ঢাকা, ২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবার, ১০ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

বিশ্বজমিন

মাঙ্কিপক্স কি ও চিকিৎসা কি!

মানবজমিন ডেস্ক
২৫ মে ২০২২, বুধবারmzamin

করোনাভাইরাসের পর নতুন আতঙ্ক হিসেবে বিশ্ববাসীর সামনে হাজির হয়েছে মাঙ্কিপক্স। বৃটেন সহ ইউরোপের অনেক দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইসরাইলে দেখা দিয়েছে এই পক্স বা বসন্ত। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা এই রোগের সৃষ্টি হয়। জলবসন্ত সৃষ্টি করে যে ভাইরাস, সেই একই পরিবারের সদস্য এই ভাইরাস। তবে এর ভয়াবহতা অনেকটা কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্ষে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম। সাধারণত এই রোগ দেখা দেয় রেইনফরেস্ট এলাকার কাছে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এই ভাইরাসের দুটি স্ট্রেইন আছে। তাহলো পশ্চিম আফ্রিকান এবং মধ্য আফ্রিকান। প্রথমেই এই রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ফুলে যেতে পারে, ব্যাকপেইন, মাংসপেশীর ব্যথা, নিঃরস ভাব।

বিজ্ঞাপন
জ্বর কমে যাওয়ার পর শরীরে র‌্যাশ বা ফোসকার মতো দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো তা মুখে প্রথম দেখা দিতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব ফোসকা দেখা দেয় হাতের তালুতে এবং পায়ের পাতায়। এসব র‌্যাশ ভয়ঙ্কর রকম চুলকায় এবং বেদনাদায়ক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পরিবর্তন ঘটে। বিভিন্ন সময় এর বিভিন্ন রকম চেহারা দেখা দিতে পারে। চূড়ান্ত দফায় মাঙ্কিপক্স পরিণত হতে পারে পাঁচড়ায়। পরে আস্তে আস্তে ঘা শুকিয়ে যায়। কিন্তু তাতে ত্বকে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় তা ভয়াবহ। এই সংক্রমণ নিজের থেকেই সেরে যায় ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে। 

কীভাবে ছড়ায়: মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে যদি কেউ যান, তাহলে তার এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আপনার ত্বকে যদি কোনো ক্ষত থাকে তাহলে সেখান দিয়ে এই ভাইরাস আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারে। আপনার শ্বাসনালী, চোখ, নাক বা মুখ দিয়েও প্রবেশ করতে পারে এই ভাইরাস। যৌনতার মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে না বলে এর আগে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, শারীরিক সম্পর্কের সময় সরাসরি সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ ছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত বানর, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, বেডিং এবং পোশাকের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। 

কতটা বিপজ্জনক: এই ভাইরাসে আক্রান্তের বেশির ভাগই হালকা। কখনো কখনো তা জলবসন্তের মতো। দু’এক সপ্তাহের মধ্যে নিজের থেকেই তা সেরে যায়। তবে কোনো কোনো সময় মাঙ্কিপক্স হতে পারে অধিক ভয়াবহ। পশ্চিম আফ্রিকায় এতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুরও খবর আছে। 

সমকামীরাও কি ঝুঁকিতে: আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু মানুষ আছেন যারা পুরুষ সমকামী এবং উভকামী। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত যেকারও সংস্পর্শে যাওয়া ব্যক্তির এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বৃটেনের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক এজেন্সি বলেছে, সম্প্রতি বৃটেন এবং ইউরোপে যেসব মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হলো পুরুষ সমকামী এবং উভকামী। 

সর্বপ্রথম বানরের শরীরে শনাক্ত: সর্বপ্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছিল একটি আটকে রাখা বানরের শরীরে। তখন সেই ১৯৭০ সালের পর থেকে আফ্রিকাজুড়ে ১০টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ২০০৩ সালে প্রথম আফ্রিকার বাইরে এর প্রাদুর্ভাব ধরা পড়ে। তখন যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হয়েছিল ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীকে। এসব প্রাণীর দেহ থেকে মাঙ্কিপক্স ছড়ায় কুকুরের শরীরে। আর কুকুরের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে যাওয়া মানুষগুলো তখন আক্রান্ত হন। তখন মোট ৮১ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু কোনো মৃত্যুর ঘটনা নেই। ২০১৭ সালে নাইজেরিয়ায় সর্বশেষ মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। 

মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসা কি?: মাঙ্কিপক্সের কোনো চিকিৎসা নেই। কিন্তু সংক্রমণ প্রতিরোধ করার মাধ্যমে এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তবে গুঁটিবসন্তের টিকা এক্ষেত্রে শতকরা ৮৫ ভাগ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বলা হয়েছে, শতকরা ৮৫ ভাগ ক্ষেত্রে মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধ করে গুটিবসন্তের টিকা। এরই মধ্যে বৃটেন গুটিবসন্তের টিকা কিনেছে। তবে তার মধ্যে কতগুলো প্রয়োগ করা হবে তা নিশ্চিত নয়। এক্ষেত্রে ভাইরাস বিরোধী ওষুধও সহায়ক হতে পারে।  সূত্র: সিলন টুডে
 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status