ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অর্থ-বাণিজ্য

দেশীয় লিফট শিল্প বিকাশে সহায়ক প্রস্তাবিত বাজেট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২০ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে লিফট ও এস্কেলেটর আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশীয় শিল্পোদ্যাক্তারা। তাদের মতে, সময়োপযোগী এই নীতি সহায়তায় দেশে লিফটের মতো উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন উৎপাদনমুখী ভারী শিল্প খাত বিকশিত হবে। বাড়বে এ খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। 

দেশের আমদানি ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপও অনেকাংশে কমবে। 
গত ১লা জুন অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে লিফট/এলিভেটর, এস্কেলেটর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি, আমদানি বিকল্প লিফট উৎপাদনে দেশীয় শিল্পে কর ও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখা হয়। বাজেটে শিল্পোন্নয়নবান্ধব নীতি সহায়তা প্রস্তাব করায় অর্থমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দেশীয় লিফট উৎপাদকরা।

শিল্প খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনার সংখ্যা বেড়েছে ব্যাপকহারে। সেইসঙ্গে লিফট, এস্কেলেটরের চাহিদাও অনেক বেড়েছে। লিফট এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পণ্য। দেশে এ খাতে বার্ষিক ১ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজার রয়েছে। কয়েক বছর আগেও এই বিশাল বাজারের পুরোটাই ছিল আমদানিনির্ভর। তবে শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ২০১৮ সালে দেশে বাণিজ্যিকভাবে লিফট উৎপাদন শুরুর পর আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পাচ্ছে। 

এখন কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানও লিফট উৎপাদন শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই খাতের অভ্যন্তরীণ বাজারে বর্তমানে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মার্কেট শেয়ার ২৫ শতাংশেরও বেশি। সরকারের নীতি সহায়তায়  উচ্চ গুণগতমানের লিফট তৈরি ও বাজারজাতের মাধ্যমে অতি দ্রুতই সিংহভাগ মার্কেট শেয়ার অর্জন করে নিতে সক্ষম হবে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।

দেশীয় শিল্পোদ্যাক্তারা জানান, বাংলাদেশ এখন লিফট উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। লিফটের অভ্যন্তরীণ চাহিদার পুরোটাই দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পূরণ করতে সক্ষম। তাই দেশীয় লিফট, এস্কেলেটরের উৎপাদন শিল্প সুরক্ষা ও বিকাশের পথ সুগম করতে এসব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করা এখন সময়ের দাবি। 

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, দেশের ইলেক্ট্রনিক্স, অটোমোবাইলসহ ভারী ইন্ডাস্ট্রিজগুলোকে নীতি সহায়তা দেয়া খুবই ভালো উদ্যোগ। এতে আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। কর্মসংস্থানের আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের নীতি সহায়তায় আমদানি বিকল্প লিফট উৎপাদনকারী দেশীয় শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, এটি শিল্পবান্ধব এবং কর্মসংস্থানবান্ধব বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানি এবং দেশীয় বাজারনির্ভর শিল্পের ক্ষেত্রে নানা রকম সুবিধা দেয়া হয়েছে। 

শিল্পসংশ্লিষ্টদের মতে, গাড়ির পরে দেশে সবচেয়ে ব্যয়বহুল আমদানি পণ্য হচ্ছে লিফট, এস্কেলেটর। এমনিতেই বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মধ্যে রয়েছে। রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে দেশে উৎপাদিত হয় এমন পণ্যের আমদানি কমানোর কোনো বিকল্প নেই। সেই বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে লিফট, এস্কেলেটর আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব সময়োপযোগী এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। 

সরকারের এই নীতি সহায়তায় লিফট, এস্কেলেটরের মতো দেশীয় ভারী শিল্প সুরক্ষার পাশাপাশি বিকাশ আরও ত্বরান্বিত হবে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিদেশের পরিবর্তে দেশেই বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

 

অর্থ-বাণিজ্য থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অর্থ-বাণিজ্য সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status