দেশ বিদেশ
দ্বিতীয় রাতেও কারফিউ জারি, অগ্নিগর্ভ লস অ্যানজেলেসে গ্রেপ্তার অন্তত ৪০০
মানবজমিন ডিজিটাল
১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার
মার্কিন অভিবাসন অভিযানের বিরুদ্ধে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতার পর লস অ্যানজেলেসে দ্বিতীয় রাতের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। বিবিসি’র মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় কার্যকর হওয়ার পরপরই শহরতলিতে কারফিউ লঙ্ঘনের অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে লস অ্যানজেলেসে প্রায় ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৩০ জন অবৈধ অভিবাসী এবং হামলা ও বাধা দেয়ার জন্য ১৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। দু’টি পৃথক ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর মোলোটভ ককটেল নিক্ষেপের জন্য ফেডারেল প্রসিকিউটররা এখনো পর্যন্ত দুই ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেছেন।
অস্থিরতা দমনে মোট ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সেনা এবং ৭০০ মেরিন মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার দিকে শত শত বিক্ষোভকারী লস অ্যানজেলেস সিটি হলের দিকে মিছিল করে এগিয়ে গেলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দ্বিতীয় রাতের জন্য কারফিউ কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লস অ্যানজেলেসের মেয়র কারেন বাস এক্সে লিখেছেন, এই ব্যবস্থাটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের থামাতে গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন অভিযানকে এই বিক্ষোভের জন্য দায়ী করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে ‘ভয়’ এবং ‘আতঙ্ক’ সৃষ্টি করে বাসিন্দাদের ‘উত্তেজিত’ করা হচ্ছে।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে, সবকিছু শান্তিপূর্ণ ছিল। শুক্রবার অভিযান শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি কঠিন হতে শুরু করে।’
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাস। সেইসঙ্গে বলেছেন, ভাঙচুর, লুটপাট বন্ধ করতে চান। কারণ লস অ্যানজেলেসে ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে। যদিও পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেল জোর দিয়ে বলেছেন যে, এই বিশৃঙ্খলা সীমিত এলাকায় ঘটেছে। শহরব্যাপী নয়। মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন যে, কারফিউ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সাহায্য করেছে। লস অ্যানজেলেসের অন্যান্য স্থানেও ন্যাশনাল গার্ডদের সহায়তায় ট্রাম্পের অভিবাসন অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তবে লস অ্যানজেলেসে মোতায়েন ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন বাহিনীর গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই- কেবল বিক্ষোভকারীদের আটক করার ক্ষমতা রয়েছে যতক্ষণ না পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। লস অ্যানজেলেসে ফেডারেল সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তের পর থেকে রাজ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ট্রাম্পের বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের উপর ‘আক্রমণ’ করার অভিযোগ করেছেন। যদিও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ট্রাম্পকে সমর্থন করে বুধবার সিনেটের শুনানিতে বলেছেন যে, লস অ্যানজেলেসে সেনা পাঠানো ‘আইনি এবং সাংবিধানিক’। পেন্টাগন জানিয়েছে যে লস অ্যানজেলেসে সামরিক মোতায়েনের জন্য ১৩৪ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে সরকারের।
সূত্র: বিবিসি