শেষের পাতা
তাসকিন জাদুতে বাংলাদেশের দারুণ জয়
ইশতিয়াক পারভেজ
২৮ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার১৯.২ ওভার বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে ২০৭ রান ৫ উইকেট হারিয়ে। ঘণ্টা ধরে চলা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি রূপ নিলো মুষলধারে। আম্পায়াররা ম্যাচ বন্ধ করে দিলেন। কিছু পর ইতিটানা হলো টাইগারদের ইনিংসেরও। কিন্তু বৃষ্টি থামার নাম নেই। শেষ ৫টা ৪০ মিনিটে খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের সামনে বৃষ্টি আইনে জয়ের জন্য লক্ষ্য ১০৪ রান তাও ৮ ওভারে। জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরু আইরিশদের। প্রথম ওভারেই স্পিনারের নাম খরচ করলেন ১৮ রান। তিন ওভার শেষে সফরকারীদের স্কোর বোর্ডে ৩৭ রান এক উইকেট হারিয়ে।
ইংল্যান্ডকে ৩ ম্যাচের সিরিজে হোয়াটওয়াশ করে দারুণভাবে টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আইরিশদের সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারিয়ে দ্বিতীয় বারেরমতো তুলে নিয়েছে এই ফরম্যাটে টানা চতুর্থ জয়। বাংলাদেশের সুযোগ প্রথমবারেরমতো টানা পাঁচের অধিক ম্যাচ জেতার। এর আগে ২০২১-এ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা চার ম্যাচ জিতেছি বাংলাদেশ। অন্যদিকে গতকাল ফিফটি হাঁকিয়ে রনি ম্যাচসেরা হলেও বল হাতে এই ম্যাচে জয়ের আরেক নায়ক তাসকিন। গতকাল তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৫০তম ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ২০১৪’র এপ্রিলে মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় এই পেসারের। নিজের মাইলফলকের ম্যাচ দারুণ স্মরণীয় করে রাখেন এই পেসার। টি-টোয়েন্টিতে করেছেন নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। মাত্র ১৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
অন্যদিকে প্রথম দুই ওভারে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে দ্রুত এগোনো জুটি ভাঙলেন হাসান মাহমুদ। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দিলেন রস অ্যাডায়ারকে। ভাঙে ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর আক্রমণে এসে প্রথম বলেই সাফল্য পান তাসকিন। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন লরকান টাকারকে। এরপর বোল্ড হয়ে বিদায় নিলেন পল স্টার্লিং। তাসকিনের উপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন আইরিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। কিন্তু এলোমেলো হয়ে যায় তার স্টাম্প। এরপর জর্জ ডকরেল তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরে বলে ব্যাট চালিয়ে দিয়ে তিনি ধরা পড়েন থার্ড ম্যানে, শামীম হোসেনের হাতে। তবে শেষ বলে চার মেরে রানের খাতা খোলেন গ্যারেথ ডেল্যানি, ঠেকিয়ে দেন তাসকিনের হ্যাটট্রিক। ৪ ওভারে আইরিশদের রান ৪ উইকেটে ৪৪। এক ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে দলকে জয়ের পথ দেখান তাসকিন। এরপর এক ওভারে মোটে ৫ রান দেন সাকিব। সপ্তম ওভারে শুধু ৭ রান দিয়ে ম্যাচ মুঠোয় নিয়ে আসেন মোস্তাফিজ। ওপেনার রনি তালুকদারের ব্যাটিং ও পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং নৈপুণ্যে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলো স্বাগতিকরা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন ও রনি। পাওয়ার প্লেতে দলকে ৬ ওভারে সর্বোচ্চ ৮১ রান এনে দেন তারা। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ রান। আগেরটি ছিল ৭৪ রান। ২০১৮তে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে লিটন ১৯ বলে ৪০ ও রনি ১৭ বলে ৩৮ রান তোলেন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে লিটনকে শিকার করে বাংলাদেশের বিধ্বংসী উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পেসার ক্রেইগ ইয়ং। মিড অফের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে ক্যাচ দেন লিটন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৩ বলে সাজানো তার ৪৭ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। তিনি আউট হলেও ফিফটি তুলে নেন রনি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত, শামীম পাটোয়ারী ও তৌহিদরা কার্যকর ইনিংস খেলে আউট হন। শেষদিকে ২০ রানে সাকিব ও ৪ রান করে অপরাজিত থাকেন মিরাজ।