ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বজমিন

জাপানের ইন্দো-প্যাসিফিক পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

মানবজমিন ডেস্ক

(১ বছর আগে) ২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ২:৩৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৬ পূর্বাহ্ন

mzamin

ভারত সফরে এসে মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরিকল্পনার উন্মোচন করলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। যে পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ভারতকে ‘অপরিহার্য সহযোগী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। নির্দিষ্ট করে উত্তর-পূর্ব ভারত এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মত জাপানের। ধারণা করা হচ্ছে, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব রুখতেই এই পরিকল্পনা করেছে টোকিও। এ খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

খবরে বলা হয়, সোমবার দুই দিনের সফরে ভারত এসেছেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী। এতে সবথেকে গুরুত্ব পাচ্ছে মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরিকল্পনা। তবে বাংলাদেশ নিয়েও জাপানের পরিকল্পনার কথা বলেছেন কিশিদা। তিনি খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সাইবার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সহযোগিতার কথা বলেন। কিশিদা বলেন, জাপান ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভ্যাল্যু চেইন’ ধারণাকে সহায়তা করবে। এ জন্য ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে দেশটি যাতে করে এই গোটা অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।

বিজ্ঞাপন
 

জাপানের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা নরিয়ুকি শিকাতা বলেন, টোকিও এখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের দিকে নজর দেবে। এছাড়া আরও বেশি জাপানি কোম্পানি যাতে এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারে সেটিও নিশ্চিত করবে তারা। তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে মিয়ানমারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বেশ কঠিন। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক পার্টনারশিপ চুক্তি করতে চাইছে জাপান। 

এদিকে কিশিদা সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এতে আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, ব্যবসা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন দুই রাষ্ট্রনেতা। সেইসঙ্গে ইউক্রেন সংকট, জি২০-র সভাপতিত্ব ও জি সেভেনের সভাপতিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে মোদি এবং কিশিদার। সেই বৈঠকের পর মোদি জানান, ভারত এবং জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পক্ষে রয়েছে দুই দেশ। যে দুই দেশই নির্দিষ্ট আইন মেনে চলে। সেইসঙ্গে দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা সামগ্রী, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য ও ডিজিটাল ক্ষেত্রে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলিও উঠে এসেছে বলে জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি নির্দিষ্ট করে বলেন, সেমিকন্ডাক্টর ও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি জোগানের ক্ষেত্রে ভরসাযোগ্য পদ্ধতির গুরুত্ব নিয়ে আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। গত বছর আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম যে পরবর্তী পাঁচ বছরে ভারতে জাপানি বিনিয়োগের পরিমাণ পাঁচ ট্রিলিয়ন ইয়েনে পৌঁছে যাবে। দারুণ ছন্দ বজায় রেখে সেই লক্ষ্যমাত্রার দিকে যেভাবে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়েছে, সেই বিষয়টি অত্যন্ত সন্তোষজনক।

অপরদিকে মোদির সুরেই ভারত-জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর জোর দিয়ে কিশিদা জানান, বিশ্ব একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় দাঁড়িয়ে আছে। বিশ্বে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে ভারত এবং জাপান কী ভূমিকা পালন করতে পারে, তা নিয়ে মোদির সঙ্গে বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয়েছে। তবে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আগ্রাসী আচরণ নিয়ে কোনো পক্ষই কিছু বলেনি। যদিও হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আলোচনায় চীনের বিষয়টি উঠে এসেছে। 

২০০৭ সালে ভারতের সংসদে ঐতিহাসিক ভাষণে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তার উপর ভিত্তি করে মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরিকল্পনার উন্মোচন করেছেন কিশিদা। সেই পরিকল্পনার ক্ষেত্রে চারটি মূল স্তম্ভও চিহ্নিত করেছেন - শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য নীতি, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ছন্দে সমস্যার সমাধান, বহুস্তরীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাড়তি জোর ও সমুদ্র থেকে আকাশের সুরক্ষিত ব্যবহার। খাদ্যসুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য এবং সাইবার সুরক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরেন কিশিদা। তাতে উত্তর-পূর্ব ভারত, সার্বিকভাবে ভারত এবং বাংলাদেশের আরও আর্থিক উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরাসরি চীনের প্রসঙ্গ উত্থাপন না করেই জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানান, যে শক্তিগুলি একতরফা প্রভাব বিস্তার করছে সেই শক্তিগুলির বিরোধিতার লক্ষ্যে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাপান নয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেইসঙ্গে ওই পরিকল্পনার আরও কয়েকটি লক্ষ্য স্পষ্ট করে দেন কিশিদা।

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status