‘এআই প্রযুক্তির ব্যবহার দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে’

দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ব্যবসা-বাণিজ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারূেপ করেছেন আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে সহ-সভাপতি প্রার্থী সাকিফ শামীম। তিনি বলেন, বিশ্ব আজ এআই প্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ প্রযুক্তি দক্ষতা উৎপাদনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তি বাড়িয়ে ব্যবসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে এই সুযোগ কাজে লাগানো সময়ের দাবি।
সাকিফ শামীম মনে, করেন দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি বাবসায়ী অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। এদের উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাই দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-কে এই পরিবর্তনের নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে সাকিফ শামীম বলেন, সম্মানিত জেনারেল বডির (জিবি) সদস্যদের সমর্থনে নির্বাচিত হতে পারলে আমি ব্যবসায়ীদের আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য কার্যকর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করবো। বিশেষভাবে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য নিয়মিত এআই প্রশিক্ষণ চালু করা হবে।
দেশের অর্থনীতির কান্ডারি এসব ব্যাবসায়ীদের সুস্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেয়া উচিত বলে মনে করেন স্বাস্থ্যখাতের অগ্রদূত ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাকিফ শামীম। এরই ধারাবাহিকতায় এফবিসিসিআইয়ের সদস্য এবং তাদের পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে একটি নিজস্ব ক্লিনিক ও হাসপাতাল স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এই উদ্যোগটি সদসাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি আরও সহজ করবে বলে আশা করা যচ্ছে। 
সাকিফ শামীম জানান, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি তথা এসএমই উদ্যোক্তারা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন বিশেষ করে ব্যাংক ঋণ ও উচ্চ সুদের কারণে। এ বিষয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তি সহজ করা সুদের হার কমানো এবং প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা নিশ্চিত করাই হবে আমার অন্যতম অগ্রাধিকার। এছাড়া সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে একটি বিজয় ক্লিনিক ও হাসপাতাল স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।। এই উদ্যোগটি সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি আরও সহজে করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এফবিসিসিআই এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো নিতে পারে সদস্য সেবা ও কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়করণ-সদস্যপদ নবায়ন ইভেন্ট রেজিস্ট্রেশন সাধারণ জিজ্ঞাসার উত্তর প্রদান এবং বিজ্ঞপ্তি বিতরণের মতো পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলো এআই-চালিত চ্যাটবট ও স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন করা। এতে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং সদস্যদের। সময় বাঁচবে। স্মার্ট ম্যাচমেকিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি- এআই অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব, বিনিয়োগের সুযোগ এবং সঠিক সাপ্লাই চেইন পার্টনার খুঁজে বের করার জন্য সদস্যদের মধ্যে নির্ভুল ম্যাচমেকিং নিশ্চিত করা। ব্যবসায়িক ডেটা বিশ্লেষণ ও নীতি সহায়তা-দেশের বিভিন্ন যাতের অর্থনৈতিক ডেটা ও প্রবণতা বিশ্লেষণে এআই ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কার্যকর সুপারিশ প্রদান এবং সদস্যদের জন্য বাজার সম্পর্কিত মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করা। কাস্টমাইজড প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন- সদস্যদের প্রয়োজন অনুযায়ী এআই-ভিত্তিক লার্নিং মডিউল তৈরি করা যা তাদের ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে তরুণ উদ্যোক্তা এবং এসএমই খাতের জন্য এআই মেশিন লার্নিং ও ডেটা অ্যানালিটিক্স বিষয়ক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ চালু করা।
অভিযোগ নিষ্পত্তি ও পরামর্শ প্রদান- এআই চালিত হেন্ড্রডেস্ক স্থাপন করা, যা সদস্যদের অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করবে এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক বিষয়ে প্রাথমিক পরামর্শ প্রদান করবে। বাজার গবেষণা ও প্রবণতা পূর্বাভাস, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সর্বশেষ প্রবণতা, ভোক্তার আচরণ এবং সম্ভাবা চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করে সদস্যদের সময়োপযোগী পূর্বাভাস প্রদান কর।
নিরাপত্তা ও প্রতারণা প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারকরণ-এআই-এর মাধ্যমে লেনদেন ও ডেটা প্রবাহে সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং প্রতারণার প্যাটার্ন চিহ্নিত করে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা। স্বাস্থ্যখাতে প্রযুক্তির ব্যবহারকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন সাকিফ শামীম। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশের অন্যতম আধুনিক হাসপাতাল ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার, যা আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। তাঁর উদ্ভাবনী উদ্যোগ 'লাইফপ্লাস বাংলাদেশ' একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা অ্যাপ, যার মাধ্যমে ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং, ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ, হোম ডায়াগনস্টিক, অনলাইনে ডায়াগনস্টিক রিপোর্ট প্রাপ্তি ওষুষ সরবরাহ, ২৪ ঘণ্টা এম্বুলেন্স ও হোম নার্সিং কেয়ার সার্ভিস এবং মেডিকেল সামগ্রী কেনার মতো অনেক সুবিধা। সাকিফ শামীমের এই দূরদর্শী আহ্বান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এআই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং এফবিসিসিআই-এর মতো শীর্ষস্থানীয় সংগঠনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে এবং বাবসায়ীরা বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতায়, আরও সক্ষম হয়ে উঠবে। এই ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে একটি স্মার্ট ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন।