বিক্রেতারা জানান, খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করতে পারলে বড় বড় তেল কোম্পানিগুলো এই ব্যবসা আরও  ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তাই তারা এটা বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে।

খোলা তেল ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, এখন যদি বাজারে খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয় তাহলে হয়তো কিছুদিন পর বড় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দেবে। নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছেই থাকবে, আমাদের আর কিছু করার থাকবে না।

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের মনিটরিং চলছে। আগামী সোমবার আমরা সবাইকে নিয়ে একটি মিটিং করবো। আল্টিমেটলি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সঙ্গে বসে তারা যাতে আর না দেয় সয়াবিন, সে ব্যাপারে কথা বলবো। খোলা সয়াবিন আর থাকছে না। তারা যাতে সব তেলই প্যাকেটজাত করে সেটাই আমরা বলছি। তিনি বলেন, আমাদের মনিটরিং চলছে, অভিযান না। ৭ই আগস্ট বসবো ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সঙ্গে। তারা যাতে সব তেল প্যাকেটজাত করে এবং কতোদিন সময় লাগবে সে ব্যাপারে আলোচনা করবো।

খোলা তেল বিক্রি হলে স্বল্প আয়ের মানুষের কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, যেহেতু বাজারে কোনো খোলা তেল থাকবে না, সবই প্যাকেটজাত হবে; সেক্ষেত্রে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য মিনিপ্যাক তেল রাখার পরিকল্পনা আমরা করছি। এক্ষেত্রে ২০০, ২৫০ বা ৫০০ মিলি লিটারের তেলের প্যাকেট থাকবে। তিনি বলেন, এখন তারা (স্বল্প আয়ের মানুষ) যে তেলটা সয়াবিন তেল ভেবে কিনছেন সেটা আসলে সয়াবিন তেল না। বিক্রেতারা সয়াবিন বলে বিক্রি করছে, আসলে সেগুলো পাম অয়েল বা সুপার পাম অয়েল। এটা সয়াবিনের দামে কিনে ক্রেতারা আরও প্রতারিত হচ্ছেন।

সবজির দাম অপরিবর্তিত: এদিকে টমেটো ও কাঁচা মরিচ ছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বেশির ভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। যদিও তা ক্রেতার নাগালে রয়েছে এমনটি বলা যাবে না। তবে ব্রয়লার মুরগিসহ কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে। স্বল্প আয়ের মানুষেরা বলছেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কমিয়ে আনা উচিত। বাজারে সব সবজিই বিক্রি হচ্ছে কিছুটা কম মূল্যে। বেগুন (লম্বা ও গোল) ৬০ টাকা, শসা ৪০-৬০ টাকা, করল্লা ৮০-৯০ টাকা, উচ্ছে ৮০, পেঁপে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ২৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০-৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি। লাউ ৫০-৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৬০ টাকা পিস। কাঁচাকলা ৩৫ টাকা হালি। গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে সব সবজির দাম রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত। এ ছাড়া দেশি পিয়াজ ৭৫ টাকা, ভারতীয় পিয়াজ ৫০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, চায়না রসুন ২০০, দেশি রসুন ২২০ টাকা, আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতা হোসেন আলী বলেন, সবজির বাজারে স্বস্তি বলা যাবে না। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কম। 
বাজারে গত দুই সপ্তাহে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। কক মুরগি ২৮৫-৩৩০, দেশি মুরগি ৫৫০, গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে এ সপ্তাহে মুরগির মাংসের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে ক্রেতারা বলছেন, বর্তমান দাম সবার জন্য সহনশীল না। সবার নাগালের মধ্যে মাংসের দাম নিয়ে আসতে হবে।

এ ছাড়া দেখা যায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। এদিকে ইলিশ মাছ ৮০০-১৫৫০, রুই মাছ ৩৮০, কাতল মাছ ৪০০, চিংড়ি মাছ ১২০০, কাচকি মাছ ৫০০, টেংরা মাছ ৭০০, কই মাছ ২৮০, পাবদা মাছ ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০-৭০০, বোয়াল ৫০০ টাকা, বেলে মাছ ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status