দেশ বিদেশ
সিন্ধু পানি চুক্তি পরিকল্পনায় ১১৩ কিলোমিটার খাল তৈরির কথা ভাবছে ভারত
মানবজমিন ডিজিটাল
১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানে সিন্ধু নদের পানিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে চাইছে ভারত সরকার। এজন্য ১১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল তৈরি করার পরিকল্পনা চলছে। সরকারের শীর্ষ সূত্রগুলো এনডিটিভিকে এ কথা জানিয়েছে। সিন্ধু নদীর পানিকে ব্যাপক আকারে ব্যবহারের লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ। ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছয়টি নদীর পানি বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে। সেগুলো হলো-সিন্ধু, ঝিলাম, চেনাব, রাভি, বিয়াস ও শতদ্রু। সিন্ধু নদীব্যবস্থা থেকে পানি সরানোর জন্য ভারতের পরিকল্পনা তিনটি পশ্চিম নদী ঝিলাম, চেনাব ও সিন্ধুকে কেন্দ্র করে, যা পাকিস্তানে প্রবাহিত হয়।
বর্তমানে, ভারত এই তিনটি নদীর মধ্যে প্রবাহিত পানির খুব বেশি ব্যবহার করে না। কারণ তাদের প্রাকৃতিক পথ এমন একটি পথ অনুসরণ করে যা ভারতের জন্য খুব বেশি কার্যকর নয়। সূত্র জানিয়েছে, সিন্ধু নদের পানিকে দেশের কাজে আরও বেশি করে লাগানোর লক্ষ্যে নতুন খাল নির্মাণ করার কথা ভাবা হচ্ছে। কাজটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সম্ভাব্য কার্যকারিতা নিয়ে বিবেচনা চলছে।
আশা করা হচ্ছে, চেনাব নদীকে রাভি-বিয়াস-শতদ্রু নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করবে এমন খাল নির্মাণের কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো পূর্ব ও পশ্চিম উভয় নদীর আরও ভালো ব্যবহার করে সিন্ধু পানি চুক্তির অধীনে ভারতের অংশকে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপি’র এক প্রশিক্ষণ অধিবেশনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘তিন বছরের মধ্যে খালের মাধ্যমে রাজস্থানের গঙ্গানগরে সিন্ধু নদের পানি পৌঁছে দেয়া হবে। যাতে পাকিস্তান প্রতি ফোঁটা পানির জন্য আকুল হয়ে ওঠে।’ সূত্র জানিয়েছে, এটিকে যমুনার সঙ্গে সংযুক্ত করারও একটি প্রস্তাব রয়েছে। যদি এটি ঘটে তাহলে খালের দৈর্ঘ্য ২০০ কিলোমিটার হয়ে যাবে। এরপর যমুনা হয়ে গঙ্গাসাগরে পানি পরিবহন করা যেতে পারে। দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলো এই প্রকল্প থেকে ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২২শে এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ভারত বলেছে, যতক্ষণ না ইসলামাবাদ বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং অপরিবর্তনীয়ভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করে, ততক্ষণ পর্যন্ত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত থাকবে। নয়াদিল্লি এই সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারত যখন প্রতিক্রিয়ায় অপারেশন সিঁদুর শুরু করে, তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার সরকারের আপসহীন অবস্থানের ওপর জোর দিয়েছিলেন যে, যেমন পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না। তেমনি সন্ত্রাস ও আলোচনা একইসঙ্গে চলতে পারে না।
গত দুই বছরে নয়াদিল্লি বেশ কয়েকবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামাবাদকে চুক্তির সংশোধন নিয়ে আলোচনা করার জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
সূত্র: এনডিটিভি