বিশ্বজমিন
এবার চ্যাটজিপিটিকে ঠেকাতে এআই চ্যাটবট আনছে গুগল
মানবজমিন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১:০৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

নতুন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) চ্যাটবট চালু করলো প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। সোমবার গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই এই ঘোষণা দেন। এর আগে গত বছরের শেষ দিকে চালু হয় এআই চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’। দ্রুত বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেয় এই এআই বটটি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই এর প্রতিদ্বন্দ্বী এআই নিয়ে হাজির হলো গুগল। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
খবরে জানানো হয়, গুগলের ওই চ্যাটবটের নাম দেয়া হয়েছে ‘বার্ড’। সোমবার থেকে নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীদের জন্য এটি চালু করে দেয়া হবে। এরপর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সকলের ব্যবহারের জন্য চালু করে দেয়া হবে এটি। গত বছরের নভেম্বর মাসে ওপেনএআই নামের একটি কোম্পানি চ্যাটজিপিটি চালু করে। সেটির মতো গুগলও বিশাল ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যবহার করে বার্ড চ্যাটবট তৈরি করেছে।
পিচাই লিখেছেন, বিশ্বের সকল শক্তি, বুদ্ধি এবং সৃজনশীলতাকে একত্র করে তাকে তথ্যে পরিণত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে বার্ডকে। এটি অনলাইন থেকে সর্বশেষ এবং সর্বোত্তম তথ্য সংগ্রহ করে মানুষের কাছে সরবরাহ করবে। চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর থেকে মানুষ গুগলের পরিবর্তে সেখানেই বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধান করতে শুরু করে। বছরের পর বছর ধরে গুগলের অনলাইন সার্চের সামনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। কিন্তু চ্যাটজিটিপি সেই একচেটিয়া রাজত্বে হস্তক্ষেপ করে। শুধু অনলাইন সার্চই নয় মানুষ সেখান থেকে গল্প, গানের লিরিক থেকে শুরু করে সব ধরণের বিস্তারিত তথ্য পেতে শুরু করে। লিংক হাজির করার পরিবর্তে চ্যাটজিটিপি সরাসরি বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রদর্শণ করে বলে অনেকেই এর ওপরে নির্ভর করতে শুরু করেছে।
এরপরই উঠেপড়ে লাগে গুগল। তারা নিজেদের ‘সার্চ ব্যবসা’র জন্য ‘কোড রেড’ ঘোষণা করে। জিমেইলের প্রতিষ্ঠাতা পল বুচেইট বলেন, আগামী দুই এক বছরের মধ্যে ধস নামতে পারে গুগলের সাম্রাজ্যে। আর এই কৃতিত্বের মালিক হবে এআই। ওপেনএআই’র পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এরপর এটিকে তাদের সার্চ ইঞ্জিন বিং-এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
চ্যাটজিপিটির পুরো নাম চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার। এটি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন একটি অ্যাপলিকেশন যাকে বলা হয় ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল টুলস’। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি চ্যাটবট সিস্টেম বা আলাপচারিতা করার অ্যাপলিকেশন। এটি ইন্টারনেটে থাকা নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে লিখিত প্রশ্নের জবাব হাজির করে। সে ফরম্যাট বা যেভাবে চাওয়া হয়, অনেকটা সেভাবেই সে এসব উত্তর দেয়। এর আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। গুগল বা এক্সপ্লোরারের মতো সাইটগুলোয় কোন অনুসন্ধান করলে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের লিংক হাজির করে। কিন্তু চ্যাটজিপিটি যেভাবে সরাসরি সুনির্দিষ্ট উত্তর দিয়ে দেয়, এমনটা আর দেখা যায়নি। আবার উত্তর পছন্দ না হলে এটি আবার আরও ভালো করে উত্তর তৈরি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রানসিসকোর ‘ওপেনএআই’ নামের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান চ্যাটজিপিটি উদ্ভাবন করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইলন মাস্ক। যদিও ২০১৮ সালে তিনি বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন। এই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হলো ‘নিরাপদ এবং সুবিধার’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা। গত বছর ৩০শে নভেম্বর কোম্পানিটি চ্যাটজিপিটি তৈরির ঘোষণা করে। এর আগে এই প্রতিষ্ঠানটি জিপিটি-৩ নামের একটি অ্যাপলিকেশন তৈরি করেছিল। সেটি এমন বার্তা লিখতে পারতো যা দেখে মনে হবে কোন মানুষ লিখেছে। এরপর ডেল-ই নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেছিল। সেখানে কারও লেখা বার্তা দিয়ে চিত্র তৈরি করতে পারতো। জিপিটি-৩ এবং পরবর্তীতে তৈরি করা জিপিটি-৩.৫ মিলেই আজকের চ্যাটজিপিটি তৈরি করা হয়েছে। এবার গুগলের এআই উন্মুক্ত হলে বুঝা যাবে তারা কতটা টক্কর দিতে পারবে এই চ্যাটজিপিটিকে।