বাংলারজমিন
কারখানা সম্প্রসারণ করে উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করতে যাচ্ছে মীর সিমেন্ট
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, শনিবারআগামী বছরের মধ্যে কারখানা সম্প্রসারণ করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছে বেসরকারি সিমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানি ‘মীর সিমেন্ট’। কোম্পানিটি এখন দিনে ২,৪০০ টন সিমেন্ট উৎপাদন করতে পারে। ২০২৪ সালের মধ্যে তা ৫ হাজার টনে নিয়ে যেতে চায় কোম্পানিটি। এজন্য শিগগরই নতুন একটি কারখানা চালু করতে যাচ্ছে মীর সিমেন্ট। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়ায় অবস্থিত মীর সিমেন্ট কারখানায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক এস এম রহমতুল্লাহ।
কোম্পানিটি জানায়, ২০০৩ সালে তারা যখন যাত্রা শুরু করে, তখন দৈনিক উৎপাদনক্ষমতা ছিল মাত্র ৬০০ টন। দুই দশকে তা চার গুণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বলেও জানানো হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির দুটি সিমেন্ট কারখানা ছাড়াও চারটি সিমেন্ট গুদাম, একটি কাঁচামালের গুদাম, একটি উপকরণের শেড ও পণ্য নৌ পথে আনা নেয়ায় ১৪টি ছোট জাহাজ রয়েছে। তিন ধরনের সিমেন্ট বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটির মীর ওপিসি সিমেন্ট, মীর পিসিসি সিমেন্ট ও মীর অ্যাডভান্স সিমেন্ট। দেশের বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও ক্রমেই বাড়ছে মীর সিমেন্টের চাহিদা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতে সিমেন্ট রপ্তানি করছে। বর্তমানে আগরতলাসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে মীর সিমেন্ট যাচ্ছে।
নির্বাহী পরিচালক এস এম রহমতুল্লাহ বলেন, দেশের বাজারে আমাদের সিমেন্টের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও আমাদের সিমেন্টের চাহিদা বাড়ছে। দেশে নির্মাণ খাতকে এগিয়ে নিতে এবং গুণগত মান নিশ্চিত করতে সর্বোত্তম ও উচ্চ মানসম্পূর্ণ কুইক সেটিং সিমেন্ট সরবরাহ করা মীর সিমেন্টের লক্ষ্য বলেও জানান রহমতুল্লাহ। এজন্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভার, রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালসহ অনেক স্থাপনায় ব্যবহৃত হচ্ছে মীর সিমেন্ট। সিমেন্টের বাজারে মীর সিমেন্ট বর্তমানে মাত্র ৩ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে বলে জানান তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইনচার্জ মোহাম্মদ আসাদুর রহমান জানান, বর্তমানে দুই ধরনের সিমেন্ট উৎপাদন করছে মীর সিমেন্ট। একটি সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (ওপিসি) এবং অন্যটি পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট (পিসিসি)। ওপিসি ফ্লাইওভার কিংবা বহুতল ভবনের মতো নির্মাণ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। পিসিসি সব ধরনের নির্মাণকাজে ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেন, বিম এবং কলামে ওপিসি ব্যবহারই যথেষ্ট। বাকিটায় পিসিসি ব্যবহার করা যাবে। ওপিসি তো অনেক ব্যয়বহুল। তাই ঠিকভাবে কাজ করলে পিসিসি দিয়েই ওপিসি’র স্ট্রেংথ পাওয়া সম্ভব। দেশে সিমেন্ট উৎপাদন করে তা রপ্তানি করা হলেও সিমেন্টের কাঁচামাল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় বলেও জানানো হয়। এরমধ্যে থাইল্যান্ড ও জাপান থেকে আসে ক্লিংকার। ওমান ও থাইল্যান্ড থেকে আসে জিপসাম ও লাইমস্টোন। জাপান থেকে আনতে হয় স্ল্যাগ এবং ফ্লাই অ্যাশ আসে ভারত থেকে। এদিকে কারখানা পরিদর্শনে দেখা গেছে, কারখানা সম্প্রসারণের জন্য তৃতীয় একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আন্ডারগ্রাউন্ডের কাজ শেষ। প্রথমতলার কাজ চলছে। তবে নির্মাণ শ্রমিকদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে। উপরের ফ্লোরে কাজের ক্ষেত্রে শরীরের জন্য যে নিরাপত্তা বেল্ট থাকা দরকার, সেটা তাদের ছিল না। ফলে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন শ্রমিকরা।